বিধানসভা নির্বাচনের অষ্টম তথা শেষ দফায় ভোট হতে চলেছে বীরভূমে (Birbhum)I জেলার ১১টি বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচন হবে একদিনেই। প্রচার শেষ হতে আরও কয়েকদিন বাকি রয়েছে। যদিও সময় নষ্ট করতে রাজি নয় কোনও পক্ষই। একদিকে যেমন বিভিন্ন ভাবে প্রচার চালিয়ে আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন প্রার্থীরা, অন্যদিকে তেমনই রণকৌশল ঠিক করতে ব্যস্ত স্ট্র্যাজিটি মেকাররা। ডান-বাম সব পক্ষেরই দাবি, এবারে বীরভূমবাসীর আশীর্বাদ তাদের সঙ্গেই থাকবে।
পরিসংখ্যান বলছে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বীরভূম জেলার ১১টি আসনের মধ্যে ৯টি জিতেছিল তৃণমূল (TMC)। বাকি ২টি আসনের মধ্যে একটি গিয়েছিল বামফ্রন্ট (Left Front) ও আর অপরটি গিয়েছিল কংগ্রেসের (Congress) ঝুলিতে। তবে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে হিসেব নিকেশে অনেকটাই পরিবর্তন আসে। জেলার ২টি লোকসভা আসন তৃণমূল ধরে রাখতে পালেও বিপুল ভাবে ভোট বাড়ে বিজেপির (BJP)। ২টি আসেনই দ্বিতীয় স্থানে শেষ করেন বিজেপি প্রার্থীরা। তার মধ্যে বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফলের নিরিখে দেখা যায় দুবরাজপুর, সিউড়ি, সাঁইথিয়া, রামপুরহাট ও ময়ূরেশ্বরে এগিয়ে রয়েছে পদ্ম শিবির। অনুব্রত মণ্ডলের গড়ে এই ফলাফল রীতিমতো বাড়তি উৎসাহ যোগায় গেরুয়া ব্রিগেডকে।
এবারের নির্বাচনে রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি বীরভূমে বিশেষ নজর দিয়েছে বিজেপি। নির্বাচন ঘোষণার আগে থেকেই জেলায় শুরু হয়ে গিয়েছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের আনাগোনা। জেপি নাড্ডা, অমিত শাহর মতো নেতারা নির্বাচন ঘোষণার আগে ও পরে বিভিন্ন সময় বীরভূমে সভা এবং রোড শো করেছেন। আর কেন্দ্রীয় নেতাদের সক্রিয়তায় ভর করে দলের ভাল ফল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী বিজেপি জেলার নেতারাও।
এই প্রসঙ্গে জেলার বিজেপি সভাপতি ধ্রুব সাহা জানাচ্ছেন, "মানুষ সোনার বাংলা চান, তাই ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গে আসছেন।" বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডলের যথেষ্টই প্রভাব, তাঁর বিরুদ্ধে কতটা টক্কর দিতে পারবেন? ধ্রুববাবুর সাফ জবাব, "প্রভাব ছিল, পাস্ট টেন্স। প্রভাব শেষ। তৃণমূল করার লোক আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।" পাশাপাশি সংযুক্ত মোর্চাকে 'সুবিধাবাদী মোর্চা' বলেও কটাক্ষ করেন বিজেপির জেলা সভাপতি। এবারে নির্বাচনে জেলায় বেশিরভাগ আসনেই বিজেপি জিতবে বলেও দাবি করেন তিনি।
যদিও বিজেপির এই ধরনের দাবিকে একেবারেই গুরুত্ব দিতে নারাজ বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। উল্টে তাঁর সাফ কথা, "জেলার ১১টা আসনেই জিতবে তৃণমূল।" যদিও শেষ পর্যন্ত বীরভূমবাসীর সমর্থন কাদের সঙ্গে, তা জানা যাবে আগামী ২ মে।