প্রার্থী নিয়ে বিজেপির অভ্যন্তরে যে সমস্ত জায়গায় বিক্ষোভ অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল তার অন্যতম হুগলি জেলা। উত্তরপাড়া থেকে চন্দননগর, সিঙ্গুর থেকে সপ্তগ্রাম, বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থী ঘিরে অসন্তোষ দেখা যায় দলেরই কর্মীদের একাংশের মধ্যে। এমনকি ইস্তফা পর্যন্ত দিয়ে দেন কেউ কেউ। তবে তাতে যে দলীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত বদলেছে তেমনটা নয়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বেছে দেওয়া প্রার্থীদের সামনে রেখেই নির্বাচনী লড়াইতে নেমেছেন হুগলি (Hooghly) জেলার বিজেপি নেতারা। কিন্তু দলের ভিতরের ক্ষোভ কি তাতে প্রশমিত হয়েছে?
এই প্রসঙ্গে হুগলি সাংগঠনিক জেলার বিজেপি (BJP) সভাপতি গৌতম চট্টোপাধ্য়ায় (Goutam Chatterjee) জানাচ্ছেন, "দল বড় হয়েছে, আগে প্রার্থী পাওয়া যেত না। এখন প্রতিটা কেন্দ্রেই প্রার্থী হওয়ার জন্য ৪০০ -৫০০ করে আবেদন পড়ছে।" তাঁর আরও দাবি, "বিক্ষোভে সবাই যে দলের কর্মী ছিলেন এমনটা নয়। বাইরে থেকেও লোক ঢোকানো হয়েছিল। প্রতিপক্ষ এই ধরনের বাতাবরণ সৃষ্টি করে বিজেপিকে বদনাম করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাতে তারা সফল হয়নি। আমরা আমাদের সংগঠন ঠিক করে নিতে পেরেছি।" কিন্তু পুরনো কর্মীদের পরিবর্তে নতুনরা সুযোগ পাচ্ছেন, এটা কি ঠিক বলে মনে করছেন? গৌতমবাবুর জবাব, "দলই শেষ কথা। দলের উচ্চ নেতৃত্ব যা বলবে তাই মেনে চলতে হবে।" ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মীরা সেই মানসিকতা নিয়েই দল করেন বলেই দাবি তাঁর।
গত লোকসভা ভোটে হুগলি কেন্দ্রে বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee)। আর সেই জয়ে বিপুল সমর্থন ছিল এলাকার মতুয়া সম্প্রদায়ের। এই বছর হুগলি চুঁচুড়া বিধানসভা কেন্দ্রে ফের লকেটকেই টিকিট দিয়েছে বিজেপি। কিন্তু গত লোকসভা ভোটে যে মতুয়ারা লকেটকে দুহাত তুলে আশীর্বাদ করেছিলেন তাঁদেরই একাংশের অভিযোগ, নাগরিকত্ব সংক্রান্ত সমস্যার এখনও সমাধান হয়নি। তাহলে কি এইবারেও মতুয়াদের সমর্থন পাবেন লকেট? গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের জবাব, "নিশ্চয় সমর্থন পাবেন লকেট। কারণ অমিত শাহজি বলে দিয়েছেন বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এলে প্রত্যেক উদ্বাস্তুকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।" গৌতমবাবুর দাবি, "হুগলি সাংগঠনিক জেলার ৭টি সহ জেলার মোট ১৮টি আসনেই বিজেপির অবস্থা খুব ভাল। সবকটি আসনেই জিতবে দল।"
জিতে ক্ষমতায় এলে প্রথমে এলাকার কোন সমস্যাগুলির সমাধানের দিকে নজর দেবে বিজেপি? গৌতম চট্টোপাধ্যায় জানান, "যে সমস্ত জুটমিল বন্ধ হয়ে রয়েছে সেগুলি খোলার চেষ্টা করা হবে। পাশাপাশি জুটমিলের শ্রমিকদের স্থায়ীকরণের বিষয়টিও দেখা হবে। ফিরিয়ে আনা হবে শিল্প, যাতে কর্মসংস্থান হয়। আরও বেশি করে গুরুত্ব দেওয়া হবে কৃষিতে।" এছাড়াও স্বচ্ছ প্রশাসন গড়ে তোলার চেষ্টা করা হবে বলেও জানান বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি।