টানা দু'দিন বৃষ্টি বিরতিতে কিছুটা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিল উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। বিশেষ করে যেসব এলাকায় এখনও জল দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু সুসম বোধহয় এখনই আসছে না।
কারণ ইন্ডিয়ান মেটেরেলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের রবিবার উত্তরবঙ্গের জন্য রেড অ্যালার্ট জারি করেছে,হতে পারে অতি ভারী বৃষ্টি। সেই সঙ্গে নদীগুলিতে জলপ্লাবন হতে পারেন।
খবর মিলতেই নড়চড়ে বসেছে রাজ্য প্রশাসন। মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ বিশেষ বিপর্যয় মোকাবিলা দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) উত্তরবঙ্গের জন্য রেড অ্যালার্ট জারি করায় এবং এই এলাকার বেশিরভাগ নদীর অনেক অংশ প্লাবিত হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সোমবার বন্যা কবলিত উত্তরবঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। .
বিশেষ করে তিস্তা নদীতে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে সেচ দফতর। তিস্তা ব্যারাজ থেকে অব্যাহতভাবে অতিরিক্ত জল ছাড়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। যাতে তিস্তার দুপাশে জল বাড়ছে।
পাহাড়ে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় আগামী দিনগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে এখনই প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা না নিলে বিপদ বাড়তে বলে বলে মনে করছে প্রশাসন।
রবিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করেছেন, “আগামীকাল সোমবার আমার সেচ মন্ত্রীর অধীনে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সেচ ও কৃষি সচিবদের সহ উত্তরবঙ্গে বন্যাকবলিত একটি উচ্চ পর্যায়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল পাঠানো হচ্ছে।"
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে, নদীগুলি ফুলে উঠেছে, রাস্তাগুলি বিপর্যস্ত হয়েছে, সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে, মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডিএম এবং এসপিরা এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফের সহায়তায় যুদ্ধের ভিত্তিতে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ করছেন বলে মমতা জানিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, "আমি ব্যক্তিগতভাবে মনিটরিং করছি এবং আমার মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছি মাঠের পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক তদারকি করার জন্য। কোনো কষাকষি অবশিষ্ট থাকবে না।”
গত এক সপ্তাহ ধরে উত্তরবঙ্গের একাধিক এলাকা জলপ্লাবিত হয়ে রয়েছে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, মালদার বিস্তীর্ণ অংশ জলমগ্ন হয়েছে।
পাহাড়ে বিশেষ করে প্রতিবেশী ভুটান ও পড়শি রাজ্য সিকিমে প্রবল বৃষ্টিপাত হওয়ায় নদীগুলি ফুঁসছে। তিস্তা, বালাসন, মহানন্দা. করতোয়া, করলা, বুড়ি বালাসন, তোর্সা, শিলতোর্ষা, কালজানি, আত্রেয়ী সহ সব নদীই এখন জলে ভর্তি।
পাহাড়ের দুই জেলা কালিম্পং, দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন এলাকায় টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ের মাটি নরম হয়ে ধস নামা শুরু হয়েছে। প্রশাসনের তরফে সতর্ক করা হয়েছে পর্যটকদের। অযথা ঝুঁকি নিতে বারণ করা হয়েছে।
এর মাঝে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে পাঠানো এই টিম পৌঁছলে ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা কম হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সোমবারই টিম উত্তরবঙ্গের উপদ্রুত এলাকায় পৌঁছে যাবে বলে জানানো হয়েছে।