সারাদিন অফিসে কাজের চাপ। সকালে ঘুম ছেকে উঠেই শুরু হয় দৌড়। প্রতিযোগিতার জীবনে নিজের জন্য সময় নেই। খাওয়ারদাওয়ার সময়ও নেই। তার উপরে অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড! তার ফলে বেড়ে গিয়েছে ওজন। ভুঁড়ি বেরিয়ে এসেছে। ওজন বৃদ্ধি বর্তমান সময়ের অন্যতম গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্রমবর্ধমান ওজন নিয়ে বহু মানুষ উদ্বিগ্ন। ওজন বাড়ার কারণ যাই হোক না কেন, কিন্তু তা কমানো চ্যালেঞ্জের চেয়ে কম নয়! ওজন কমানোর অনেক উপায় থাকলেও সবচেয়ে কার্যকরী হচ্ছে নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ব্যায়ামের চেয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার ওজন কমাতে বড় ভূমিকা নেয়। দ্রুত ওজন কমাতে চাইলে প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। যাতে কম ক্যালোরি থাকে। ওজন কমাতে কার্যকরী ভূমিকা নেয় ডাল। যাতে ক্যালোরি কম, প্রোটিন বেশি।
অনেক বাড়িতেই দুপুর ও রাতের খাবারে থাকে ডাল। ভারতে সব রাজ্যেই তরিতরকারির সঙ্গে ডাল খাওয়ার চল রয়েছে। ডালে থাকে প্রচুর প্রোটিন। ডাল রান্না করাও সহজ। ডাল স্বাস্থ্যকর পাশাপাশি সুস্বাদুও। পুষ্টিবিদরা বলছেন,ওজন কমাতে প্রতিদিনের ডায়েটে ডাল অন্তর্ভুক্ত করুন।
মুগের ডাল- ওজন কমানোর সমস্ত উপাদান রয়েছে মুগ ডালে। সবুজ মুগ ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। তাই ওজন কমানোর জন্য এই ডাল দুর্দান্ত বিকল্প। মুগ ডালে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি এবং কার্বোহাইড্রেট কম। দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরা থাকে। ফলে খিদে পায় না চট করে। ক্যালোরি থাকে নিয়ন্ত্রণে। দুপুরে শুধু মুগ ডাল খেতেই পারেন। তাতে পেট ভরা থাকবে। শরীর প্রয়োজনীয় প্রোটিনও পাবে।
আরও পড়ুন- গরমে বারবার জল খাওয়া বিপজ্জনক, জানুন দিনে ক'গ্লাস খাওয়া উচিত?
মসুর ডাল- বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় মুসুর ডালে। এই কারণেই এটি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। মসুর ডাল দৈনিক ফাইবারের চাহিদার প্রায় ৩২ শতাংশের জোগান দেয়। এই ডাল শুধুমাত্র ওজন কমানোর জন্যই সহায়ক নয়, এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। শরীরকে ডায়াবেটিসের মতো রোগ থেকে রক্ষা করতেও সাহায্য করে। এ ছাড়া এই ডাল পটাশিয়াম, ফোলেট এবং আয়রনেরও ভালো উৎস।
কাবুলি ছোলা- কাবুলি ছোলা চানা নামেও পরিচিত। এতে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো পুষ্টি। এই সমস্ত পুষ্টিগুলি শরীরকে সুস্থ রাখে। বাড়ায় হজমশক্তি। পাশাপাশি হাড়কে শক্তিশালী করে এবং ওজন কমাতে সহায়তা করে। ফাইবার সমৃদ্ধ ছোলা খিদে কমায়। পেট ভরা থাকে। চট করে খিদে পায় না। ওজন কমাতে সাহায্য করে।
রাজমা- ওজন কমানোর জন্য দারুণ বিকল্প রাজমা। এটি প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ। রাজমা ওজন কমানোর জন্য একটি দুর্দান্ত খাবার। সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হল, এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্সও কম। হার্টকে সুস্থ রাখতে এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক রাজমা।
আরও পড়ুন- শরীরে এই ৪ সমস্যা থাকলে পেঁপে বিষের সমান! একদম খাবেন না
বিউলির ডাল- ওজন কমানো এবং পেশী তৈরির জন্য সেরা ডাল বিউলি। এই ডাল ভিটামিন বি, ফাইবার এবং জিঙ্কের পাওয়ার হাউস। এতে ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিনও পাওয়া যায়। ওজন কমানোর পাশাপাশি হাড় মজবুত করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক বিউলির ডাল।
আমিষভোজীদের প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ গ্রাম ডাল খাওয়া উচিত। নিরামিষাশীদের প্রতিদিন কমপক্ষে ৬০ গ্রাম ডাল খাওয়া উচিত। প্রতিদিন দুপুর ও রাতের খাবারের সঙ্গে ডাল খান। ওজন কমাতে ডাল অত্যন্ত কার্যকর।