UPSC Civil Services 2020: বাংলা থেকে এবার বেশ কয়েক ইউপিএসসি-র সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সফল হয়েছেন। কোন পথে সাফল্যে এসেছে, কেমন ছিল তাঁদের প্রস্তুতি, তাঁদের কাছ থেকে জানা গেল সে কথা।
ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা শুভঙ্কর বালা র্য়াঙ্ক করেছেন ৭৯। তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে লেগে পড়েছিলেন ইউপিএসসি-র পরীক্ষার জন্য।
তিনি বলেন, "আগে চাকরি করতাম। ২০১৭ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করি। তারপর বেঙ্গালুরুর টেক্সাস ইন্সট্রুমেন্টে চাকরি। তখন জানতে পারি পরীক্ষার ব্যাপারে। তারপর থেকে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু। দিনে ৩-৪ ঘণ্টা পড়তে পারতাম। ২০১৯ সালে প্রথম পরীক্ষায় বসি। প্রিলি পাশ করি।"
তিনি বুঝতে পারেন, এভাবে হবে না। আর তাই চাকরি ছেড়ে ২০১৯ সালে দিল্লি চলে যান। সেখানে কোথাও পড়ার জন্য ভর্তি হননি। তিনি বলেন, "বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা দিতে যেতাম। মক টেস্ট।"
অনলাইনে লেখাপড়ার অনেক জিনিস পাওয়া যায়। তাকে হাতিয়ার করেছেন। কোভিডের কারণে পিছিয়ে গিয়েছে পরীক্ষা। সেটা যেন খানিকটা ভালই হয়েছে। অতিরিক্ত সময় পেয়েছি। বলছিলেন তিনি।
সেখানে বেশ কয়েকজন একসঙ্গে থাকতেন। যাঁরা সকলেই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বা নিচ্ছেন। তাঁর মতে, এটা ঠিক, দিন ১০-১১ ঘণ্টা পড়তে হয়। তবে তা যে বই নিয়ে পড়া, এমন নয়। তার মধ্য়এ রয়েছে খবরের কাগজ পড়া। ইন্টারভিউ, ডিবেট দেখা। আপ-টু-ডেটেড থাকা। এটা খুবই জরুরি। পরীক্ষার আগে ১২-১৩ ঘণ্টাও পড়েছেন এমনও হয়েছে। আবার পরীক্ষার আগে পড়া সামান্য কমিয়ে দিতাম। বলছিলেন।
বাড়িতে রয়েছেন মা-বাবা, দুই দিদি। তিনি এখন নয়ড়ায়।। সোমবার কলকাতা, মঙ্গলবার ঝাড়গ্রামে ফিরবেন। ঝাড়গ্রাম কুমুদকুমারী ইন্সটিটিউট থেকে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া।
রিকি আগরওয়াল আইআইটি খড়গপুর থেকে বিটেক করেছেন। এখন ইন্ডিয়ান সিভিল অ্যাকাউন্ট সার্ভিসে কর্মরত। সিভিল সার্ভিসে তাঁর র্যাঙ্ক ৮৭।
কী করে প্রস্তুতি নেওয়া দরকার? তিনি বলেন, "আমার মনে হয় আত্মবিশ্বাস খুব দরকারি। লম্বা সময় ধরে আত্মবিশ্বাস ধরে রখা দরকারি। আমারও একটা সময় সমস্যা হয়েছিল। তবে মনে রাখতে হবে, চেষ্ট করলে পারব, এটা যেন না ভুলি। পড়াশোনার মনোযোগ বজায় রাখা। এত বড় সিলেবাস, রুটিন ফলো করা খুব দরকার।
বাংলার আর এক প্রার্থী সফল হয়েছেন সর্বভারতীয় এই পরীক্ষায়। তিনি মহম্মদ মঞ্জর হুসেন অঞ্জুম। র্যাঙক করেছেন ১২৫। তাঁর বাড়ি ইসলামপুরের চৌসিয়ায়। সেখানে লেখাপড়ার পর গিয়েছিলেন আলিগড়ে। একাদশ-দ্বাদশ সেখানেই।
এরপর যুক্ত হন হামদর্দ স্টাডি সার্কেলে। অনেকের কাছ থেকে অনেক কিছু জানতে পারেন এই পরীক্ষার ব্য়াপারে।
তাঁর মতে, প্রস্তুতি নেওয়ার সময় গাইডেন্স খুব দরকার। কেউ যদি বলে দেন, কী ভাবে এগোতে হবে, তাহলে অনেক সুবিধা হয়। লেখাপড়া তখন অনেক সহজ হবে। উত্তর লেখা সুবিধা হবে।
ছোটবেলা থেকে ইচ্ছা ছিল এমনই কিছু করার। তিনি বলেন, গ্রামের ছেলে। অনেকের মতো স্বপ্ন দেখেছিলাম। ইসলামপুরে বেসরকারি স্কুলে লেখাপড়া। পরে আলিগড় পড়তে যান।
নিজের প্রস্তুতির ব্যাপরে জানান, একদিকে শান্ত থাকতে হবে। আর একদিকে শক্ত থাকতে হবে। আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। আর পড়ের ব্য়াপারে আলাদা করে কোনও বিষয়ে জোর না দেওয়ার উচিত। আমি একটা বিষয় পছন্দ করি বলি সেটাই পড়ে য়াব, তা হবে না। কারণ আমাকে তো নম্বর তুলতে হবে। আর তা না করতে পারলে সফল হতে পারব না।
বেলঘড়িয়ার ময়ূরী মুখোপাধ্যায় প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ২০১৩ সালে উদ্ভিদবিদ্যা (সাম্মানিক) নিয়ে স্নাতক হয়েছেন। তারপর চলে যান দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে, একই বিষয়ে পড়ার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা পড়ুয়া হয়েছিলেন তিনি। ইউপিএসসি-র সিভিল সার্ভিসে তাঁর র্যাঙ্ক ১৫৯।