রাজ্যের অর্থনীতির একটি অন্যতম প্রধান অংশ ক্ষুদ্র কুটির ও মাঝারি শিল্প। এর সঙ্গে যুক্ত রাজ্যের এক বিরাট অংশের মানুষের রুজি রোজগার। একইভাবে রাজ্যে ক্ষুদ্র কুটির ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপও করেছে সরকার। চালু করা হয়েছে বিভিন্ন প্রকল্প। তার ফলে একদিকে যেমন সামগ্রী উৎপাদন করতে সুবিধা হচ্ছে শিল্পীদের তেমনই মিলছে উৎপাদিত সামগ্রী বিক্রির সুযোগ। যার জেরে এই ধরনের শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের রোজগার ও স্বনির্ভরতা বেড়েছে বলেই মনে করছে সরকার।
কিন্তু তারপরেও কোথাও কোথাও ক্ষুদ্র কুটির ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শিল্পী তথা ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছে না পাওয়ার আক্ষেপ। যেমন বাঁকুড়ার (Bankura) রানিবাঁধ (Ranibandh) বিধানসভার খাতড়া ব্লকের ঝুড়ি ও কুলো শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের কথাই ধরা যাক। এলাকার এক ঝুড়ি শিল্পী সুমিত্রা কালিন্দী জানাচ্ছেন, আগে বিক্রিবাটা ভালোই ছিল, কিন্তু এখন সেভাবে আর কাজের দাম পাওয়া যাচ্ছে না। তারমধ্যে করোনা কালে লকডাউনের জেরে সমস্যা আরও জটিল হয়ে উঠেছে। আগে একটি কুলো বিক্রি হত ১০০ টাকায়, কিন্তু এখন তার দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৭০ টাকাতে। এদিকে বাঁশের দাম পড়ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। ফলে বিক্রির চেয়ে কেনা দাম বেশি পড়ে যাচ্ছে। যার জেরে সেভাবে লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না তাঁরা। অন্যদিকে বাজারদর ঊর্ধবমুখী। দাম বাড়ছে সমস্ত জিনিষের। ফলে সংসার খরচ সামলে সন্তানদের পড়াশোনার খরচ চালাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন সুমিত্রা কালিন্দী।
সরকারের থেকে কোনওরকম সহযোগিতা পেয়েছেন? উত্তরে সুমিত্রা কালিন্দী জানান, বিনামূল্যে রেশন ছাড়া আর কোনও সুবিধা পাচ্ছেন না তাঁরা। এক্ষেত্রে ব্যবসায় সহযোগিতা বা উন্নতির দিক থেকে দেখতে গেলে পূর্বতন বাম সরকার, বা বর্তমান তৃণমূল পরিচালিত সরকার, কারও আমলেই খুব একটা অবস্থার পরিবর্তন হয়নি তাঁদের। আগে যা ছিল এখনও তাই রয়েছে বলেই জানান তিনি। তাহলে নির্বাচনের পর যে সরকার গঠিত হবে তাদের কাছে কী আবেদন আপনাদের? শিল্পীর উত্তর, সরকার যদি ঋণ দেয় এবং উৎপাদিত সামগ্রী বিক্রির ব্যবস্থা করে তাহলে আরও বেশি করে কাজ করতে পারবেন তাঁরা। এখন দেখার ভোটের পর বাংলার মসনদে যাঁরা বসবেন তাঁরা এই ঝুড়ি শিল্পীদের সমস্যার সমাধান করতে পারেন কি না।