এরাজ্যে প্রশাসনের রাজনৈতিক করণ নিয়ে বারবার অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন রাজ্যপাল। অভিযোগ করেছেন প্রশাসনের কর্তারা দলীয় কর্মীর মত আচরণ করছেন। এনিয়ে বহুবার সরকারি কর্মীদের নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জগদীপ ধনখড়। এবার সেই ভাষাতেই কথা বললেন এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সোমবার নদিয়া জেলারা রাণাঘাটে ‘গৃহ সম্পর্ক’ অভিযানে সামিল হয়ে কেন্দ্রের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সঞ্জীব বালিয়া সরকারি কর্মদের মনে করিয়ে দেন আর মাত্র ৫ মাস পর নির্বাচন। তাঁর কথায়, "আধিকারিকদের বুঝতে হবে, সরকার বদল হবে"
ভোট যত এগোচ্ছে ততই দুই শিবির জনসংযোগের উপর গুরুত্ব বাড়াচ্ছে। আর তার আঁচে ডিসেম্বরেও বাংলার ভোটের ময়দানে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে দুয়ারে সরকার শুরু করেছে মমতা প্রশাসন। যার লক্ষ্য সরকারি প্রকল্পগুলিকে এক ছাতার তলায় এনে মানুষের কাছে সহজে পৌঁছে দেওয়া। ভোটের আগে রাজ্যবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে মমতা প্রশাসন দুয়ারে সরকারকে যে কাজে লাগাতে চাইছে তা সহজেই অনুমেয়। আর এর পাল্টা দিতেই রাজ্যের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে বিজেপি। কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে‘গৃহ সম্পর্ক’ অভিযান। উত্তর ও দক্ষিণ দুই বঙ্গেই ময়দানে নেমে পড়েছেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। সোমবার নদিয়া জেলারা রানাঘাটে সেরকমি ‘গৃহ সম্পর্ক’ অভিযানে সামিল হন কেন্দ্রীয় প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সঞ্জীব বালিয়া। এই কর্মসূচিকে অংশ নিয়ে গেরুয়া শিবিরের অন্যান্য নেতাদের মতই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের দিকে তোপ দাগেন তিনি।
একসময় বিহার ও উত্তরপ্রদেশে জঙ্গলরাজ চলত। আইনের শাসন বলতে কিছু ছিল না। তবে এই দুই রাজ্যেই এখন রয়েছে এনডিএ সরকার। সেই প্রসঙ্গ তুলেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন বিহার ও উত্তরপ্রদেশ পাল্টেছে, শান্তি ফিরেছে, কিন্তু বদলায়নি বাংলা। গণতন্ত্র নয় বরং বাংলায় মমতা রাজ চলছে বলে কটাক্ষ করেন কেন্দ্রীয় প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেন মমতা সরকারের অহঙ্কারের জন্যই এরাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে আসতে দেওয়া হয় না, যার ফলে বঞ্চিত হন রাজ্যবাসী।
বিজেপি-র অভিযোগ, করোনা এবং আমফানের বিপর্যয় সামলাতে রাজ্য সরকার ব্যর্থ। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সুযোগসুবিধা বাংলায় কার্যকরী না করার অভিযোগে ‘আর নয় অন্যায়’ প্রচারের অঙ্গ হিসাবেই এই গৃহ সম্পর্ক অভিযান গত সপ্তাহ থেকে শুরু করেছে গেরুয়া শিবির। যেখানে চার পাতার ছাপানো প্রচারপত্র নিয়ে বিজেপিকর্মীরা বাড়ি বাড়ি অভিযান চালাচ্ছেন। যাতে সামিল হচ্ছেন জেলা পরিষদের সদস্য থেকে এলাকার সংসদ, নেতা-নেত্রীরাও। এদিন ‘গৃহ সম্পর্ক’ অভিযানের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সরকারি আধিকারিকদের স্মরণ করিয়ে দেন, রাজ্যে ৫ মাস পর পরিবর্তন আসছে সেটা মাথায় রেখেই যেন কাজ করা হয়।