দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ (Corona Second Wave) এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত। প্রতিদিনই কমছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। দেশের অন্যান্য রাজ্যের পাশাপাশি একই ছবি পশ্চিমবঙ্গেও। কিন্তু করোনার দাপট কিছুটা কমলেও আতঙ্ক বাড়িয়েছে ফাঙ্গাস। যেমন ব্ল্যাক ফাঙ্গাস, হোয়াইট ফাঙ্গাস বা গ্রিন ফাঙ্গাস। ইতিমধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের কারণে মৃত্যুও হয়েছে বেশকয়েকজনের। এমনকী এরাজ্যেও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের বলি হয়েছেন কয়েকজন মানুষ। এখনও পর্যন্ত যাঁরা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের শিকার হয়েছেন তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর সেখান থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর কি ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা অন্যান্য ছত্রাকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়?
এই প্রসঙ্গে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, শুধু ফাঙ্গাস নয়, কোভিডের (Covid 19) পরে আরও অনেক রোগেই আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ভাইরোলজিস্ট অভিতাভ নন্দীর কথায়, কোভিডের পর এমন অনেক রোগ হচ্ছে যা সাধারণ সময় মানুষের হয় না। এমনকী সেগুলি থেকে সেরে উঠতেও দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে বলে জানান তিনি। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলে, সাধারণত কারও চিকুনগুনিয়া হলে ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে সেরে যায়। কিন্তু কোভিডের পরে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন এমন অনেক রোগীরই সেরে উঠতে প্রায় দেড় থেকে দুমাস লেগে যাচ্ছে। এছাড়াও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর ডেঙ্গি, বিভিন্ন চর্ম রোগ, নিউমোনিয়া বা ফুসফুস সংক্রান্ত অন্যান্য রোগেও আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায় বলে জানান অমিতাভবাবু।
কিন্তু কেন এমনটা হচ্ছে? অমিতাভ নন্দী জানাচ্ছেন, এর প্রধান কারণই হল দেহের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (Immunity System) ভেঙে পড়া। আর সেই ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে একদিকে যেমন মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে শুরু করেন, অন্যদিকে রোগীর শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করাও বন্ধ করে দেয়। কারণ দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অ্যান্টিবায়োটিকের কাজে সহায়তা করে। কিন্তু সেটা নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে অ্যান্টিবায়োটকিকে আর সাহায্য করতে পারে না। ফলে একসময় রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।