কখনও বিয়ে বাড়ি তো কখনও সৈকতে বেড়াতে যাওয়া, এই সব কিছুতেই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় মহিলাদের মাসিক চক্র বা পিরিয়ড। যদিও চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতির ফলে এখন মহিলাদের পিরিয়ডের তারিখ পরিবর্তন অর্থাৎ স্থগিত রাখা সম্ভব। তবে এই তারিখ পরিবর্তন করা নিয়ে বরাবরই সকলের মনে একটা প্রশ্ন জাগে। এটা কি সত্যিই নিরাপদ ? এইরকম সমস্ত প্রশ্নের উত্তর এবং আপনার পিরিয়ডের সময়কাল কিছুটা স্থগিত করার নিরাপদ কয়েকটি উপায়, দেখুন।
পিরিওডের তারিখ স্থগিত রাখা মহিলাদের জন্য কি সত্যিই নিরাপদ?
চিকিৎসকদের মতে আপনার হরমোন সংক্রান্ত ক্রিয়াকলাপকে পরিবর্তন করার জন্য নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য বিকল্প রয়েছে যা আপনাকে প্রতি মাসে আপনার পিরিওড হওয়ার জন্য সাহায্য করে। যদিও অনেক মহিলারা জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্যেও গর্ভনিরোধক ব্যবহার করেন। সেই রকম ভাবেই হরমোনের কিছু ওষুধও মাসিকচক্রকে স্থগিত রাখার কাজ করে।
গর্ভনিরোধক ওষুধ কি আপনার প্রজননের ওপর প্রভাব ফেলে?
পিরিওডের তারিখ পিছিয়ে দেওয়ার জন্যে ব্যবহৃত বেশিরভাগ ওষুধ এবং দীর্ঘমেয়াদি জন্মনিয়ন্ত্রণের ওষুধগুলিতে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের ডোজ থাকে। সেই ডোজ ২৮ দিনের প্যাকেজে আসে। প্রথম তিন সপ্তাহের প্রকাশিত হরমোনগুলি আপনার প্রয়োজন সক্রিয়ভাবে দমন করার জন্য কাজ করে। এর ফলে আপনার মাসিক চক্র বিলম্বিত হয়। যদিও ব্যক্তি বিশেষে এটি আলাদা হতে পারে।
পিরিয়ডের তারিখ পিছিয়ে দেওয়ার সুবিধা
পিরিয়ড অনেকের ক্ষেত্রেই অসুবিধাজনক ও অপ্রীতিকর। পিরিয়ডের তারিখ পরিবর্তন করলে শুধুমাত্র কোনো গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে আপনি সহজে যোগদান করতে পারবেন সেটা নয়। এটি অনেক ক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্যের নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এই চক্রের পূর্বে অনেকেরই অনেক রকমের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়, যেমন পেটে ব্যথা। এই ধরনের ওষুধ খেলে তাঁদের এই সমস্ত সমস্যা থেকে সমাধান মিলতে পারে।
এই ধরনের ওষুধ খাওয়ার কি কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে?
মাসিকচক্রের সময়কাল ইচ্ছাকৃতভাবে পরিবর্তন করার কোনো রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই সাধারণত। জন্মনিয়ন্ত্রণের ওষুধগুলি কেবল প্রজনন হরমোনের প্রবাহ এবং কাজকে পরিবর্তিত করে।
দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের অসুবিধা কী?
এধরণের ওষুধ খাওয়ার সবচেয়ে বড় অসুবিধা যৌন কর্মে সক্রিয় মহিলাদের ক্ষেত্রে হয়। হরমোনের কোনো রকম নিরোধক বেশি খাওয়া সবচেয়ে বড় অসুবিধা, অনেক ক্ষেত্রে তারিখ পরিবর্তন করার জন্য কোনো মহিলা গর্ভবতী কিনা সেটা বোঝা যায় না। সেক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার লক্ষণগুলি খেয়াল রাখতে হবে এবং প্রয়োজনে তা নিশ্চিত করতে বাড়িতেই টেস্ট করতে হবে। কিছু মহিলাদের ক্ষেত্রে এই ধরনের ওষুধ দীর্ঘদিন খেলে গা বমি ভাব, মেজাজের পরিবর্তন, পেটে ব্যথা ইত্যাদি কিছু সমস্যা হতে পারে।
কারা এই ধরনের ওষুধ খেতে পারেন?
চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই এই ধরনের ওষুধ খাওয়া নিরাপদ এবং কার্যকর।
এই ধরনের ওষুধের কোন বিকল্প আছে কি?
এ ধরনের ওষুধ খাওয়ার বিকল্প হিসাবে কিছু প্রাকৃতিক পদ্ধতিকে বেছে নেওয়া ভালো। সেক্ষেত্রে মহিলারা অম্লীয় খাবার,যেমন আপেল সিডার ভিনিগার (এএসভি), লেবু, ছোলার ডাল এবং রাসবেরী পাতা খেতে পারেন। এটা পিরিয়ডের তারিখ পিছিয়ে দিতে পারে কিংবা বিলম্ব করতে পারে। এছাড়াও শারীরিক অনুশীলনও খুব ভালো একটি বিকল্প হতে পারে এক্ষেত্রে। তবে সর্বক্ষেত্রেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অবশ্যই প্রয়োজনীয়।