scorecardresearch
 

Left Congress Brigade Rally: বাম-কংগ্রেসের বিগ্রেডে 'হিরো' আব্বাস, বক্তব্য থামিয়ে বিরক্ত অধীর

বিজেপি ও তৃণমূলকে তখন তুলোধনা করছেন অধীর। হঠাৎ বিগ্রেড জুড়ে কোলাহল। সেই শব্দে বক্তব্যে তাল কাটল অধীরের। বাম নেতৃত্ব তখন সেকুলার ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাতা আব্বাস সিদ্দিকেক মঞ্চে স্বাগত জানাতে ব্যস্ত। এভাবে অধীরকে থেমে যেতে দেখে পরিস্থিতি আঁচ করে নিয়ে এগিয়ে গেলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। তিনিই ফের বক্তব্য রাখতে বললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে। এরপর ধাকস্থ হয়ে ফের মাইকে বলতে শুরু করলেন অধীর। চেয়ার বসে আব্বাস তখন জনতাকে শান্ত হতে বলছেন। এই ছবিই স্পষ্ট করে দিয়েছে ব্রিগেডের মূল সুর।

Advertisement
আব্বাসের জন্য  বক্তব্য থামাতে হল হতচকিত অধীরকেও আব্বাসের জন্য বক্তব্য থামাতে হল হতচকিত অধীরকেও
হাইলাইটস
  • ব্রিগেডের মঞ্চে তখন উঠছেন আব্বাস
  • মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত কোলাহলে থামতে হল অধীরকে
  • এভাবে মাঝপথে তাল কটায় স্বভাবতই বিরক্ত হন প্রদেশ সভাপতি

বাম-কংগ্রেসের ডাকা ব্রিগেডে পুরো হাইলাইটই যেন কেড়ে নিলেন  ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাতা আব্বাস সিদ্দিকি। শনিবার রাতেই মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে গেছিল ব্রিগেড সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন আব্বাস। রবিবার সকাল থেকেই গোটা শহর যেন ছিল ব্রেগডমুখী। লাল পতাকায় ছেয়ে গিয়েছিল তিলোত্তমা। বাম-কংগ্রেসের ব্রিগেডে ভিড় দেখে চিন্তা বাড়তে বাধ্য তৃণমূল ও বিজেপিও।  যারা বলতেন বামেরা এই রাজ্যে আণুবীক্ষণিক হয়ে গেছে, সেই বামেদের ব্রিগেডের ভিড় এবার সত্যি ভাবাচ্ছে তৃণমূলকে। যা দেখে সভার শুরুতে নিজের উচ্ছাস চেপে রাখতে পারেননি খোদ বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে মানুষের উচ্ছাসে হঠাৎ করেই থামতে হয়েছিল বিমানকে। শোনা গিয়েছিল মঞ্চে উঠে গিয়েছেন  সেকুলার ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাতা আব্বাস সিদ্দিকি। মাঠ  জুড়ে উচ্ছাস বুঝিয়ে দিচ্ছিল এই ব্রিগেডে আসল শাহেনশা আব্বাসই। চমক তখনও অবশ্য বাকি ছিল। মঞ্চে তখন বক্তব্য রাখছেন কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। মাঠ জুড়ে ফের জোর চিৎকার। জনতার উৎসাহ বুঝিয়ে দিচ্ছে বঙ্গভোটের ময়দানে এসে পড়েছেন 'ভাইজান'। সেই উচ্ছাসের স্রোতে বক্তব্য থামাতে হল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকেও। হঠাৎ করে এমন বাধায় তখন যথেষ্টই বিব্রত প্রদেশ সভাপতি। পরিস্থিতি সামলাতে এগিয়ে গেলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। আব্বাসকে মঞ্চে স্বাগত জানালেও এমন পরিস্থিতির জন্য যে তিনি মোটেই তৈরি ছিলেন না তা স্পষ্ট তখন বোঝা যাচ্ছে অধীরের হাবে-ভাবে। এরপর বিমানের অনুরোধে ফের বক্তব্য রাখতে শুরু করেন অধীর। আর হাত নেড়ে সকলকে শান্ত হতে বলেন আব্বাস।

হঠাৎ থামলেন অধীর
বিজেপি ও তৃণমূলকে তখন তুলোধনা করছেন অধীর। হঠাৎ বিগ্রেড জুড়ে কোলাহল। সেই শব্দে বক্তব্যে তাল কাটল অধীরের। বাম নেতৃত্ব তখন  সেকুলার ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাতা আব্বাস সিদ্দিকিকে মঞ্চে স্বাগত জানাতে ব্যস্ত। এভাবে অধীরকে থেমে যেতে দেখে পরিস্থিতি আঁচ করে নিয়ে এগিয়ে গেলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। তিনিই ফের বক্তব্য রাখতে বললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে। এরপর ধাতস্থ হয়ে ফের মাইকে বলতে শুরু করলেন অধীর। চেয়ার বসে আব্বাস তখন জনতাকে শান্ত হতে বলছেন।

Advertisement

আব্বাসের বার্তা কংগ্রেসকে
বারবার নিজের বক্তব্যে বাম নেতৃত্বর কথা বললেও কংগ্রেসকে নিয়ে চুপ ছিলেন আব্বাস। নিজের বক্তব্যের শেষে অবশ্য অধীরের দলকেও বার্তা দিতে ভুললেন না বঙ্গ রাজনীতির নতুন ভাইজান। তাঁর সঙ্গ জোট নিয়ে কংগ্রেসের দূরত্ব তৈরি হয়েছে এমন একটা কথা শোনা যাচ্ছিল। তার জবাবেই কংগ্রেসকে বার্তা আব্বাসের,  "অংশীদারিত্ব চাই, যদি কেউ মনে করে বন্ধুত্বের হাত বাড়াবেন, তাহলে তাঁকে স্বাগত।" এভাবেই আব্বাস সিদ্দিকি বুঝিয়ে দিলেন তিনি জোটের রাজনীতিতে কংগ্রেসের দিকেও বন্ধুত্বের হাত বাড়াতে রাজি রয়েছেন।

আসন সমঝোতা কাঁটা? 
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বামদের সঙ্গে তিরিশটি আসনে সমঝোতা হয়েছে, এনটাই দাবি করেছেন আব্বাস সিদ্দিকি। নিজের বক্তব্যে বারবার সেলিম, সূর্যকান্ত, বিমান বসুদের নাম নিয়ে আব্বাস বুঝিয়ে দিয়েছেন বামেদের সঙ্গে জোটে যেতে তিনি কতটা আগ্রহী।  ব্রিগেডে যৌথ সমাবেশের আগের রাতেও অধরাই থেকেছ জোটের চূড়ান্ত ফয়সালা। ব্রিগেড-পর্ব মিটিয়ে  সোমবার ফের আলোচনায় বসতে পারেন সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। তবে আসন-রফার ছবি পুরোপুরি স্পষ্ট না হলেও বাম, কংগ্রেস এবং আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টকে (আইএসএফ) নিয়ে এ বারের বিরোধী জোট ‘সংযুক্ত মোর্চা’ নামে বিধানসভা ভোটের ময়দানে নামতে পারে। তিন পক্ষের মধ্যে এই মর্মে মোটামুটি সহমত তৈরি হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ভোটের প্রচারে ‘বামফ্রন্ট সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী’ বা ‘কংগ্রেস সমর্থিত বামফ্রন্টের প্রার্থী’ না লিখে ‘সংযু্ক্ত মোর্চা’র নাম ব্যবহার করা হবে। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে গিয়ে শনিবার বিকালে সিপিএম নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে কংগ্রেস নেতারা। সেই দলে ছিলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী ও নেপাল মাহাতোরা। সূত্রের খবর, কংগ্রেস দাবি করেছে আইএসএফ-কে তারা যত আসন ছাড়বে, সেই সংখ্যক কেন্দ্র তাদের পুষিয়ে দিতে হবে বামেদের। আইএসএফ-কে ইতিমধ্যেই ৩০টি আসন দেওয়ার কখা বলেছে সিপিএম। তাই আসন সমঝোতা নিয়ে অধীরের সঙ্গে সিদ্দিকির একটা ঠাণ্ডা লড়াই চলছে। ব্রিগেডের ময়দানে বক্তব্য শেষে সেই অধীরকেই বার্তা দিয়ে গেলেন আব্বাস। বুঝিয়ে গেলেন এবারের ভোটে তিনিই হতে চলেছেন বঙ্গভোটের অন্যতম ট্রাম্পকার্ড। 


 

Advertisement