scorecardresearch
 

Exclusive Rupankar Bagchi: 'সলিল চৌধুরী মায়েস্ত্রো, তাঁর কম্পোজিশন যুগোত্তীর্ণ'

আগামী কাল ১৯ নভেম্বর গীতিকার সুরকার সলিল চৌধুরীর ৯৮তম জন্মতিথি। তাঁকে স্মরণ করে বাংলার অন্যতম ব্যস্ত সঙ্গীত শিল্পী রূপঙ্কর বাগচী আকাশ ৮ চ্যানেলে অনুষ্ঠান করবেন ২০ নভেম্বর। সঙ্গীত জীবনের জার্নি থেকে মায়েস্ত্রো সম্পর্কে তিনি কী মনে করেন, এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে অকপটে বললেন আজতক বাংলাকে। কথোপকথনে রজত কর্মকার।

Advertisement
রূপঙ্কর বাগচী রূপঙ্কর বাগচী
হাইলাইটস
  • ১৯ নভেম্বর গীতিকার সুরকার সলিল চৌধুরীর ৯৮তম জন্মতিথি।
  • সঙ্গীত জীবনের জার্নি থেকে মায়েস্ত্রো সম্পর্কে তিনি কী মনে করেন, এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে অকপটে বললেন আজতক বাংলাকে।

আগামী কাল ১৯ নভেম্বর গীতিকার সুরকার সলিল চৌধুরীর ৯৮তম জন্মতিথি। তাঁকে স্মরণ করে বাংলার অন্যতম ব্যস্ত সঙ্গীত শিল্পী রূপঙ্কর বাগচী আকাশ ৮ চ্যানেলে অনুষ্ঠান করবেন ২০ নভেম্বর। সঙ্গীত জীবনের জার্নি থেকে মায়েস্ত্রো সম্পর্কে তিনি কী মনে করেন, এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে অকপটে বললেন আজতক বাংলাকে। কথোপকথনে রজত কর্মকার।

 

প্রশ্ন: আপনি গত ২-৩ দশক ধরে পেশাদার গানের জগতে রয়েছেন। সে সময়ের সঙ্গে আজকে কতটা পরিবর্তন দেখতে পান?

রূপঙ্কর: খুব স্বাভাবিক একটা জার্নি। প্রিমিটিভ বাঁদুরে অবস্থা থেকে যে ভাবে মানুষ হয়েছে অনেকটা তেমনই। প্রতিনিয়ত আপগ্রেড হয়েছে, নিজেকে আপডেট করতে হয়েছে। কোনও কোনও অসুবিধাও হয়েছে। এ মুহূর্তে যেমন অনেকর যেমন ডিজিটাল জগতের সঙ্গে তাল মেলাতে অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু নিজেকে আপগ্রেড না করলে সেই প্রিমিটিভ আদিম মানুষ হিসাবেই থেকে যেতে হবে। সেটা তো সম্ভব নয়। আপনাকে মানসিকতার দিক থেকে প্রোগ্রেস করতে হবে। চিন্তা ভাবনায় এগোতে হবে। এটাই একমাত্র রাস্তা। হ্যাঁ, সব কিছুর একটি পজিটিভ এবং নেগেটিভ থাকে। সেখান থেকে পজিটিভ জিনিসগুলো নিতে হবে। নেগেটিভ পয়েন্ট ভুলে যেতে হবে। না হলে তো আপনি পৃথিবীর সঙ্গে কোপ-আপ করতে পারবেন না।


প্রশ্ন: এখনকার অনেক শিল্পী ভালো ভালো কাজ করছেন। কিন্তু তাঁদের কাজ সে ভাবে প্রচারের আলোয় আসছে না। আগে একটা বড় মাধ্যম ছিল রেডিও। আপনাদের গান প্রতিনিয়ত শোনা যেত। এখন সেই সিনারিও অনেক পাল্টে গিয়েছে। এর কারণ কী বলে মনে করেন?

রূপঙ্কর: জানি না। তবে রেডিও গান বাজা খুব প্রয়োজন বলে মনে করি। রেডিও বাজার ফলে আমাদের বহু গান হিট করেছে। শুধু আমাদের কেন, অনেকেরই বহু গান হিট করেছে। রেডিওতে গান বাজে না তার কারণ আমি খবর নিয়ে জেনেছি দিল্লি বা মুম্বইতে বসে বড় বাবুরা ভাবেন বাংলা বাজানোর প্রয়োজনীয়তা নেই। তারা ভাবেন বাংলা গানের কোনও শ্রোতা নেই, বাংলা গান রেভেনিউ জেনারেট করতে পারে না। খুবই দুঃখজনক। কিন্তু রেডিওতে গান বাজানো খুব প্রয়োজন।

Advertisement


প্রশ্ন: কয়েকজন প্রতিযোগীকে বাদ দিলে রিয়েলিটির শো কি সত্যিই প্রতিভা খুঁজতে সাহায্য করছে?

