গত বছরের শেষের দিকে এক ধাক্কায় প্রায় ১০-১৫ শতাংশ কমেছে দেশে তৈরি বিলিতি মদের দাম। একই সঙ্গে প্রায় ২০ শতাংশ বাড়ে দেশি মদের দর। দাম কমায় বিলিতি মদের বিক্রি যেমন বেড়েছে, তেমনই দাম বাড়ায় কমেছে দেশি মদের চাহিদা।
দেশি মদের দাম বৃদ্ধি আর বিলিতি মদ সস্তা হয়ে যাওয়ার ফলে মাসে প্রায় ২৫ শতাংশ পড়ে গিয়েছে ‘কান্ট্রি লিকার’-এর বক্রি। সূত্রে খবর, আগে বাংলায় প্রতি মাসে গড়ে ৪ কোটি লিটার দেশি মদ বিক্রি হতো, বর্তমানে তা কমে ৩-৩.২ কোটি লিটারে এসে ঠেকেছে।
অর্থাৎ, সরকারি সূত্রের খবর অনুযায়ী, দেশি মদের দাম বৃদ্ধি আর বিলিতি মদ সস্তা হওয়ার পরবর্তি কয়েক মাসে কান্ট্রি লিকারের বক্রি প্রায় ১ কোটি লিটার কমে গিয়েছে যা এই শিল্পের জন্য একটা বড় ধাক্কা।
আবগারি শিল্পের বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশি মদের বাজার পড়ে যাওয়ার পিছনে অন্যতম কারণ হল প্রিমিয়ামাইজেসন। যার অর্থ হল, বেশ কিছু বিদেশি মদ সস্তায় মেলার ফলে দেশি মদের পরিবর্তে সামান্য কয়েকটা টাকা বেশি দিয়ে বিয়ার বা কম দামের বিলিতি মদ কিনছেন অনেকেই।
এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে আর একটা কারণে দেশি মদের বিক্রিকে প্রভাবিত করছে বলে অনুমান আবগারি শিল্পের বিশেষজ্ঞদের। সেটা হল, সম্প্রতি বিষ মদে বেশ কিছু মৃত্যু বা অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনায় মানুষ দেশি মদের পরিবর্তে ক’টা টাকা বেশি দিয়ে কম দামের বিলিতি মদ কিনছেন।
স্বাস্থ্যের কথা ভেবেও অনেকে সামান্য বেশি টাকা খরচ করে অপেক্ষাকৃত সস্তার বিলিতি মদ কিনছেন। সব মিলিয়ে রাজ্যের সুরাপ্রেমীরা সাম্প্রতিককালে কিছুটা স্বাস্থ্য সচেতনতা আর পকেটের দিক থেকে কিঞ্চিত উদারতা দেখানোয় এক ধাক্কায় প্রায় ২৫ শতাংশ কমে গিয়েছে দেশি মদের বিক্রি।
দেশি মদের বিক্রি কমায় আবগারি শুল্কে প্রভাব পড়ছে? সূত্রের খবর, দেশি মদের বিক্রি প্রায় ২৫ শতাংশ কমে গেলেও দাম কমার পর অনেকটাই বেড়েছে দেশে তৈরি বিলিতি মদের বিক্রি। সামগ্রিকভাবে বিগত কয়েক মাসে রাজ্যে মদের বিক্রি বেশ কিছুটা বেড়েছে। তাই আবগারি শুল্কে এর কোনও প্রভাব পড়বে না।
সূত্রের খবর, বিগত কয়েক মাসে রাজ্যে আবগারি শুল্ক বাবদ আয় কিছুটা বেড়েছে। চলতি অর্থবর্ষে জুলাই পর্যন্ত আবগারি শুল্ক বাবদ সরকারি কোষাগারে জমা পড়েছে প্রায় ৫০০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষের শেষে এই আয় গত বছরের তুলনায় কয়েকগুণ বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।