সাধারণ গর্ভাবস্থায় নিষিক্ত ডিম্বানু ফ্যালোপিয়ান টিউবের মাধ্যমে জরায়ু গহ্বরেই থাকে, সেখানেই ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে। কিন্তু এক্টোপিক গর্ভাবস্থায় (Ectopic Pregnancy) নিষিক্ত ডিম্বানু জরায়ুর বাইরে থাকে, সেখানেই বড় হতে থাকে।
একাধিক গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে যে, সারা বিশ্বে অন্তসত্ত্বাদের মধ্যে ২ শতাংশ মহিলার ক্ষেত্রে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি ধরা পড়ে। এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি সহজে বা প্রাথমিক পরীক্ষায় শনাক্ত করা কঠিন। কারণ, অনেক ক্ষেত্রেই গর্ভাবস্থার স্বাভাবিক প্রাথমিক লক্ষণগুলি প্রকাশ পায় না।
এক্টোপিক প্রেগন্যান্সিতে এতটাই জটিলত রয়েছে যে এ ক্ষেত্রে সন্তানধারণের প্রাথমিক পর্যায়ে প্রসূতির মৃত্যুর ঝুঁকিও অনেকটাই বেশি।
এক্টোপিক প্রেগন্যান্সিতে ভ্রূণ যত বড় হতে থাকে, অন্তসত্ত্বার তত বেশি রক্তপাত হয় এবং ডিম্বনালীর ক্ষতি হয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করা না হলে প্রসূতির মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
গর্ভাধারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে বা প্রেগন্যান্সি শনাক্ত করার জন্য পেলভিক পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া রক্ত পরীক্ষা, আল্ট্রাসাউন্ড ও সোনোগ্রাফির মাধ্যমেও জরায়ু পরীক্ষা করা হয়। যদি এই সময়ের মধ্যে ভ্রূণ জরায়ুতে দৃশ্যমান না হয়, তবে এটি একটি এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি হিসাবে বিবেচিত হয়।
এক্টোপিক প্রেগন্যান্সিতে মাথা ঘোরা এবং দুর্বলতা সাধারণ লক্ষণ। এ ক্ষেত্রে অন্তসত্ত্বা প্রচুর ঘামেন এবং তাঁর ত্বকের ক্রমশ রং হলুদ হতে শুরু করে। এক্টোপিক প্রেগন্যান্সিতে অন্তসত্ত্বার কাঁধ, ঘাড় বা মলদ্বারে ব্যথা হতে পারে।
শ্রোণি প্রদাহজনিত সমস্যা (Pelvic inflammatory disease), যৌন সংক্রমণজনিত রোগ (এসটিডি) থাকলে এবং সিজারের মাধ্যমে পূর্ববর্তী সন্তানের জন্ম দিয়েছেন, এমন মহিলাদের ক্ষেত্রে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির ঝুঁকি বেশি।
যেসব মহিলার এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি হয়, তাদের পেটের নানা সমস্যায় খুব ভুগতে হয়। এক্টোপিক প্রেগন্যান্সিতে প্রচুর বমি ও রক্তপাত হয়। এ ক্ষেত্রে শ্রোণী (পেলভিক) অংশে খুব ব্যথা হয়।