রূপঙ্কর: হ্যাঁ নিশ্চয়ই। শ্রেয়া, অরিজিৎ, সুনিধি সব রিয়েলিটি শো-এর ফসল। রিয়েলিটি শো থেকে জনপ্রিয়তা পেয়ে অনুষ্ঠান করে রোজগার করছেন অসংখ্য শিল্পী। এতে খারাপ তো কিছুই দেখছি না। এর মধ্যে কোনও সমস্যা আছে বলে মনে হয় না। মনে করি না রিয়েলিটি শো গানের কোনও রকম ক্ষতি করছে।


প্রশ্ন: ঠিক ক্ষতির প্রসঙ্গে বলছি না। বলতে চাইছি অনেকেই হারিয়ে যাচ্ছেন। এর কারণ কী বলে মনে হয় আপনার?

রূপঙ্কর: হারিয়ে যআচ্ছেন এটা তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। হারিয়ে যআচ্ছএন কারণ রিয়েলিটি শো-এর পর আসল লড়াই শুরু হয়। সেখানে যিনি টিকে থাকবেন তিনিই শেষ পর্যন্ত থেকে যাবেন। যিনি পারবেন না তিনি হারিয়ে যাবেন। এখানে তো কেউ কাউকে জায়গা ছেড়ে দেন না। প্রতিভার জোরে জায়গা করে নিতে হয়।


প্রশ্ন: জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার অনুভূতি কেমন ছিল?

রূপঙ্কর: অসাধারণ অনুভূতি ছিল। প্রণববাবুর হাত থেকে জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার, এর চেয়ে বড় আর কী হতে পারে। সেই ঘটনা আমায় সমৃদ্ধ করেছে। পরবর্তীতে আরও ভালো কাজ করার জন্য উৎসাহিত করেছে। উদ্বুদ্ধ করেছে।


প্রশ্ন: আপনাকে একবার টিভিতে বলতে শুনেছিলাম, জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর নাকি আপনার কাজ পাওয়া কমে গিয়েছিল?

রূপঙ্কর: (খানিকটা হেসে) ওটা আমি নেহাতই মজা করে বলেছিলাম। কিছুই কাজ বাড়েনি সে কারণে বলেছিল। পুরস্কার পাওয়ার পর প্রোফেশনালি আলাদা করে কিছু হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। হওয়ার কথাও নয়। এটা একটা পুরস্কার। রাষ্ট্রের তরফ থেকে পাওয়া। তার সঙ্গে কাজ পাওয়ার সম্পর্ক নেই বলে মনে করি। ভালো কাজের স্বীকৃতি পেলে ভালো লাগে। ওটা স্রেফ মজা করে বলেছিলাম।


প্রশ্ন: আগামী কাল সলিল চৌধুরীর জন্মদিন। আপনার অনুষ্ঠানও তাঁকে নিয়েই। যদি কয়েকটি কথায় সলিল চৌধুরীকে বর্ণনা করতে হয়, তবে তাঁর সম্পর্কে কী বলবেন?

রূপঙ্কর: একটি কথাই বলব, উনি মায়েস্ত্রো। ওনার গান নার কম্পোজিশন যুগোত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। ওনার অ্যারেঞ্জমেন্টের কথাও অবশ্যই বলতে হয়। উনি একজন সম্পূর্ণ মিউজিশিয়ান। উনি সম্পূর্ণটা জেনে সঙ্গীতকে নিজের মধ্যে আত্মস্থ করেছেন। কে কোনটা গাইবেন, কী ভাবে গাইবেন, সে সমস্ত সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান এবং ভালোবাসা নিয়ে সারা জীবন কাজ করে গিয়েছেন। উনি একজন কমপ্লিট সঙ্গীতজ্ঞ। যাঁরা হয়তো এক যুগে একজনই আসেন। 


প্রশ্ন: সলিল চৌধুরীর প্রসঙ্গ যখন আসে তখন গণসঙ্গীতের কথা আসবে। আপনি কি কখনও গণসঙ্গীত গাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন? কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতা?

রূপঙ্কর: আমাদের একটি থিয়েটার দল রয়েছে কৃষ্টি পটুয়া বলে। সেই দলের একটি নাটক জেহাদ-এ আমরা তাঁর গণসঙ্গীত ব্যবহার করেছি। আগামী অনুষ্ঠানেও আমি বেশ কয়েকটি গণসঙ্গীত গাইব। অভিজ্ঞতার কথা যদি বলেন তবে বলব, নাটকের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে এই গান ব্যবহৃত হয়েছে। দর্শকরা খুব বাহবা দিয়েছেন। আমাদেরও ব্যবহার করে খুব ভালো লেগেছে।


প্রশ্ন: তাঁর সুর করা গান যদি আপনি গাওয়ার সুযোগ পান, কোন পাঁচটি গান গাইতে চাইবেন?

রূপঙ্কর: সেই পাঁচটি গান হবে ঢেউ উঠছে কারা টুটছে, পথে এবার নামো সাথী, ও মোর ময়না গো, টুটে হুয়ে খোয়াবো মেঁ আর দিল তড়প তড়পকে ক্যাহ রাহা হ্যায়। এমন বহু গান গান যা আমার হৃদয়ের খুব কাছের তা বলা গেল না। আসলে এ ভাবে আলাদা করে ৫টি গান বেছে নেওয়া খুব শক্ত।

Advertisement

 

Advertisement