'আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে'। আর বসন্ত মানেই রঙের উৎসব। এবং শান্তিনিকেতন। রবির সুরে গেয়ে ওঠা,'ওরে গৃহবাসী খোল, দ্বার খোল, লাগল যে দোল।' সেই বসন্তের রং আরও একবার ফিকে হতে চলেছে কবির শান্তিনিকেতন। গতবছরের মতো এবারও সম্ভবত হচ্ছে না বসন্ত উৎসব।
বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী জানিয়ে দিয়েছেন, এ বছরও শান্তিনিকেতনে দরজা বন্ধ করে হবে বসন্ত উৎসব। বাইরের মানুষের প্রবেশাধিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। নেট মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওয় এমনটা বলতে শোনা গিয়েছে তাঁকে।
বৃহস্পতিবার বসন্ত উৎসব নিয়ে আধিকারিকদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেছিলেন উপাচার্য। ওই বৈঠকের একটি ভিডিও ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তাতে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে বলতে শোনা গিয়েছে, বসন্ত উৎসব আগের মতো হবে না। এটা বিশ্বভারতী পরিবারের অনুষ্ঠান। আমরা নিজেদের মতো করে করব।'
উপাচার্যের যুক্তি,'হোলির দিন বসন্ত উৎসব করব না। কারণ ওই দিন পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। রাজ্য সরকার ও পুলিশ আমাদের সাহায্য করে না। ওদের উপর নির্ভর করতে পারি না।'
তিনি আরও বলেন,'আমরা সংগীত ভবনের সাহায্য নেব। বসন্ত উৎসব ঘিরে যে যে অনুষ্ঠান গুলি হয় বিশেষ করে বৈতালিক, পদযাত্রা সব হবে। করোনার জন্য এখনও কার্ফু আছে তাই সন্ধ্যার বৈতালিক আমরা করব না। সকালের বৈতালিক হবে।'
সাধারণ মানুষ সামিল হোন তা চাইছেন না উপাচার্য। কবে বসন্ত উৎসব হবে সেটাও পরে ঠিক হবে বলে জানিয়েছেন। তাঁর কথায়,'এই মুহূর্তে বসন্ত উৎসব কোন দিনে হবে তা ঘোষণা করছি না। আলোচনা করে দিন ঠিক করা হবে। এটা বিশ্বভারতী পরিবারের অনুষ্ঠান। কখনওই আমজনতার অনুষ্ঠান ছিল না।'
উপাচার্যের এই ভাইরাল ভিডিওটির সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি আজতক বাংলা ডিজিটাল। এনিয়ে বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অতীগ ঘোষকে ফোন করা হয়েছিল। তিনি ফোন ধরেননি।
পুলিশের নিরাপত্তা নিয়ে উপাচার্যের মন্তব্য অপ্রত্যাশিত বলে জানান বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠি। তাঁর কথায়, 'বিশ্বভারতীর বসন্ত উৎসবে পুলিশ সবরকম সাহায্য করেছে। ওঁর কাছ থেকে এই ধরনের মন্তব্য অপ্রত্যাশিত।'
প্রতিবছর বহু মানুষ সামিল হন বিশ্বভারতীর বসন্ত উৎসবে। দূরদূরান্ত থেকে হাজির হন শান্তিনিকেতনে। ফাগে ভরে ওঠে কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত জায়গা। বিশ্বভারতীয় আয়োজন না করলেও স্থানীয় অর্থনীতির কথা মাথায় রেখে বোলপুরের নানা জায়গায় উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
বলে রাখি, গত ১২ দিন ধরে হস্টেল খোলা সহ তিন দফা দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের জেরে কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে বিশ্বভারতীতে।