সপ্তাহের শুরুতেই রাজ্যে ভোলবদল হয়েছিল আবহাওয়ার। এরমধ্যেই হাওয়া অফিস বলছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সংলগ্ন বাংলাদেশ এলাকায় তৈরি হওয়া নিম্নচাপ আগামী ২৪ ঘন্টায় আরও সক্রিয় হবে এবং তা ধীরে ধীরে পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড এবং বিহারের ওপর দিয়ে যাবে।
আর এই নিম্নচাপের জেরে আগামী ৩-৪ দিন দক্ষিণবঙ্গে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে আবহাওয়া দফতরের (weather office) তরফে।
রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকাতেই নিম্নচাপের প্রভাব বেশি পড়বে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। আজ ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা হাওড়া, হুগলি কলকাতা, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ায়। অতিরিক্ত বৃষ্টি হতে পারে উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূমে। যার জেরে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদ জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনায় হলুদ সতর্কতা জারি রয়েছে।
বৃহস্পতিবারও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম এবং পূর্ব বর্ধমানে। অন্যদিকে অতিরিক্ত বৃষ্টি হতে পারে পুরুলিয়া বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমানে। যে কারণে কমলা সতর্কতা দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। অন্যদিকে পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, কলকাতা এবং মুর্শিদাবাদে ভারী বৃষ্টির সতর্কতায় হলুদ সতর্কতা দেওয়া হয়েছে।
আর শুক্রবার ভারী বৃষ্টি হতে পারে পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রামে। যেই কারণে হলুদ সতর্কতা দেওয়া হয়েছে।
হাওয়া অফিস বলছে বুধবার দার্জিলিং এবং কালিম্পং-এর কোনও কোনও জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বাকি জেলাগুলির কোথাও কোথাও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। পরবর্তী ২৪ ঘন্টা অর্থাৎ ২৯ জুলাই বৃহস্পতিবার সবকটি জেলারই কোথাও না কোথাও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে সোমবার থেকে দফায় দফায় বৃষ্টি চললেও বুধবার ভারী বৃষ্টিতে ভিজতে পারে কলকাতা। এদিনও কলকাতার আকাশ মেঘলা থাকবে। সেই সঙ্গে সকাল থেকেই শুরু হয়েছে দফায় দফায় বৃষ্টি। বুধবার শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৬.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের ১ ডিগ্রি কম, বলছে হাওয়া অফিস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এটাও স্বাভাবিকের ১ ডিগ্রি কম। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ সর্বোচ্চ ৯৭ শতাংশ ও সর্বনিম্ন ৮১ শতাংশ।
ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির জেরে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন নদীর জলস্তর বাড়তে পারে। যার জেরে বেশ কিছু এলাকা জনমগ্ন হয়ে পড়তে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়াও নিচু এলাকাগুলি প্লাবিত হতে পারে।
আগামী কয়েক দিন যেমন ভারী বৃষ্টি চলবে, তেমনি উত্তাল থাকবে সমুদ্রও। তাই মৎস্যজীবীদের উদ্দেশে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে আবহাওয়া দফতরের তরফ থেকে। জারি রয়েছে লাল সতর্কতাও। বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত সমুদ্রে মাছ ধরতে না যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যাঁরা ইতিমধ্যে সমুদ্রে গিয়েছেন, তাঁদের ২৮ জুলাই বিকেলের মধ্যে ফিরে আসতে বলা হয়েছে।