Advertisement

ভাইরাল

Mokomokai: মোকোমোকাই: মরা মানুষের কাটা মাথার এক আজব সংগ্রহ

Aajtak Bangla
  • 21 Jul 2023,
  • Updated 4:09 PM IST
  • 1/10

Mokomokai: ট্যাটু করতে অনেকরই খুব ইচ্ছে করে! হাতের কবজির কাছে উড়ন্ত প্রজাপতি, গোড়ালির কাছে পালক বা ফুলের নকশা অথবা পিঠ জুড়ে ডানা মেলা পাখির ট্যাটু অনেকেই দেখে থাকবেন। তবে এই ট্যাটু মোটেই হাল ফ্যাশনের আমদানি নয়। ইতিহাসবিদের মতে, আজ থেকে প্রায় ১৪ হাজার বছর আগে মানুষ প্রথম তার শরীরে উল্কি বা ট্যাটু করেছিল। সে যুগের উল্কিই বর্তমানে ট্যাটু।

  • 2/10

তবে সেকালে মানুষ ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে অপদেবতা বা কুনজর থেকে সুরক্ষিত থাকতে শরীরে উল্কি করতেন। অনেক উপজাতিদের মধ্যে তাঁদের সম্প্রোদায়ের মানুষকে আলাদা ভাবে চিহ্নিত করতে শরীরে উল্কি করা হতো। এখনকার ট্যাটু অবশ্য প্রায় পুরোটাই শখ আর নিজের পছন্দের ব্যাপার! 

  • 3/10

শোনা যায়, আজ থেকে প্রায় ৩৩২ বছর আগে ১৬৯১ সাল নাগাদ উইলিয়াম ডাম্পিয়ার নামে এক পরিব্রাজকের মাধ্যমে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এই ট্যাটু খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। উইলিয়াম ডাম্পিয়ারের প্রায় ১৭০-১৭২ বছর পর ১৮৬৪ সালে কর্মসূত্রে নিউজিল্যান্ডে গিয়েছিলেন ব্রিটিশ মেজর জেনারেল হোরাশিও গর্ডন রবলে (Horatio Gordon Robley)।

  • 4/10

সে কালে ব্রিটিশদেরই একটি উপনিবেশ ছিল নিউজিল্যান্ড। মেজর জেনারেল রবলে যে কয়েক বছর নিউজিল্যান্ড ছিলেন তার মধ্যে একটা বিষয় তাঁকে খুব অবাক এবং আকৃষ্ট করেছিল। রবলের নজর কেড়েছিল সে দেশের মাওরি উপজাতিদের মুখ ও শরীরজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বিচিত্র, নিখুঁত উল্কির আঁকিবুকি বা ট্যাটু।

  • 5/10

এই মাওরি উপজাতির মানুষজন আজও নিউজিল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ার কিছু এলাকায় বসবাস করেন। এই উপজাতির নারী-পুরুষরা তাঁদের ধর্মবিশ্বাস বা সমাজ ব্যবস্থা অনুযায়ী নিজেদের আলাদা ভাবে চিহ্নিত করার জন্য গোটা শরীর আর মুখজুড়ে উল্কির নকশা করেন। শরীরের নানা অংশে ট্যাটু করা লোকজনকে হয়তো অনেকেই দেখেছেন, কিন্তু মাওরি উপজাতির মানুষদের মতো এমন মুখজুড়ে উল্কির নকশা এখনও খুব একটা চোখে পড়বে না।

  • 6/10

তাই স্বাভাবিক ভাবেই আজ থেকে ১৫৯ বছর আগে মাওরি উপজাতির মানুষদের মুখময় উল্কির বৈচিত্র বেশ অবাক আর একইসঙ্গে আকৃষ্ট করেছিল ওই ব্রিটিশ মেজর জেনারেলকে। মাওরি উপজাতির মানুষদের শরীর আর মুখজুড়ে আঁকা উল্কিকে ‘টা মোকো’ বলা হয়। এই ‘টা মোকো’ জেনারেল রবলেকে এতটাই আকৃষ্ট করেছিল যে, তিনি মাওরিদের ডেকে ডেকে তাদের মুখের ছবি আঁকতে শুরু করেন।

  • 7/10

নিজের নোট বইতে মাওরিদের ছবি এঁকে তা নিয়ে বিস্তর লেখালেখি শুরু করে দেন জেনারেল রবলে। কিন্তু হাতে আঁকা ওই ছবি দিয়ে তিনি সকলকে বোঝাতে পারতেন না যে, কত অদ্ভুত এবং বৈচিত্রময় মাওরিদের মুখজুড়ে থাকা উল্কি-চিত্রগুলি! মাওরিদের উল্কি সম্পর্কে স্পষ্ট করে সবাইকে বোঝাতেই একটা বিকল্প উপায় খুঁজতে শুরু করেন তিনি।

  • 8/10

শেষে একটা বিচিত্র উপায় মাথায় আসে তাঁর। মৃত মাওরিদের উল্কি করা মাথা কেটে নিজের কাছে রেখে দেবেন বলে ঠিক করেন জেনারেল রবলে। এর পর থেকেই মৃত মাওরিদের মাথা কেটে সংগ্রহ করে সেগুলিকে বিশেষ উপায়ে সংরক্ষণ করা শুরু করেন ব্রিটিশ মেজর জেনারেল হোরাশিও গর্ডন রবলে (Horatio Gordon Robley)। তাঁর সংগৃহীত ‘টা মোকো’-এ ভরা মৃত মাওরিদের কাটা মাথাগুলিকেই একসঙ্গে ‘মোকোমোকাই’ বলা হয়।

  • 9/10

যত দূর জানা যায়, ব্রিটিশ মেজর জেনারেল রবলে মাথার ভেতরের পচনশীল অংশগুলিকে (যেমন, ঘিলু, চোখ ইত্যাদি) বের করে এনে তার মধ্যে এক ধরনের গাছের ছাল আর বিশেষ ধরনের আঠা ভরে দিয়ে রোদে শুকিয়ে নিতেন। কাটা মাথার মুখের উপরের চামড়াতেও মাখিয়ে দেওয়া হতো বিশেষ ওই আঠা। এই ভাবে সংরক্ষণের ফলে দেড়শো বছর পেরিয়েও প্রায় অবিকৃত রয়েছে গিয়েছে এই মোকোমোকাই।

  • 10/10

অবসরের পর মেজর জেনারেল গর্ডন রবলে যখন ইংল্যান্ডে ফিরে আসেন, তখন তাঁর সংগ্রহে ছিল প্রায় ৩৫-৪০টি মৃত মাওরিদের সংরক্ষিত কাটা মাথা বা মোকোমোকাই। কিন্তু তাঁর সংগ্রহের অধিকাংশ মোকোমোকাই উপযুক্ত জায়গা আর সংরক্ষণের অভাবে, অযত্নে নষ্ট হয়ে যায়। তবে তাঁর সংগ্রহের কয়েকটি মোকোমোকাই আজও ‘আমেরিকান মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি’তে সংরক্ষিত রয়েছে।

Advertisement
Advertisement