Marine Engineer Turned Desi Cow Milk Seller: ছেলেবেলা থেকে লক্ষ্য ছিল দেশের জন্য কিছু করা। আরও এটাও ঠিক করে রাখা ছিল সবার আগে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। যাতে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে সমস্যা না হয় একটুও।
চাকরি নিয়ে চলে গিয়েছিলেন বিদেশে। তবে সেখানে মন বেশিদিন টেকেনি। চলে এসেছেন দেশে। মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এখন দেশি গরুর দুধ বিক্রির ব্যবসা শুরু করেছেন। তিনি সৌরভকুমার মিশ্রা। বাড়ি কলকাতার বাঙুর এলাকায়।
জৈব চাষ, স্বাবলম্বী করে তোলা
দেশে ফিরে আসেন ২০১৭ সালের ৩১ মে। তখন থেকে কাজ শুরু করেন জৈব চাষবাস (Organic Farming) নিয়ে। এখন তাঁর ৭টি কেন্দ্র রয়েছে। এর পাশাপাশি ৮০০ শিশু-কিশোরকিশোরীকে লেখাপড়া, আঁকা, নাচগান সেখানো, তাঁদের মা-বাবাকে স্বাবলম্বী করে তোলার কাজ করছেন। তাঁদের মেহেন্দি লাগানো শেখানোর ব্যবস্থা করেছেন, হাতের কাজও শেখান।করোনা সময় তাঁদের কাউকে ত্রাণ দেওয়ার দরকার পড়েনি। কারণ তাঁরা মাস্ক বানিয়ে উপার্জন করেছেন।
আরও পড়ুন: ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য দারুণ উপকারী টমেটো সুপ, বানান বাড়িতেই
দেশি গরু বনাম বিদেশি গরু
সৌরভ জানান, রাস্তাঘাটে দেখে যায় তেলের ভাজা খাবারে ভর্তি। সস্তায় খাবার দিতে গিয়ে ক্ষতিকর জিনিস বিক্রি হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যে দুধ বিক্রি হয় তাতে এ১ প্রোটিন থাকে। বিদেশি গরু, জার্সি গরুর দুধে এ১ প্রোটিন থাকে। যা খেলে গ্যাস, কোলেস্টেরল, হার্ট, ডায়াহিটিসের সমস্য়া দেখা দেয়। চিকিৎসকেরাও তা-ই বলেন।
আরও পড়ুন: সেচের জল থেকে ধানে যাচ্ছে আর্সেনিক, ভাত কতটা নিরাপদ?
ওই দুধের দাম কম। এবং দৈনিক উৎপাদনও বেশি। বিদেশি গরু মোটামুটি দিনে ৩০-৪০ লিটার দেয়। সেদিক থেকে দেশি গরু দুধ দেয় অনেক কম। দিনে দেশি গরু ১০ লিটার দেয় দুধ দেয়।
তিনি জানান, দেশি গরুর বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে যেমন গির, সাহিওয়াল, লাল সিন্ধি, গঙ্গোত্রী। ওই গরুর দুধে এ১ প্রোটিন থাকে না। এ২ প্রোটিন থাকে। আর ফলে ওই দুধ খেলে গ্যাস, বদহজম হয় না। তিনি বলেন, "মানুষের কাছে এই জিনিস তুলে ধরেছি। না হলে ধীরে ধীরে আমরা দেশি গরুর দুধের গুণমান হারিয়ে ফেলব।"
যাঁরা দেশি গরুর দুধ চান এবং যাঁরা তা বিক্রি করেন, তাঁদের মধ্যে যোগাযোগ করিয়ে দিচ্ছেন তিনি। সৌরভ বলেন, "মানুষ যাতে ভাল জিনিস পান, তাই এই কাজ। কৃষক এবং ক্রেতাদের মধ্যে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া।"
দেশি গরুর দুধের ব্যাপারে অনেকে খোঁজা শুরু করেছেন। এই দুধের দাম ৮০-৮৫ লিটারে টাকা। কাচের বোতলে প্যাক হয়ে যায়। মাস দুয়েক শুরু করেছেন দুধের প্রকল্প। ধীরে ধীরে আরও বড় করার ইচ্ছা রয়েছে। কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সময় লাগছে।
মিলছে অনলাইনে
তিনি বলেন, "দুধ ঠান্ডা করে পাঠিয়ে দিচ্ছি। প্রসেসিং হচ্ছে না। জনা দশেক কৃষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছি। তাঁদের কাছে ২-৪টে করে গরু রয়েছে। কলকাতার আশেপাশের এলাকা থেকে দেশি গরুর দুধ জোগাড় করা হচ্ছে। একটি বোতলে ১ লিটার দুধ থাকে। অনলাইনেও পাওয়া যাচ্ছে।"
কলকাতা থেকেই লেখপড়া করেছেন তিনি। পরে কাজের সূত্রে বিদেশ যেতে হয়েছিল। ৬ মাস বাড়ির বাইরে, আর এখানে মানে বাড়িতে ৬ মাস। ফলে অনেক কাজ করার সুযোগ থাকলেও তা করা যাচ্ছিল না। ফলে চাকরিকে বিদায় জানাতে হয়েছে। তিনি বলেন, "বাইরে গেলেও আবেগ ছিল। এখন পুরোপুরি সময় দেশমায়ের সেবা করব।"