সরকারি গাইড লাইন ছাড়া হোম স্টে মালিকদের থেকে ৩০০ টাকা করে নেবার অভিযোগে একই সংগঠনের দুই কর্তার দুই ধরণের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তাল আলিপুরদুয়ার জেলার পর্যটন শিল্প। রাজ্য সরকারের প্রকল্প উৎকর্ষ বাংলার সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হোমষ্টে ট্যুরিজমের স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য হোমস্টে মালিকদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আলিপুরদুয়ার ডিস্ট্রিক্ট ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের (এডিটিএ) বিরুদ্ধে।
অথচ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে রাজ্য সরকারের এই উৎকর্ষ বাংলা ট্রেনিংয়ের জন্য কি করে এই সংগঠন হোমস্টে মালিকদের থেকে টাকা তুলছে তাই নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। রাজ্য সরকারের এই প্রকল্প আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে এই উৎকর্ষ বাংলার স্কিল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিংয়ের জন্য একটি ফর্ম হোমস্টে মালিকদের সম্পুর্ন বিনামূল্যে দেওয়ার গাইড লাইন রয়েছে। অথচ সেই বিনামূল্যের ফর্মের জন্য মালিকদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
চিলাপাতার কোদালবস্তির শ্যামল রাভা, বিমল রাভারা জানিয়েছেন, আমাদের কছ থেকে ট্রেনিং বাবদ ৩০০ টাকা করে নিয়েছেন সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ গৌতম রায় (সাধু)। যদিও এডিটিএর জেলা সম্পাদক মানব বক্সি জানিয়েছেন, ওই টাকা উৎকর্ষ বাংলার ট্রেনিংয়ের জন্য নেওয়া হয়নি।ওই টাকা নেওয়া হয়েছে সংগঠনের সদস্য পদের জন্য। মানববাবু বলেন আমাদের সংগঠনের সদস্যরা বার্ষিক চাঁদা দিয়ে থাকেন। কারণ সংগঠন চালাতে অনেক খরচ হয়। তাই মেম্বারশিপের জন্য ওই টাকা নেওয়া হয়েছে।
আলিপুরদুয়ার জেলা ট্যুরিজমের তরফে জানানো হয়েছে, আলিপুরদুয়ার জেলায় লেপচাখা থেকে শুরু করে টোটোপাড়া পর্যন্ত প্রায় ২০০ টি হোমস্টে রয়েছে। এই সমস্ত হোমস্টে মালিকদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পে ট্রেনিং দেওয়া হবে। এবং ট্রেনিং শেষে সকলকে একটি করে শংসাপত্র দেওয়া হবে। এই ট্রেনিং চলাকালীন হোমস্টে কর্মী, মালিকদের সমস্ত বিষয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
যদিও এডিটিএ-এর কোষাধ্যক্ষ গৌতম রায় জানিয়েছেন, এই টাকা হোমস্টে মালিকদের কাছ থেকে ট্রেনিং চলাকালীন থাকা খাওয়ার জন্য নেওয়া হয়েছে। আমাদের সদস্যপদের জন্য নেওয়া হয়নি। আমরা প্রশাসনের কাছে জিজ্ঞেস করেছিলাম ট্রেনিং চলাকালীন হোমস্টে মালিকদের থাকা, খাওয়া কি সরকার দেবে? কিন্তু প্রশাসন আমাদের জানিয়েছে, সরকার দেবে না। তাই আমরা তিনশ টাকা করে নিয়েছি সকলের থাকা, খাওয়া বাবদ।এছাড়াও উৎকর্ষ বাংলার কাজের জন্য আমাদের বিভিন্ন এলাকায় যেতে হয়েছে। সেই বাবদ আমাদের খরচ হয়েছে। সব মিলিয়ে এই টাকা নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনাকে ফোন করা হলে তার কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এমনিতেই করোনা কালে হোমস্টে মালিকদের আর্থিকভাবে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। তার মধ্যে বিনামূল্যে সরকারি ট্রেনিংয়ের জন্য বাড়তি ৩০০ টাকা করে দিতে বিপাকে পড়েছে হোমস্টে মালিকরা।