তৃণমূলে ফিরতে চাইলে হতে হবে 'শুদ্ধ'। বীরভূমে এমনই নিদান দিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। সাঁইথিয়ায় সেই পদ্ধতিতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে দল ছেড়ে যাওয়া কর্মীদের।
তৃণমূল কর্মী যাঁরা বিজেপিতে গিয়েছিলেন, ভোটের পর তাঁরা ফিরে আসতে চাইছেন। কিন্তু গ্রামের তৃণমূল স্তরের নেতারা অত সহজে তাঁদের 'ঘরে' ফিরতে দিতে নারাজ। তৃণমূল নেতারা অভিযোগ করছেন, এদের মিথ্যে প্রচার, সাম্প্রদায়িক উস্কানিতে ভোট ভাগাভাগি হয়েছে।
তাঁদের আরও দাবি, এই ক্ষতিকারক কর্মীদের দলে ফেরানো যাবে না। কিন্তু বিজেপি থেকে দলের পুরনো কর্মীরা ঘরে ফিরতে চাইলে কী করা যায়? তখন মন্ত্র হল 'শুদ্ধিকরণ'।
আরও পড়ুন: গঙ্গাবক্ষে বাতানুকূল নৌকা! শালিমার শিপইয়ার্ড ঘুরে জানালেন ফিরহাদ
বীরভূমের সাঁইথিয়ার বনগ্রামে বিজেপি কর্মীরা তাঁদের অপরাধ স্বীকার করে সকাল থেকে কখনও তৃঁমূল অফিস কখনও বিজেপি নেতাদের বাড়ির সামনে সদলে ধর্না দিচ্ছেন। বলছেন, তাঁদের ভুল হয়েছে।
তাঁরা আরও জানাচ্ছেন, বিজেপি নেতাদের উস্কানিতে ভুল কাজ করেছেন। তারা ভুল বুঝতে পেরেছেন। এবং সে জন্য ক্ষমা চাইছেন। কিন্তু ভোটে কার্যত হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করা তৃণমূল কর্মীদের মন গলে না। তখন তৃণমূল নেতারা তাঁদের প্রস্তাব দিলেন, এঁদের শাস্তি দেওয়া হোক এঁদের নিয়মেই।
বিজেপি ভোটের আগে তৃণমূলের ব্যবহার করা এলাকায় সভা করার আগে গোবর-গঙ্গাজল ছিটিয়ে শুদ্ধ করত। সেই পথেই বিজেপির দলছুট কর্মীদের গোবর গঙ্গাজল ছিটিয়ে শুদ্ধ করে ঘরে নিল তৃণমূল।
তাঁদের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয় আর কোনও দিন বিজেপি করবে কিনা? তাঁরা একযোগে জানান, না। এরপর গঙ্গাজল দিয়ে 'শুদ্ধ' করা হয় তাঁদের। তাঁদের গায়ে ছিঁটিয়ে দেওয়া হয় গঙ্গাজল।
বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। স্থানীয় স্তর হোক বা দলের শীর্ষ স্তর- সে সময় যেন ভাঙন অনিবার্য ঘটনা হয়ে গিয়েছিল। মনে করা হয়েছিল, তৃণমূলের শক্তি কমবে। আর শক্তিশালী হয়ে উঠবে বিজেপি।
তবে ভোটের ফলাফল সে কথা বলছে না। একুশের বিধানসভা ভোটে বড়সড় জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তারা ২০০-র বেশি আসন পেয়েছে। দল থেকে নেতা-কর্মী চলে গেলেও তা ভোটের ফলে কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি।