খাবারে বাড়তি স্বাদ ও বাহার যোগ করতে ক্যাপসিকাম ব্যবহার করা হয়। বাজারে সবুজ, লাল, হলুদ এই তিন রঙের ক্যাপসিকাম পাওয়া যায়। ক্যাপসিকামের নানা উপকারিতা রয়েছে। পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতি ১০০ গ্রাম ক্যাপসিকামে ৮৬০ মিলিগ্রাম প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ভিটামিন সি থাকে।
ক্যাপসিকামকে অনেকে আবার বেল পেপার নামেও চেনেন। ব্যস্ততার এই যুগে যে সবজিগুলো মানুষের প্রতিদিন খাওয়া উচিত, ক্যাপসিকাম তার মধ্যে অন্যতম। এটি শরীরের নানা চাহিদা পূরণ করে, পাশাপাশি একাধিক অসুখ থেকে উপশম পাওয়া যায়। স্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসেবেও দিন দিন তাই কদর বাড়ছে ক্যাপসিকামের।
রক্তাল্পতা দূর করে
ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং আয়রন পাওয়া যায়। আপনি যদি আপনার ডায়েটে ক্যাপসিকাম অন্তর্ভুক্ত করেন তবে আপনার শরীর থেকে রক্তশূন্যতার সমস্যা অনেকাংশে কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
ক্যাপসিকামে থার্মোজেনেসিস পাওয়া যায়। থার্মোজেনেসিসের কাজ হল আমাদের শরীরের ক্যালোরি দ্রুত হ্রাস করা। আপনি যদি আপনার খাদ্যতালিকায় ক্যাপসিকাম অন্তর্ভুক্ত করেন তবে স্থূলতা অনেকাংশে কমানো যায়। কোলেস্টেরল কম থাকে। খেলেও ওজন বেড়ে যাওয়ার চিন্তা থাকে না মোটেই।
ডিপ্রেশন দূর করে
ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি৬ পাওয়া যায়। এটি মানসিক চাপ দূর করতে সাহায্য করে। ক্যাপসিকাম খাওয়া শুরু করলে ডিপ্রেশনের মতো সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়।
ইমিউনিটি বাড়ায়
ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। আপনি যদি সঠিক পরিমাণে ক্যাপসিকাম খান, তাহলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব শক্তিশালী হতে পারে। আপনি নিজেকে সংক্রামিত হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারেন।
মাথাব্যথার সমস্যার উপশম
ক্যাপসিকামে এমন পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়, যা ব্যথানাশকের মতো কাজ করে। আপনি যদি প্রায়ই মাথাব্যথার সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে আপনি আপনার ডায়েটে ক্যাপসিকাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এটি খেলে মাথা ব্যথার উপশম হয়। মাইগ্রেনের ওষুধ বলা হয় ক্যাপসিকামকে। লাল কিংবা সবুজ, যেকোনও ক্যাপসিকামই শরীরে এবং মাথায় রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। ফলে মাথা যন্ত্রণা, মাইগ্রেন এসকল সমস্যার সমাধানে কার্যকরী ক্যাপসিকাম।
শরীরের ব্যথা উপশম করে
আপনার খাদ্যতালিকায় ক্যাপসিকাম অন্তর্ভুক্ত করে, শরীরের ব্যথাও কমানো যায়। কারণ ক্যাপসিকামে এমন কিছু উপাদান পাওয়া যায় যা ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে
ক্যাপসিকাম ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী। এমন পরিস্থিতিতে ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়েটে ক্যাপসিকাম অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
ক্যান্সারে সুরক্ষা দেয়
ক্যাপসিকাম অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক। সালফার যৌগ এবং লাইকোপিনের উপস্থিতি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও কাজ করে। ক্যাপসাইসিনস নামক একটি উপাদান থাকে এতে। যা ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
হাড়, চোখ, চুল এবং ত্বকের জন্য
ক্যাপসিকামে উপস্থিত ভিটামিন সি অনেক সংক্রমণ থেকে ত্বককে রক্ষা করার পাশাপাশি জয়েন্টগুলিকে শক্তিশালী করে। এতে উপস্থিত ভিটামিন রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়ক। চুল পড়ার সমস্যা কমাতেও বেশ কার্যকর ক্যাপসিকাম। ক্যাপসিকামে থাকা কোলাজেন চুলের গোড়া ভাল রাখতে খুবই উপযোগী। ভিটামিন এ রয়েছে এতে। চোখের নানা রকম সমস্যায় যারা ভুগছেন, তাদের ক্যাপসিকাম খাওয়া উচিত।