প্রশাসনিক অফিস যখন পার্টি অফিস! কাঠগড়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক ইদ্রিশ আলি (Idris Ali)। মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলায় ইদ্রিশের কীর্তি ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিতর্কের পাশাপাশি তীব্র নিন্দাও শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। অভিযোগ, খোদ ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার (BDO)-র চেয়ারে বসে পার্টি মিটিং সারলেন তৃণমূলের বিধায়ক। শুধু বিরোধী নয়, তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যেও এই ঘটনায় সমালোচনা শুরু হয়েছে।
BDO-র চেয়ারে বসে বিধায়ক
তৃণমূল বিধায়ক ইদ্রিশ আলির কিছু ছবি ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ভগবানগোলা বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক বিডিও অফিসে বিডিও-র চেয়ারে বসে দলের মিটিং করছেন। এখানেই শেষ নয়, প্রশাসনিক চেয়ার থেকেই দলীয় নির্দেশ দিচ্ছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে। রয়েছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতিও। মঙ্গলবার রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকের নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে বৈঠক করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে যোগ দেন ভগবানগোলার বিধায়ক ইদ্রিশ আলি ও প্রাক্তন বিধায়ক চাঁদ মহম্মদও। ছিলেন ব্লকের আরও ১০ জন নেতা। বৈঠকের যে ছবি ভাইরাল হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ভগবানগোলা ২ নম্বর ব্লকের বিডিওর অফিসে বিডিও-রই চেয়ারে বসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করছেন ইদ্রিশ আলি। উল্টো দিকে বসে প্রাক্তন বিধায়ক চাঁদ মহম্মদ ও অন্যান্য নেতারা। বিডিও ওয়ারশিদ খান তখন অফিস ছেড়ে বাইরে বসে রয়েছেন। কীভাবে দলীয় মিটিং প্রশাসনিক অফিসে হতে পারে, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স
জানা গিয়েছে, ইদ্রিশ আলির ওই ভাইরাল ছবিটি স্থানীয় এক তৃণমূল নেতাই পোস্ট করেন। দুপুরে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। যদিও ইদ্রিশের কথায়, 'অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স ছিল। বিডিও স্যরের অফিসে এসেছিলাম, কারণ ইন্টারনেটের সমস্যা হচ্ছিল বাড়িতে। আমি বিডিও-র ঘরে ঢুকতেই, তিনি তাঁর চেয়ার ছেড়ে দেন আমাকে। বসতে বলেন। তাই বসেছিলাম। আমি নিজের ইচ্ছেয় বিডিও স্যরের চেয়ারে বসেছিলাম, এই অভিযোগ মিথ্যে।'
'আমি জানতাম না, ওটা দলীয় কর্মসূচি ছিল'
অন্যদিকে বিডিও ওয়োরশিদ খান বলছেন, 'ওঁর (ইদ্রিশ আলি) বাড়িতে কিছু টেকনিক্যাল সমস্যা হচ্ছিল বলেই আমার অফিসে এসেছিলেন। আমি জানতাম না, যে এটা দলীয় কর্মসূচি ছিল। যাই হোক, বিধায়ক আমার চেয়ারে বসেননি। আমার চেয়ারটি পাশেই ছিল।'
ঘটনায় তৃণমূলকে নিশানা করেছেন মুর্শিদাবাদে বিজেপির জেলা সভাপতি। তাঁর কটাক্ষ, 'বেশির ভাগ প্রশাসনিক অফিসই তৃণমূলের পার্টি অফিসে পরিণত হয়েছে অনেক আগেই। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।' বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, যেখানে দলের সর্বোচ্চ নেত্রী প্রতিটি প্রশাসনিক বৈঠককে রাজনৈতিক মঞ্চে পরিণত করে ফেলেছেন। সরকারি মঞ্চে পরিণত করেছেন। সেই দলের নেতা-নেত্রীদের কাছে এই ধরনের কীর্তি আশ্চর্যের নয়।
আরও পড়ুন: 'দ্বিতীয়বার বললে জিভ কেটে নেওয়া হবে', বেলাগাম TMC বিধায়ক
আরও পড়ুন: পাঞ্জাবিতে লেখা 'কান'ট টাচ মি,' ED-CBI-কে চ্যালেঞ্জ TMC-র ইদ্রিশের