মেরি কম (Mary Kom) থেকে মীরাবাই চনু (Mirabai Chanu Saikhom), বার বার আন্তর্জাতিক স্তরে দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন এমন মানুষের সংখ্যা উত্তর-পূর্বের রাজ্গুলিতে প্রচুর। ফুটবল, তিরন্দাজি, বক্সিং, ওয়েট লিফ্টিং, হকি এমন কত খেলা রয়েছে যেখানে এখানকার ছেলে মেয়েরা দেশের গৌরব বাড়ান। কিন্তু পদক জিতলেই তাঁরা ভারতীয়। না হলে চিঙ্কি, চাইনিজ, নেপালি, এমনকী করোনা-র তকমা জোটে। এমনটাই মত মডেল অঙ্কিতা কোনওয়ারের (Ankita Konwar)।
অভিনেতা মডেল মিলিন্দ সোমনের (Milind Soman) স্ত্রী অঙ্কিতা নিজেও এ ধরনের নানা বৈষম্য এবং কটুক্তির শিকার হয়েছেন। অঙ্কির বক্তব্য কতটা সঠিক তা বিগত কয়েক দশকের সংবাদপত্রও বলে দেবে। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম, দেশের যে কোনও প্রান্তে 'সাত বোনের বাসিন্দাদের' নানা সময়ে কটুক্তি বৈষম্যে এবং শারীরিক হেনস্থার শিকার হতে হেয়েছে, বার বার। অঙ্কিতা একটি সোশাল পোস্টে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে লেখেন, 'যদি আপনি উত্তর-পূর্ব ভারতের বাসিন্দা হন, আপনি একমাত্র তখনই ভারতীয় হতে পারেন, যখন দেশের জন্য পদক জিতবেন। না হলে আপনাকে বলা হবে চিঙ্কি, চাইনিজ, নেপালি আর এখন নতুন নাম যুক্ত হয়েছে, করোনা। শুধুমাত্র জাতিগত বিভেদই নয়, ভারতের রক্ত-মজ্জায় গেঁথে রয়েছে বর্ণবিদ্বেষও। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।' এর সঙ্গে তিনি হ্যআশট্যাগ যোগ করেন, #hypocrites.
তাঁর সমর্থনে প্রচুর কমেন্ট করেছেন অনেক উত্তর পূর্বের মানুষ। প্রত্যেকেই জানিয়েছেন, দেশের বহু প্রান্ত পড়াশোনা, চাকরি বা অন্যান্য কাজের জন্য গিয়ে তাঁরা কী ভাবে হেনস্থার শিকার হয়েছেন। তাঁদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা তুলেছেন অনেকে। একই সঙ্গে সেই মানুষদের প্রতি সমবেদনাও জানিয়েছেন অনেকে।
সদ্য অলিম্পিকে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে মণিপুরের ইম্ফলের মীরাবাই চনু (Mirabai Chanu Saikhom)। উত্তর-পূর্ব ভারতের এই বাসিন্দার জয়ে অভিভূত গোটা দেশ। কিন্তু অঙ্কিতা মনে করেন, চনুর সাফল্যে খুশি হওয়া সকলের হিপোক্রেসির নামান্তর। কারণ মূল স্রোতে উত্তর পূর্বের বাসিন্দাদের স্বাভাবিক চলন সকলে মেনে নিতে পারেন না। সেই অংশের এক নাগরিক যখন বিশ্ব মঞ্চে সম্মান এনে দেন, তখন প্রকাশ্যে প্রশংসা করে পরোক্ষে আবার ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের কটাক্ষ করা দুমুখো আচরণ বলে মনে হয়েছে অঙ্কিতার।