scorecardresearch
 

কতটা উদ্বেগজনক রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি? একনজরে ১০ পয়েন্ট

করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে সম্প্রতি দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। বাড়ছে মৃত্যুও। গত ১০ দিনে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি সবথেকে উদ্বেগজনক। একনজরে দেখুন সেই ছবি...

Advertisement
West Bengal West Bengal
হাইলাইটস
  • পশ্চিমবঙ্গে হু হু করে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ
  • করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য দায়ী কী?
  • নির্বাচন কমিশন কী উদ্যোগ নিতে চলেছে?

গোটা দেশের সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে সম্প্রতি দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। বাড়ছে মৃত্যুও। গত ১০ দিনে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি সবথেকে উদ্বেগজনক। ফলে চিন্তা বাড়ছে সাধারণ মানুষের। এখন রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি কেমন? দেখে নেব একনজরে- 

 বাড়ছে সংক্রমণ ও টিকার অভাব  

দেশের সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যেও গত মার্চ মাস থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। বিগত ১০ দিনে তা চরমে পৌঁছায়। আজ, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রকাশিত তথ্য় অনুযায়ী, দেশে গতকাল করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ছাড়িয়েছে। রাজ্যে গতকাল আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৬ হাজার জন। মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের। যা এক রেকর্ড। 

এরই মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে টিকার অপর্যাপ্ততার কারণে। রাজ্য়ের বিভিন্ন হাসপাতালে করোনার টিকা পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। অনেকেই টিকা নিতে গিয়েও পাননি। ঘুরে এসেছেন। 

করোনায় কংগ্রেস প্রার্থীর মৃত্যু 

করোনা আক্রান্ত হয়ে আজ সকালে মারা যান সামসেরগঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থী রেজাউল হক বিশ্বাস। চলতি মাসের ২৬ তারিখ ওই কেন্দ্রে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। ওই প্রার্থীর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।  

গত ১০ দিনের ছবি 

চলতি মাসের ৫ তারিখ রাজ্যে করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৯৬১। মৃত্যু হয়েছিল ৪ জনের। ৬ তারিখ আক্রান্ত হয়েছিলেন ২০৫৮ জন, মৃত্যু হয়েছিল ৭ জনের। ৭ তারিখ আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যথাক্রমে ২৩৯০ ও ৭। ৮ তারিখ মৃত্যু হয় ৮ জনের, আক্রান্ত ২৭৮৩ জন। ৯ তারিখ মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৮ ও ৩৬৪৮। ১০ তারিখ আক্রান্ত ৪০৪৩ জন, মৃত্যু হয় ১২ জনের। ১১ তারিখ আক্রান্ত হন ৪৩৯৮ জন, মারা যান ১০ জন। ১২ তারিখ আক্রান্তের সংখ্য়া সাড়ে ৪ হাজার ছাড়িয়ে যায়। আক্রান্ত হন ৪৫১১। মারা যান ১৪ জন। ১৩ তারিখ প্রায় ৫ হাজারের কাছাকাছি মানুষ আক্রান্ত হন। একলাফে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২০। তবে সব রেকর্ড ভেঙে দেয় গতকালের সংখ্যা। আক্রান্ত হন ৫৮৯২ জন। মৃত্যু হয়, ২৪ জনের। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে গত ১০ দিনে রাজ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৩ গুণ।  

Advertisement
Corona
করোনা বিধি না মেনেই চলছে রাজনৈতিক দলের প্রচার-সভা

আরও পড়ুন: হাইকোর্টের নির্দেশিকাই সার, কোভিড বিধি মানছেন না নেতারা

রাজ্যের কোথায় কেমন পরিস্থিতি 

কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যা সবথেকে বেশি। এখানে দৈনিক সংক্রমণ রেকর্ড গড়ে চলেছে। তারপর রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। এছাড়াও হাওড়া, হুগলি ও বীরভূমে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। কলকাতায় গতকাল আক্রান্ত হয়েছেন ১৬০১ জন। বাকি ৪টি জেলায় যথাক্রমে- ১২৭৭, ৩৩০ ও ২৮৯, ৩২৯ জন। গতকালকের বাকি জেলার পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যাবে কোথায় কী অবস্থা। দার্জিলিং- ১০৯, জলপাইগুড়ি- ৯৮, উত্তর দিনাজপুর ৮০, দক্ষিণ দিনাজপুর ৪০, মালদা -২৪৯, মুর্শিদাবাদ- ১৭০, নদিয়া ১৬৮, পুরুলিয়া- ১২৫, বাঁকুড়া- ৪৯, পশ্চিম মেদিনীপুর-৮১, পূর্ব মেদিনীপুর-৮৫, পূর্ব বর্ধমান-১৬২, পশ্চিম বর্ধমান-২৫৩।

কোন বয়সকে টার্গেট করছে করোনা? 

রাজ্য সরকারের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, করোনায় সবথেকে বেশি মৃত্যু হচ্ছে ৭৫-বছরের বেশি বয়স্কদের। গতকাল, স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, মৃতদের মধ্যে ১০ শতাংশেরও বেশি জনের বয়স ৭৫-এর বেশি। মৃত্যুর হার সবথেকে কম শিশুদের। করোনায় মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মৃত্যুর হার বেশি। 

করোনার সংক্রমণের জন্য দায়ী কী? 

চিকিৎসকদের মতে, করোনার দ্বিতীয় ওয়েব এই সংক্রমণের জন্য দায়ী। তবে রাজ্যে তা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ভোটের কারণে। নির্বাচনের জন্য জায়গায় প্রচার-সভা চলছে। রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, কাউকেই খুব একটা করোনা বিধি মানতে দেখা যাচ্ছে না। ফলে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। 

kolkata
কলকাতার বাজারগুলিতেও ভিড়, দেখা যাচ্ছে না কোভিড সতর্কতা

হাইকোর্টের নির্দেশ 

করোনার সংক্রমণ আটকাতে ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্ট কড়া পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছে। প্রধানবিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, প্রার্থীদের করোনা বিধি মানতেই হবে। পরতে হবে মাস্ক। তবে বেশিরভাগ প্রার্থীকেই করোনা বিধি মানতে দেখা যাচ্ছে না। 

 আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত সামসেরগঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থী

শুক্রে নির্বাচন কমিশনের জরুরি বৈঠক 

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ভোট কীভাবে করা যাবে তাই নিয়ে কাল সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছে নির্বাচন কমিশন। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, বাকি ৪ দফার ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় কোনও রদবদল করা যায় কি না তা আলোচনা হতে পারে ওই বৈঠকে। কমিশনের তরফে রাজ্যের ১০টি দলকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। 

পরীক্ষা বাতিল 

করোনার সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে সিবিএসই-র দ্বাদশ ও দশম শ্রেণির পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন, রাজ্যের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।  

Corona
করোনার জন্য বাতিল হয়েছে পরীক্ষা

মমতার তোপ ও বামেদের উদ্যোগ 

করোনার বাড়বাড়ন্তের জন্য BJP-কে দায়ী করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বহিরাগতরা বাংলায় ভোট প্রচারে আসছেন বলে করোনা বাড়ছে বলে দাবি তাঁর। যদিও গেরুয়া শিবিরের তরফে এই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের পাল্টা দাবি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েও করোনা নিয়ন্ত্রণে কোনও পদক্ষেপ করেননি তিনি। 

Advertisement

এদিকে করোনার কথা মাথায় রেখে বামেদের তরফে বড় প্রচার সভা বাতিলের ঘোষণা করা হয়েছে। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে অনেকেই। 

 

Advertisement