মোমো খেতে কে না ভালোবাসে? ধোঁয়া ওঠা গরম সাদা ধবধবে মোমো দেখেই জিভে জল আসে না, এমন ভারতীয় ভোজনরসিক দেখা পাওয়া ভার।
পাহাড়ি এলাকাগুলিতে বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াংয়ের সেরা খাবার মোমোই। তাদের ব্রেকফাস্ট শুরু হয় মোমো দিয়ে। মধ্যাহ্নভোজ থেকে বিকেলের টিফিন কিংবা ডিনার সমস্তই শেষ হয় মোমো দিয়ে। ফলে মোমোর জনপ্রিয়তা কতটা বুঝতেই পারা যাচ্ছে।
পাশাপাশি সমতল ও দেশের বিভিন্ন শহরে বিভিন্ন ধরণের মোমো খাবার চল রয়েছে। স্টিমড মোমোর পাশাপাশি কিংবা বিভিন্ন ভাবে একে খাওয়া হয় বিভিন্ন প্রদেশে বিভেদে।
মূলত তিব্বতি খাবার হলেও নেপাল, উত্তর-পূর্ব ভারত এলাকায় প্রধান খাবার। বাঙালির পুলি-পিঠার মত দেখতে এই মোমো এখন দেশের অন্যতম ট্রেন্ডিং খাবার।
খুব সহজেই তৈরি করা যায় এবং খুব সহজেই তা সহজপাচ্য হওয়ায় পোর্টেবল স্টিমারের মধ্য দিয়ে এটি শুধু গরম করলেই গরম গরম পরিবেশন করতে পারা যায়। বিশেষ কিছু সামগ্রী না লাগায় এর জনপ্রিয়তা ক্রমশ বেড়ে চলেছে।
গত এক দশকে ভারতের স্ট্রিটফুড এর বাদশাতে পরিণত হয়েছে মোমো। দামেও অত্যন্ত সস্তা। ফলে তাকে টেক্কা দেওয়ার জন্য আশপাশে কোনও খাবারের দেখা মিলছে না।
এখন মোমো এত জনপ্রিয় হয়ে চলেছে। তার মাঝে বিশেষজ্ঞরা কিন্তু আশঙ্কার বাণী শুনিয়েছেন। আপনি কি জানেন! যে আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক এই মোমো! নরম ময়দার এই বল যা ভেজ অথবা ননভেজ স্টাফিং এর সঙ্গে পরিবেশন করা হয়।
যার মধ্যে বিভিন্ন মশলাদার চাটনি এবং সস অ্যাড করা হয় স্বাদ বাড়ানোর জন্য। নিয়মিত যাঁরা খান তাদের জন্য এটি অত্যন্ত মারাত্মক ক্ষতিকারক বলে প্রমাণিত হয়েছে। যা আপনার শরীরকে গভীরভাবে ক্ষতি করতে পারে বিভিন্ন কারণে।
মোমো বানানোর জন্য এটি যে চাটনির সঙ্গে পরিবেশন করা হয় বা সসের সঙ্গে পরিবেশন করা হয় তা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর বলে মনে করা হচ্ছে। এ কারণে একটি আর্টিকেল বলা হয়েছে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য কেন ঠিক নয় এবং এর সাইডএফেক্ট কতটা মারাত্মক।
মোমোর ওপরের অংশ ময়দা দিয়ে তৈরি করা হয়। যা তৈরি করার পর দীর্ঘক্ষন স্টিম করা হয়। তাতে স্টার্চওয়ালা অংশ সঙ্গে কিছু ব্লিচ জাতীয় কেমিক্যাল মেশানো হয়। এক্সপার্ট ময়দাতে এলেকশন থাকে। যা ইনসুলিন উৎপাদনের ক্ষমতা প্রভাবিত করে। এই রাসায়নিকের এর উপযোগী প্রয়োগশালাতে টেস্টিংয়ের জন্য করা হয়। এই কেমিক্যাল অগ্ন্যাশয় এর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক এবং এটি ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী থাকে।
মোমোর ভিতর ব্যবহার হওয়া সবজি এবং চিকেন লম্বা সময় পর্যন্ত থাকার জন্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই। এর মধ্যে যদি আপনারা সেই মোমো খান, স্বাভাবিকভাবেই আপনার শরীর খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অধিকাংশ চিকেন প্রোডাক্ট বিভিন্ন আউটলেটে পাওয়া যায়। তার মধ্যে ব্যাকটেরিয়া অধিকমাত্রায় থাকে। যা মানুষের শরীরে বিভিন্ন রোগ তৈরি করে।
ঝাল চাটনি অত্যন্ত মারাত্মক। বাটা তৈরি করা ঝাল চাটনি মারাত্মক ক্ষতিকর। লাল লঙ্কা শরীরের জন্য ভালো বলে মনে করা হয়। কিন্তু এই লাল লঙ্কার মধ্যে প্রসেসিং এর দরুন কিছু এমন জিনিস মেলানো হয় যা মোমো বিক্রি করা বেশিরভাগ দোকানে কোয়ালিটি মেইনটেইন করে না। নিম্নমানের মশলা ব্যবহার করা হয়। মার্কেট থেকে সস্তা লঙ্কার গুঁড়ো কিনে নিয়ে এসে চাটনি তৈরি করা হয়।
মোমোতে যে বাঁধাকপি স্টাফিং থাকে, তার মধ্যে ঠিকভাবে যদি তা সেদ্ধ না হয়, তাহলে তার মধ্যে টেপ ওয়ার্ম এর জীবাণু থাকতে। পারে যা মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছে যায়। এটি বাঁধাকপিতে থাকা এক ধরনের পোকা, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত মারাত্মক ক্ষতিকর।
মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট স্থূলত্ব বাড়িয়ে দেয়। তাদের জন্য মোমোতে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট মেলানো হয়। যা খাদ্য পদার্থের মধ্যে প্রাকৃতিক ভাবে মজুত থাকে। কিন্তু প্রসেসড ফুডে এটি আলাদা করে মেলানো হয়। সোডিয়াম গ্লুটামেট সাদা ক্রিস্টাল পাউডারের মত হয়। যা না কেবল সমস্যা বাড়িয়ে তোলে, পাশাপাশি ঘাম তৈরি করা, বুকে ব্যথা, হার্ট রেট বাড়িয়ে দেওয়ার মতন স্বাস্থ্যের ক্ষতিকারক লক্ষণগুলোকে দ্রুত করে দেয়। প্যাকেজ ফুডের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে থাকে।
যদি আপনি ডায়েটে পর্যাপ্ত ফাইবার ওয়ালা ফুড সেবন করতে থাকেন, তাহলে কখনও কখনও জাঙ্কফুড খেতে পারেন। কিন্তু এটি সপ্তাহে তিনবারের বেশি এটি না খাওয়াই ভালো। খেতেই হয় যদি, তাহলে ঘরে বানিয়ে খান। যেখানে আপনি নিজের মতো করে তা তৈরী করতে পারবেন।