পশ্চিমবাংলায় কার্যত চলছে 'ভোট উৎসব' (Bengal Election 2021)। কোনও দলই অপর পক্ষকে এক ইঞ্চি জায়গাও ছাড়তে নারাজ। প্রতিদিনই চলছে রাজনৈতিক তরজা। চায়ের দোকান থেকে অফিসের ক্যান্টিন, সবেতেই এখন আলোচনার মূল বিষয়বস্তু , নির্বাচন। এমনকি বাদ যায়নি নেটপাড়াও। আগে যা ছিল কার্টুন, গ্রাফিটিতে সীমাবদ্ধ, বর্তমানে সেই জায়গা অনেকটা নিয়েছে মিম।
ভোটের বাজারে সোশ্যাল মিডিয়ায় উঁকি মারলেই চোখে পড়ে নানা রকমের মিম। কিছু সত্যিই মজার, আবার কয়েকটি মিম নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় নেট মাধ্যমেই। সেরকমই একটা মিম এখন আলোচনায় রয়েছে। যা নিয়ে সোচ্চার হচ্ছেন নেটাগরিকরা। মিমটি আসলে এইবারের বিধানসভা নির্বাচনের দুই চর্চিত সংযুক্ত মোর্চার তরুণ প্রার্থীকে নিয়ে। একজন নন্দীগ্রামের প্রার্থী মীনাক্ষী মুখার্জি (Meenakshi Mukherjee) এবং অন্য আরেকজন বালির প্রার্থী দীপ্সিতা ধর (Dipsita Dhar)। ইতিমধ্যে এই মিম ঘিরে শোরগোল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
কী আছে সেই মিমে
গত দুদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি মিম ঘুরছে যেখানে মোট ছয়জনকে দেখা যাচ্ছে। যেখানে রয়েছেন দুজন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ও অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী (Mimi Chakraborty) ও নুসরত জাহান (Nusrat Jahan), বিজেপি-র দুই প্রার্থী ও অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় (Srabanti Chatterjee) ও পায়েল সরকার (Paayel Sarkar) এবং সংযুক্ত মোর্চার দুই তরুণ প্রার্থী মীনাক্ষী মুখার্জি ও দীপ্সিতা ধর। মিমে শ্রাবন্তী ও পায়েলের ছবির পাশে লেখা আছে 'সেক্সি ননদ- বৌদি', মিমি ও নুসরতের ছবির পাশে 'স্টাইলিশ দিদি-বোন' এবং মীনাক্ষী ও দীপ্সিতার ছবির পাশে লেখা আছে 'কাজের মাসি'।
নেটিজেনদের অনেকেই এই মিমের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তাঁরা মনে করেন এটা শুধু যে 'বডি শেমিং'-কে প্রশ্রয় দিচ্ছে তা নয়, এটা অত্যন্ত কুরুচিকর। সংশ্লিষ্ট মিমের জন্য মোক্ষম জবাব দিয়েছেন দীপ্সিতা। তিনি লিখেছেন, "আমার চেহারার জন্য উপহাস করা নতুন কিছু নয় । আমি অনেক আগে থেকেই তাদের দেখে হাসতে শিখেছি। কিন্তু সিপিএম এর দুটি মেয়ে বিজেমুলকে এত জ্বালাচ্ছে যে আমি আনন্দিত। 'তোমাদের জ্বলবে, আমাদের এভাবেই চলবে।' তিনি আরও লেখেন, "গৃহপরিচারিকাদের জন্য, লকডাউনে তাঁদের বেতনের জন্য, তাঁদের সুরক্ষার প্রশ্নে দাবী দাওয়ার লড়াই বামপন্থীরা করেছে ও করবে।"
To be mocked for my appearance is nothing new. I have learned to laugh at them back from quite an early age. But the...
অন্যদিকে বাম মনস্ক অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র (Sreelekha Mitra) সরব হয়ে লিখেছেন, "ওই তথাকথিত সেক্সি ননাদ, বৌদি, দিদি, বোনেকে ১ লক্ষ দিয়ে গুণ করে একটা মীনাক্ষী বা দীপ্সিতা তৈরি করুক দেখি তবে মুরদ বোঝা যাবে। এটাতে আবারও এদের কদর্য রুচির পরিচয় পাওয়া গেল। খেলা হবে আর রোগড়ে দেব যাদের ভাষা তাঁদের থেকে এছাড়া আর কি হবে।"
Oi so called sexy nanad,boudi,didi,bonke 1lac diye multiply kore ekta Minakshi ba Dipshita toiri koruk dekhi tobe murod...
শুধু তাই নয় সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক নেটিজেন এই মিমের প্রতিবাদে হ্যাশট্যাগ 'আমি কাজের মাসি' লিখে অনেকেই নিজেদের ছবি পোস্ট করছেন ও সরব হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত কে হাসবে জয়ের হাসি তা বলবে ২ মে-র মার্কসিট। তবে নির্বাচনী আবহে অনেক বদলে যাওয়া পরিস্থিতির মধ্যে মানুষের ভাষা ও অঙ্গভঙ্গিরও যে পরিবর্তন হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। তা সে রাজনৈতিক নেতা, সমর্থক থেকে নেটিজেন, সকলের মধ্যেই চোখে পড়ছে। আর সেটি সমাজের জন্য কতটা ক্ষতিকারক, তা সম্প্রতি আজতক বাংলার সঙ্গে আলোচনা করেছেন মনোবিদ ডাঃ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায় (Dr. Anuttama Banerjee)।