ভারতীয় দল (Team India) আজ (২৩ অক্টোবর) পাকিস্তানের (India vs Pakistan) বিরুদ্ধে একটি হাই-ভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি হবে। দিপাবলির ঠিক একদিন আগে অনুষ্ঠিত হওয়া এই ম্যাচটি ভারতীয় সময় দুপুর ১.৩০ থেকে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (MCG) অনুষ্ঠিত হবে।
ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ বরাবরই ভক্তদের কাছে আকর্ষণীয়। দুই দেশের খেলোয়াড়দের মাঠে বারবার মেজাজ হারাতে দেখা গিয়েছে। শোয়েব আখতার (Shoaib Akhtar), শাহীদ আফ্রিদি (Shahid Afridi), গৌতম গম্ভীর, হরভজন সিং এবং মহেন্দ্র সিং ধোনিকে (Mahendra Singh Dhoni) অনেকবার মাঠের মধ্যেই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করতে দেখা গিয়েছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক এমনই কিছু সেরা-৫ ঘটনা, যখন দুই দলের খেলোয়াড়রা একে অপরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন...
এমএস ধোনি বনাম শহীদ আফ্রিদি: ২০০৫ সালে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নবাগত ধোনি, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিশাখাপত্তনম ওডিআইতে ১৪৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছিলেন। সেই ম্যাচে শহিদ আফ্রিদির বলে ধোনি চার মারলে পাক স্পিনার রেগে যান। ধোনির মুখোমুখি হয়ে কিছু বোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু মাথা গরম করে আফ্রিদি বেশি রান দিয়ে ফেলেন। এই ঘটনার জবাব ব্যাট দিয়েই দেন ধোনি। কভার অঞ্চলের ওপর দিয়ে লম্বা ছক্কা হাঁকান তিনি। এরপর ১৪৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংসও খেলেন। এই ম্যাচে ভারত ৫৮ রানে জয় পায়।
গৌতম গম্ভীর বনাম শহীদ আফ্রিদি: এর ঠিক দুই বছর পর ভারতীয় ওপেনার গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ান আফ্রিদি। ঘটনাটি ২০০৭ সালে কানপুরে। এরপর আফ্রিদির বলে চার মারেন গম্ভীর। তারপর আবারও জ্বলে ওঠেন পাকিস্তানি বোলার। কিন্তু পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায় যখন পরের বলে সিঙ্গেল নিতে ছুটে আসা গম্ভীর, আফ্রিদির সঙ্গে ধাক্কা খান। এরপর দুই খেলোয়াড়ের মধ্যে হাতাহাতি হয়। আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড কোনোভাবে বিষয়টি শান্ত করেন। পরে ম্যাচ রেফারি রোশন মহানাম আফ্রিদিকে ম্যাচের ৯৫ শতাংশ এবং গম্ভীরকে ৬৫ শতাংশ জরিমানা করেন।
হরভজন সিং বনাম শোয়েব আখতার: ২০১০ সালের এশিয়া কাপে শোয়েব আখতার ও হরভজন সিংয়ের যুদ্ধ কে ভুলতে পারে? ভারতীয় ইনিংসের ৪৯তম ওভারে, শোয়েব আখতার বাউন্সার দেওয়ার পরে হরভজন সিংকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তারপর মাঠেই দু'জনের মধ্যে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। পরে মহম্মদ আমিরের বলে ছক্কা মেরে ভারতকে জয় এনে দেন হরভজন সিং। জয়ের পর শোয়েব আখতারের দিকে চিৎকার করে এই জয় সেলিব্রেট করেন হরভজন সিং।
ইশান্ত শর্মা বনাম কামরান আকমল: পাকিস্তান খেলোয়াড়দের জবাব দিতে পিছিয়ে নেই ভারতীয় ফাস্ট বোলার ইশান্ত শর্মাও। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে বেঙ্গালুরুতে খেলা টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ইশান্ত ও পাক ব্যাটার কামরান আকমলের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। ইশান্তের বলে একটানা মারছিলেন কামরান, এরপর দুজনেই একে অপরের দিকে আঙুল তুলে কথা বলতে থাকেন। বিষয়টি ঠেকাতে দেখে আম্পায়ার, সুরেশ রায়না ও যুবরাজ সিং এসে একরকম হস্তক্ষেপ করেন। এরপর ১৯তম ওভারে অশোক দিন্দার বলে থার্ডম্যানে কামরান ক্যাচ দেন ইশান্তকে তার পর আবারও ইশান্তের রাগ দেখার মত ছিল। যদিও ম্যাচের পর দুই খেলোয়াড়কে জরিমানা করেছে আইসিসি।
রাহুল দ্রাবিড় বনাম শোয়েব আখতার: খুব কম লোকই জানেন যে রাহুল দ্রাবিড়ও রেগে যেতে পারেন। ভারতীয় দলের বর্তমান কোচ দ্রাবিড়কে শান্ত স্বভাবের ক্রিকেটার বলেই সকলে চেনেন। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ২০০৪ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে, যখন ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতারের সঙ্গে ঝামেলা হয় দ্রাবিড়ের। আখতার মনে করেছিলেন যে দ্রাবিড় শান্ত থেকে সহ্য করবেন, কিন্তু তা নয়। আসলে, ব্যাটিংয়ের সময় যখনই দ্রাবিড় রান নিতে দৌড়াচ্ছিলেন, আখতার তখনই বারবার তাঁর পথ আটকানোর চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। এতেই রেগে যান দ্রাবিড়।
দ্রাবিড় প্রথমে আম্পায়ারের কাছে অভিযোগ করেন, কিন্তু আখতার কিছুই শুনতে চাননি। দ্রাবিড় নিজেই আখতারের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এরপর পাকিস্তানি অধিনায়ক ইনজামাম-উল-হক ও শোয়েব মালিক শান্ত করতে এগিএ আসেন। আখতার একটি টিভি শোতে প্রকাশ করেছিলেন, ''আমি যখন দ্রাবিড়ের সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছিলাম। তখন আমি তাকে আমার দিকে ছুটে আসতে বলেছিলাম। এতে দ্রাবিড় ক্ষিপ্ত হয়ে আমার কাছাকাছি আসতে শুরু করে দেয়। আমি হতভম্ব হয়ে ওকে বললাম – রাহুল, আমি জানতাম না তুমিও ঝগড়া করবে।''
রাহুল দ্রাবিড় বর্তমানে ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোচ। সম্প্রতি একটি টিভি বিজ্ঞাপনের শুটিং করেছেন তিনি। তখন রাহুল দ্রাবিড় ইন্দিরানগরের গুন্ডা হয়ে গিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এরপরও সেই বিজ্ঞাপনটি বেশ ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর থেকে ভক্তরাও দ্রাবিড়কে 'ইন্দিরানগরের গুন্ডা' বলা শুরু করেন।