মাঠে ঘাটে ঘাস দেখতে আমার প্রায় প্রত্যেকেই অভ্যস্ত। কিন্তু ঘাস দিয়ে টুপি, ব্যাগ, পেনদানি, পাপস সহ অন্যান্য সামগ্রী তৈরি হচ্ছে এমনটা শুনেছেন কখনও? ভাবতে অবাক লাগলেও, এটাই কিন্তু বাস্তব। এই জিনিস তৈরি হয় বাঁকুড়ার (Bankura) রানিবাঁধে (Ranibandh)। সাবাই ঘাস (Sabai Grass) বা বাবুই ঘাস (Babui Grass) দিয়ে নানাবিধ কাজের ও ঘর সাজানোর সামগ্রী তৈরি করেন এখানকার স্থানীয় শিল্পীরা। এই শিল্পের পোশাকি নাম সাবাই ক্র্যাফ্ট (Sabai Craft)। এলাকার বহু মানুষের রুজি রোজগার যুক্ত এই শিল্পের সঙ্গে। কয়েকজন শিল্পী মিলে ইউনিট হিসেবে এই কাজ করেন।
রানিবাঁধের তেমনই একজন সাবাই ক্র্যাফ্ট শিল্পী পবন কুমার দাস। বর্তমানে এই শিল্পের হাল হকিকৎ কেমন তা জিজ্ঞাসা করলে পবনবাবু জানান, কাজকর্ম ভালোই চলছিল, তবে করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনেরে জেরে অবশ্য বেশ কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। যদিও ফের কাজ শুরু করেছেন শিল্পীরা। তা এই শিল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের তরফে কোনও রকম সহযোগিতা পেয়েছেন? পবনবাবু জানান, সাম্প্রতিককালে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বড়সড় সহযোগিতা পেয়েছেন তাঁরা। কেন্দ্রের সহযোগিতায় গড়ে তোলা হচ্ছে একটি সিপিসি বা কমন প্রোডাকশান সেন্টার। সেখানে ৫ হাজার বর্গফুটের একটি বিল্ডিং-এ থাকবে বিবিধ মেশিন। একই ছাতার তলায় চলবে প্রশিক্ষণ, উৎপাদন ও বিক্রির কাজ। প্রকল্পে মোট ৩০০ জন শিল্পীকে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে রাজ্য সরকারের তরফে যে সমস্ত স্কিল ডেভলপমেন্ট ও ট্রেনিং সেন্টারগুলির ব্যবস্থা করা হয়েছে সেই সব জায়গা থেকেও অনেক শিল্পী উঠে আসছেন বলে জানান পবনবাবু। পাশপাশি বিশ্ববাংলা ও মঞ্জুষার তরফে তাঁদের উৎপাদিত সামগ্রী কেনা হয় বলেও জানান তিনি।
তবে সরকারের তরফে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা হলেও, কোথাও কোথাও এখনও রয়ে গিয়েছে না পাওয়া। যার অন্যতম ঋণ। পবনবাবুর দাবি, কর্মসাথী প্রকল্পের আওতায় ঋণের আবেদন করে এখনও তা পাননি তাঁরা। এক্ষেত্রে নির্বাচনের পরে যে দলই সরকার গঠন করুক, তারা যেন সাবাই ক্র্যাফ্ট শিল্পীদের আর্থিক সহযোগিতা ও তাঁদের তৈরি সামগ্রীর আরও বেশি করে মার্কেটিং-এর ওপরে জোর দেয়, এমনটাই আবেদন জানাচ্ছেন পবনবাবুরা।