লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে অর্থাৎ ১৬ মার্চ থেকে আচরণবিধি কার্যকর হয়ে গিয়েছে। পুলিশ, আয়কর বিভাগ বিশেষভাবে সতর্ক থাকবে যাতে কোনও ব্যক্তি অতিরিক্ত টাকা বা মাদক দ্রব্য নিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে জেতে না পারে। কারণ এগুলি যা ভোটারদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারে। এ ধরনের কিছু ধরা পড়লে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নেবে। রাজনৈতিক দলগুলোর উপর এই নিষেধাজ্ঞা থাকলেও নির্বাচনের সময় সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে কী কী নিষেধাজ্ঞা রয়েছে? টাকা বা মূল্যবান গয়নার ব্যাপারে এই সময় আরও সতর্ক হওয়া প্র্যজন।
সাধারণ মানুষ নগদ কত টাকা কাছে রাখতে পারবেন?
আচরণবিধি সাধারণ মানুষকেও প্রভাবিত করে। অনেক সময় এমনও হতে পারে যে কোনো রাজনৈতিক দল সাধারণ মানুষদের মাধ্যমে অবৈধ কাজ করতে পারে। এমন ঘটনা বন্ধ করতে, নির্বাচন কমিশন নাগরিকদের জন্যও নিয়ম তৈরি করেছে। আপনার এবং আমার মতো সাধারণ মানুষ একবারে ৫০ হাজার টাকার বেশি নগদ বহন করতে পারে না। এর চেয়ে বেশি নগদ টাকা থাকলে তার নথি থাকতেই হবে। অর্থের বৈধ উৎস কিনা তা যাচাই করা হবে। পরিচয়পত্র এবং টাকা কোথায় ব্যয় করা হচ্ছে তার মতো নথি থাকাও গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও ১০ হাজার টাকার বেশি মূল্যের কোনও দ্রব্য নিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও নথি প্রয়োজনীয়।
টাকা কী ভাবে ফেরত পাবেন?
কেউ কাগজপত্র দিতে না পারলে টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর এবং পর্যাপ্ত প্রমাণ দেওয়ার পরই সেই টাকা তাদের ফেরত দেওয়া হবে। যদি টাকার পরিমাণ ১০ লক্ষ টাকার বেশি হয় তবে বিষয়টি সরাসরি আয়কর বিভাগ দেখবে। এর মধ্যে আরও একটি বিষয় আছে। অনেক সময় আপতকালীন পরিস্থিতিতে ১০ লক্ষের বেশি টাকা নিয়ে কোনও ব্যক্তি যদি ধরা পড়েন তা হলে তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে নথি দেখাতে হয়। অনেকক্ষেত্রে হাসপাতালে কোনও নিকট আত্মীয় ভর্তি থাকলে এই বিপুল পরিমান টাকা লাগতে পারে। আবার এর মাঝে বিয়ের অনুষ্ঠান থাকলেও তা লাগতে পারে। তবে সমস্ত ক্ষেত্রেই কাগজপত্র সঙ্গে রাখবেন। সে ক্ষেত্রে তাকে আটক করা হয় না, তবে বিষয়টি অবশ্যই আয়কর দফতরের নজরে আনা হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষেত্রে যা হয়
নির্বাচনের সময় যে বিপুল নগদ টাকা, মদ, মাদক বা জামাকাপড় ও গহনা উদ্ধার করা হয় তা হলে তা কালো টাকা হিসেবে গণ্য করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ব্যয়ের সীমা নির্ধারণ করেছে কমিশন। প্রায়শই দলগুলি সহ প্রার্থীরা জিততে এর চেয়ে অনেক বেশি অর্থ ব্যয় করে। এর কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয় না, বরং যা হয় প্রার্থী গোপনে তাঁর নির্বাচনী এলাকায় কালো টাকা বিতরণ শুরু করেন। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও বিষয়টি জানেন। এ কারণেই নির্বাচন ঘোষণার পর নজরদারি কঠোর হয়ে যায়।