খাবারে তেতোর নাম শুনলেই নাক সিঁটকে ওঠেন অনেকে। বিশেষ করে ছোটরা। তাদের তেতো খাওয়ানো তো খুবই দুষ্কর। বড়দেরই অনেকে তা পছন্দ করেন না। এটা জেনেও যে তার হাজার গুণ রয়েছে।
যেন এক রকম ওষুধ
নিমপাতা, উচ্ছে বা করেলা- যা-ই হোক না কেন। এগুলো যেন এক রকম ওষুধ। সে কথা জানা থাকলেও অনেকেই তা বাতিলের খাতা ফেলেন। বলা যেতে পারে হাতে গোনা কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা তেতো খেতে পছন্দ করেন।
আরও পড়ুন: Kolkata Metro-য় QR Code দিয়ে কী করে টিকিট মিলবে, জেনে নিন
কী কী গুণ
করোলা বা উচ্ছে, কালমেঘ, চিরতা, নিম খেলে রক্ত পরিষ্কার হয়। এর পাশাপাশি ভাল থাকে ত্বক, হজমতন্ত্রও ভাল থাকে। সেগুলো কৃমি দূর করে। তেতোয় রয়েছে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিভাইরাল গুণ। চিরতা এবং নিমের পাতায় অ্যান্টি-ক্যান্সার গুণ রয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বাধীন হল বার্বাডোজ, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শাসন শেষ
রোগ কেন হয়
আয়ুর্বেদ বলছে শরীরের যে কোনও রোগ হয় বাত পিত্ত এবং কফের ভারসাম্য বা সমতা বিগড়ে গেলে। যেমন কোনও মানুষের ডায়াবেটিস হয় কফের ভারসাম্য হারিয়ে গেলে। শরীরে কফের অংশে সমতা বজায় রাখে তেতো খাবার। এর মধ্যে রয়েছে কালমেঘ, উচ্ছে, করলা, রস নিমপাতা, নিমের ছাল, চিরতার মতো জিনিস।
আরও পড়ুন: সিকিম যাওয়ার কথা ভুলে যান, পর্যটকদের জন্য দরজা বন্ধ করল সরকার
নিয়ন্ত্রণ
সেই কারণে বলা হয় তেতো খেলে রোগীর সুগার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে। অনেক রোগীর ব্লাড সুগার লেভেল কমানো হয়েছে তেতো খাবার খাইয়ে। বলা হচ্ছে, তেতো খাবারের কাঁচা রস খাবার সবথেকে ভাল।
গোটা না খেলে
গোটা না খেয়ে সেটা পিষে তার নির্যাস খাওয়াই সবথেকে বেশি উপকারী। যে মানুষের ব্লাড সুগারের মাত্রা খুব বেশি তিনি যদি রোজ ৪০ মিলিমিটার রস খান, তাহলে অনেক উপকার পাবেন। তা সে যে কোনও একটি হোক বা সব ক'টি মিশিয়ে।
আরও পড়ুন: কলকাতা পুরভোটে নিরাপত্তা কেমন? কমিশনের কাছে জমা পড়ল ব্লু প্রিন্ট
আবার যাঁদের ব্লাড সুগার লেভেল অনেক বেড়ে গিয়েছে, তাঁরা যদি ২০ মিলিলিটার তেতোর রস খান, তাহলে তাঁরা ফল পাবেন বেশ। আর যাঁদের কোন রোগ বালাই আপাতত নেই, তাঁরাও এই তেতো খেতেই পারেন।
আরও পড়ুন: আকাশ থেকে ঝাঁপ নীরজ চোপড়ার, তারপর যা হল দেখুন
বিরতি দরকার
কিন্তু একটা জিনিস সবসময় মাথা রাখতে হবে। ইচ্ছা মতো খেলেই কিন্তু হবে না। কিছু বিধিনিষেধ মানতে হবে। টানা তিন মাস খাওয়ার পর তা বন্ধ করে দিতে হবে। ১২ থেকে ১৫ দিনের জন্য একটা বিরতি প্রয়োজন।
বাজারের জুস ভাল?
এর পাশাপাশি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বাজারের যে জুস পাওয়া যায়, সেগুলো না খাওয়াই ভাল। কারণ এতে সোডিয়াম বেনজোইট মেশানো থাকে। ফলে তার কার্যকারিতা সামান্য হলেও কমে যাবে।
আরও পড়ুন: এই ভাবে কানের ময়লা বের করেন? পর্দা ফাটতে পারে যে কোনও মুহূর্তে!
সকালে খালি পেটে সাত-আটটা নিমপাতা খেয়ে একটু জল খেতে হবে। মেথি ব্লাড সুগার লেভেল কমানোর ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী। দেখা গিয়েছে, ১০ গ্রাম মেথির দানা রাতে আধ কাপ জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে জল খেলে হবে এবং মেথি দানাগুলো চিবিয়ে খেলে উপকার পাওয়া গিয়েছে।
মডার্ন মেডিসিনের মত
তবে মর্ডান মেডিসিন কিন্তু এই ফর্মুলা মানছে না। ব্লাড সুগার কমানোর ক্ষেত্রে তেতো খাওয়ার কোনও সম্পর্ক রয়েছে বলে তারা বিশেষ মনে করেন না। তবে ঘটনা হল অনেক রোগী আছেন, যাঁরা এগুলো বিশ্বাস করে। যেমন নিম পাতা খাওয়া বা করলা, কালমেঘের রস খাওয়া। এগুলো খেলে কারও কোনও ক্ষতি নেই।