বাংলা কবিতা ও সাহিত্যের আলোচনায় রবীন্দ্রনাথ নজরুলসহ আরও অনেকের নাম উঠে আসাটা যেমন খুব স্বাভাবিক, তেমনই আরও একজনকে ছাড়া অসম্পূর্ণ থেকে যায় সেই আলোচনা, তিনি কবি শঙ্খ ঘোষ (Shankha Ghosh)। যাঁর কলম থেকে উঠে আসা লেখা বারেবারেই নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে পাঠককে।
১৯৩২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি অবিভক্ত ভারত তথা বর্তমান বাংলাদেশের চাঁদপুরে জন্ম তাঁর। তবে প্রথমে অবশ্য নাম ছিল চিত্তপ্রিয় ঘোষ। পাবনা থেকে স্কুলের পড়াশোনা শেষ করার পর প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
গোটা জীবনে দীর্ঘ একটা সময় শিক্ষকতা করেছেন শঙ্ক ঘোষ। তার পাশাপাশি করে গিয়েছেন সৃষ্টি। শঙ্খ ঘোষ হিসেবে তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত হলেও 'কুন্তক' বা 'শুভময়' ছদ্মনামও ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
সর্বদা সমসাময়িক রাজনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ে সজাগ থাকতে দেখা গিয়েছে কবি শঙ্খ ঘোষকে। যখনই সমাজে কোনও অন্যায় দেখেছেন, গর্জে উঠেছে তাঁর কলম। সমাজের শোষিত ও নিপীড়িত মানুষের দুঃখ যন্ত্রণা দেখে বারেবারেই তাঁর লেখনীতে ঝরে পড়েছে প্রতিবাদের ভাষা।
আরও পড়ুন - e-SHRAM কার্ডে টাকা অ্যাকাউন্টে পাচ্ছেন না, এই ভুলগুলি করেননি তো?
তাঁর 'বাবরের প্রার্থনা, মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে, গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছর মতো সৃষ্টি প্রত্যেক পাঠকের কাছেই অমূল্য সম্পদ। শুধু কবিতাচর্চাই নয় তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞও।
কবির সৃষ্টি তাঁর মুকুটে যুক্ত করেছে বহু পালক। বিভিন্ন সময় জ্ঞানপীঠ, সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার, রবীন্দ্র পুরস্কার বা পদ্মভূষণের মতো সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি। কিন্তু কোভিডে আক্রান্ত গয়ে গত বছর এই দিনেই চিরতরে থেমে যায় কবির কলম। পরপাড়ে পাড়ি দেন শঙ্খ ঘোষ।