গত ৫ মে থেকে পশ্চিমবঙ্গে লোকাল ট্রেন বন্ধ হওয়ার পর থেকেই দুর্ভোগ বেড়েছিল নিত্যযাত্রীদের। গত ১৬ মে থেকে রাজ্যজুড়ে কার্যত লকডাউন শুরু হওয়ার পর অফিসে যেতে বেজায় সমস্যায় পড়েছেন বাংলার ব্যাঙ্ককর্মীরা।
সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ৩০ মে পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে চলবে এই লকডাউন পরিস্থিতি। প্রায় ফাঁকা রাস্তা-ঘাট। সারাদিনে হাতে-গোনা ট্রেন চলছে শুধু রেলকর্মীদের জন্য। এই ট্রেনে স্বাস্থ্যকর্মীদের চড়ার অনুমতি থাকলেও ব্যাঙ্ককর্মীদের নেই।
পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী, উপযুক্ত পরিচয়পত্র দেখাতে পারলে তবেই স্বাস্থ্যকর্মীদের স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে চড়ার অনুমতি দেওয়া হবে। কিন্তু জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত বাংলার ব্যাঙ্ককর্মীদের ক্ষেত্রে তারও অনুমতি নেই।
কোভিড যোদ্ধার স্বীকৃতি মিললেও মেলেনি তেমন কোনও বিশেষ সুযোগ-সুবিধা। তাই দেশজুড়ে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের জরুরি পরিষেবা সচল রাখতে যথেষ্ট ‘কাঠ-খড় পোড়াতে হচ্ছে’ ব্যাঙ্ককর্মীদের। উল্টে স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে চড়ার ‘অপরাধে’ প্রতিদিন জরিমানা করা হচ্ছে ব্যাঙ্ককর্মীদের।
এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিন প্রাণ হাতে নিয়েই রাজ্যের ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের জরুরি পরিষেবা সচল রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন ব্যাঙ্ককর্মীরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা সচল রাখতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন প্রচুর ব্যাঙ্ককর্মী।
সম্প্রতি অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অ্যাসোসিয়েশনের থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের ধাক্কায় দেশজুড়ে লক্ষাধিক ব্যাঙ্ককর্মী করোনায় আক্রান্ত, প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১,২০০ জন।
এই পরিস্থিতিতে কর্মীদের কিছুটা স্বস্তি দিল ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক। করোনায় আক্রান্ত কর্মীদের অতিরিক্ত ১৪ দিনের সবেতন ছুটি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। স্টেট ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে বুধবার কর্মীদের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ কথা জানানো হয়েছে।
স্টেট ব্যাঙ্ক তার কর্মীদের জানিয়েছে, করোনায় আক্রান্ত হলে মিলবে অতিরিক্ত ১৪ দিনের বিশেষ সবেতন ছুটি। এই ১৪ দিনের ছুটিতে থাকার জন্য কর্মীদের জমা ছুটি (লিভ ব্যালেন্স) কোনও ভাবেই প্রভাবিত হবে না।
প্রসঙ্গে এসবিআই স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের (বেঙ্গল সার্কেল) প্রাক্তন ডেপুটি চিফ সেক্রেটারি (Ex Dy Chief Secretary of SBISA) অশোক মুখোপাধ্যায় বলেন, “মানবিক সিদ্ধান্ত! কোভিড পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে খুবই উপকৃত হবেন স্টেট ব্যাঙ্কের কর্মীরা।”