আগের থেকে দেড় গুণ শক্তি বাড়িয়ে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’, এই মুহূর্তে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। শেষ ছয় ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার বেগে এগিয়ে এসেছে ঘুর্ণিঝড়।
তবে ঝড়ের ‘অশনি’ সঙ্কেত থেকে আপাতত রেহাই পেতে চলেছে বঙ্গবাসী। এমনটাই জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। বাংলায় অশনির প্রভাব পড়বে না বলেই পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের।
হাওয়া অফিস বলছে, আগামী পাঁচ দিন আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে দক্ষিণবঙ্গে। সোম ও মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে মেঘলা আকাশ থাকবে। তবে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।
দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রার খুব একটা পরিবর্তন নেই, এখন যেমন স্বাভাবিকের থেকে ৩ -৪ ডিগ্রি বেশি রয়েছে সেরমই থাকবে।
উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র দার্জিলিং কালিম্পং জেলায় খুব হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, বাকি জেলায় সেরম বৃষ্টি হবে না। আবহাওয়া শুষ্কই থাকবে। তাপমাত্রারও বিশেষ পরিবর্তন হবে না।
দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় যে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছিল তা বিকালে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে চলেছে। এর ফলে ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার থাকবে হাওয়ার দাপট। প্রায় দেড় গুণ শক্তি বাড়িয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে ঘূর্ণিঝড়। এরপর মায়ানমারে প্রবেশ করবে তা।
আগামী ১২ ঘণ্টায় আরও শক্তি অর্জন করে ঘূর্ণিঝড় পরিণত হবে অতি গভীর নিম্নচাপে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ থেকে মায়ানমার উপকূলের দিকে যাবে। তারপর ২৩ মার্চ ভোররাতের দিকে মায়ানমার উপকূলের মধ্যে দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করবে।
ঘূর্ণিঝড় অশনির জেরে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোসাগরের উপকুলবর্তী এলাকায় ৫৫-৬৫ কিলোমিটার বেগে ঝোড়া হাওয়া বইতে থাকবে। কখনও কখনও ৭৫ কিলোমিটারে পৌঁছাতে পারে। সন্ধ্যা থেকে বাড়বে ঝড়ের গতিবেগ। হাওয়ার বেগ পৌঁছাতে পারে ৮৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়।
সোমবার আন্দামান সাগরে অতি গভীর নিম্নচাপটি শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’তে পরিণত হলেও তা উপকূলে আসার আগেই দুর্বল হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের ধারণা, শেষ পর্যন্ত সেটি গভীর বা সাধারণ নিম্নচাপে পরিণত হয়ে মায়ানমার উপকূল অতিক্রম করবে।
এর প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গে ঝড়-বৃষ্টি না হলেও আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে দুর্যোগ চলবে। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের উত্তর দিক দিয়ে বয়ে যাবে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’। তার জেরে বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে দ্বীপাঞ্চলে। আন্দামানের মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার জন্য সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের কোনও প্রভাব এরাজ্যে পড়বে না। ঘূর্ণিঝড় সরে গেলে বঙ্গোপসাগর থেকে বেশি মাত্রায় জলীয় বাষ্প দক্ষিণবঙ্গের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে। তখন দক্ষিণবঙ্গে কালবৈশাখীর সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে।