শুশুনিয়া (Susunia) পাহাড়ের নাম শুনেছেন তো? পর্যটকদের কাছে বাঁকুড়া (Bankura) জেলার পর্যটন মানচিত্রের অন্যতম গন্তব্য। যাঁরা পাহাড়ে চড়তে বা অ্যাডভেঞ্চার ভালবাসেন তাঁদের কাছে শুশুনিয়া বিশেষ পছন্দের। সেক্ষেত্রে বাঁকুড়া বেড়াতে গিয়ে শুশুনিয়ায় যাবেন না এমন মানুষ মনে হয় পাওয়াই যাবে না। কিন্তু আরও একটি কারণে বিখ্যাত এই শুশুনিয়া। তা হল এখানকার পাথর শিল্প। আরও একটু পরিস্কার করে বললে বলতে হয়, এখানে পাথর কেটে বা খোদাই করে নানান সামগ্রী তৈরি করেন শিল্পীরা। তার মধ্যে যেমন রয়েছে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি, তেমনই রয়েছে পাথরের বাসনপত্রও। জেলার বহু শিল্পী যুক্ত এই কাজের সঙ্গে। শুশুনিয়ার সেই পাথর শিল্পের খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেলে শিল্পীদের মনের কথা।
নিজেদের নিখুঁত ও সূক্ষ্ম কাজের মাধ্যমে এই শিল্পকে দেশে বিদেশে ছড়িয়ে দিয়েছেন এখানকার বহু শিল্পী। তাঁদেরই অন্যতম নয়ন দত্ত। নয়নবাবুর শিল্পকর্ম ইতিমধ্যেই ২ বার তাঁকে এনে দিয়েছে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার। তিনি জানালেন, এই শিল্প আনুমানিক ২০০ বছর বা তারও বেশি সময়ের প্রাচীন। সারাবছরই মোটামুটি কাজ থাকে শিল্পীদের। তবে করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের সময়ে যেহেতু আমদানি রফতানি বন্ধ ছিল, সেহেতু তখন কিছুটা মার খেয়েছে ব্যবসা। নয়নবাবুর কথা অনুযায়ী কমবেশি কাজ করেই চলেছেন শিল্পীরা।
তবে এখনও পর্যন্ত শিল্পীদের হাতে মোটমুটি কাজ থাকলেও আগামিদিনে এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সঠিক প্রশিক্ষণ দরকার বলেই মনে করেন নয়ন দত্ত। আর তার জন্য সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে বলে মত তাঁর। তিনি বলেন, সরকার যদি এই শিল্পের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে, অর্থাৎ কোনও ট্রেনিং সেন্টার চালু করে তাহলে খুব ভাল হয়। আর তেমনটা হলে প্রয়োজনে তিনিও প্রশিক্ষকের ভূমিকা পালন করতে পারেন বলে জানাচ্ছেন নয়ন দত্ত। সেক্ষেত্রে শুধু পাথর নয়, শঙ্খ বা কাঠের শিল্পকর্মের প্রশিক্ষণও তিনি দেবেন বলে জানান।
এছাড়া প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সরকার যদি উৎপাদিত সামগ্রী বাজারজাত করার ক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে শিল্পীদের আরও বেশি উপকার হবে বলেই মনে করেন নয়ন দত্ত। এদিকে ভোটও দোরগোড়ায়। এখন দেখার রাজ্যের আগামী সরকার শুশুনিয়ার পাথর শিল্পীদের আরও উন্নতির স্বার্থে ঠিক কী ভূমিকা নেয়।