বুথ ফেরৎ সমীক্ষায় ইঙ্গিত ছিল হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের। ফল ঘোষণার শুরুতে দেখাও যাচ্ছিল তেমনটাই। কিন্তু একটু বেলা বাড়ার পরেই বদলাতে থাকে চিত্রটা। ক্রমশ এগিয়ে যায় তৃণমূল (TMC), উল্টোদিকে পিছিয়ে পড়ে বিজেপি (BJP)। দিনের শেষে ২০০-র বেশি আসনে জিতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফের একবার বঙ্গে তৃণমূল। অপরদিকে এবারের মতো বাংলা জয়ের স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল বিজেপির। তবে বিজেপির পরাজয় হলেও তারমধ্যে রয়েছে বিশেষ কয়েকটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক। যার অন্যতম কোচবিহার (Cooch Behar) ও দার্জিলিং-এ (Darjeeling) ভাল ফল।
কোচবিহার জেলার ৯টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ২টিতে জয় পেয়েছে তৃণমূল। বাকি ৭টি আসনই গিয়েছে বিজেপির দখলে। অন্যদিকে দার্জিলিং-এর ৫টি আসনই জিতে নিয়েছে গেরুয়া শিবির। তবে পাহাড়ের আসন হলেও বর্তমানে পৃথক জেলা কালিম্পং-এ অবশ্য জিতেছেন বিনয় তামাং পন্থী মোর্চা প্রার্থী। এর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও কোচবিহার ও দার্জিলিং আসনে জয় পেয়েছিল বিজেপি। আর এখানেই প্রশ্ন, বারংবার কীকরে এই অঞ্চলগুলি নিজেদের দখলে রাখতে পারছে গেরুয়া ব্রিগেড?
রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করেছে, পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে যেমন পাহাড়ে আন্দোলন হয়েছে, তেমনই আলাদা কামতাপুর ও কোচবিহার রাজ্যের দাবিতেও হয়েছে আন্দোলন। অন্যদিকে একসময় গোর্খাদের দাবি পূরণের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছিল বিজেপি। ফলে পাহাড়ে বিজেপিকে সমর্থন দেন বিমল গুরুং। কারণ স্ট্র্যাটিজিগত ভাবে বরাবরই বিজেপি ছোট রাজ্য গঠনের পক্ষে থেকেছে বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। আর সেই স্ট্র্যাটিজি থেকেই গোর্খাদের দাবির পক্ষে সমর্থন ছিল বিজেপির। যদিও পরবর্তী সময় দেখা গিয়েছে বিজেপি তথা এনডিএ-র সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করেছেন বিমল গুরুং।
তবে বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করলেও গোর্খাল্যান্ডের দাবি থেকে তিনি যে সড়ে আসেননি সে কথা স্পষ্ট ভাবেই জানিয়েছিলেন বিমল গুরুং। আর সেখানেই উঠছে প্রশ্ন। তবে কি পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে এখনও অনড় বেশিরভাগ পাহাড়বাসী? সেই কারণেই কি দার্জিলিং জেলার অন্তর্গত পাহাড়ের ২টি আসনে জয় পেল বিজেপি? আর সেই একই কারণে কি কোচবিহারেও ভাল ফল গেরুয়া ব্রিগেডের? রয়ে যাচ্ছে প্রশ্ন।