শনিবার রাজ্যে বিজেপির পরিবর্তন যাত্রার সূচনা করার কথা জেপি নাড্ডার। রথযাত্রা বার করা নিয়ে বদ্ধ পরিকর গেরুয়া শিবির। তবে এনিয়ে নদিয়ার পুলিশ-প্রশাসন আরও তথ্য চেয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের কাছে। ফলে নবদ্বীপে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি রথযাত্রার সূচনা করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে। তবে কৃষ্ণনগরের পুলিশ সুপার অবশ্য জানিয়েছেন, নাড্ডার রথযাত্রায় স্থানীয় প্রশাসন অনুমতি দিয়েছে। যদিও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি যে সভা করবেন তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দলের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। নবদ্বীপ থেকে বিজেপির রথকে নদিয়া হয়ে মুর্শিদাবাদে যেতে দেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগেও রাজ্যে রথযাত্রার করতে চেয়েছিল বিজেপি। সেবার অনুমতি দেয়নি নবান্ন। এবার ভারতীয় জনতা পার্টিকে চিঠি দিয়ে নবান্ন আগেই জানিয়ে দিয়েছিল রথযাত্রা করতে গেলে স্থানীয় প্রশাসনের থেকে আগাম অনুমতি নিতে হবে। অর্থাৎ এবার স্থানীয় প্রশাসনের কোর্টেই বল ঢেলে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সেইমতই নবদ্বীপ জেলাপ্রশাসনের কাছে অনুমতি চেয়েছিল বিজেপি। আর এই বিষয়ে রথযাত্রা শুরুর ২৪ ঘণ্টা আগে আরও তথ্য চাইছে জেলা প্রশাসন। বিজেপি নেতৃত্বের কাছে পুলিশ জানতে চেয়েছে, কোথায় কোথায় রথযাত্রা থামবে, কতগুলি গাড়ি থাকবে, কত মানুষ অংশ নেবে এই কর্মসূচিতে।
রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে গোটা বাংলা জুড়ে বিজেপি পরিবর্তন রথযাত্রা-র পরিকল্পনা নিলেও তার সূচনার আগেই রথযাত্রার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা। রমাপ্রসাদ রায় নামের এক আইনজীবী বিজেপির রথযাত্রার বিরুদ্ধে বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছেন। রমাপ্রসাদ রায় জানিয়েছেন, বিজেপির এই রথযাত্রা বের হলে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। আর সেই কারণেই তিনি এই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে রথযাত্রার করতে চেয়েছিল বিজেপি। তার অনুমতি দেয়নি রাজ্য সরকার। এনিয়ে মামলা গড়িয়েছিল হাইকোর্ট পর্যন্ত। রাজ্য সরকারের দাবি ছিল, রথযাত্রা হলে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি হতে পারে। এবার অবশ্য নবদ্বীপে বিজেপির রথযাত্রায় অনুমতি দিতে অস্বীকার করেনি রাজ্য। এমনটাই দাবি করছে তৃণমূল শিবির।
শাসক শিবিরের দাবি, এনিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের এক নেতা মুখ্য সচিবের কাছ থেকে রথযাত্রার অনুমতি চান। মুখ্য সচিবের দফতর জানায়, বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের আওতাধীন। সেখানে আবেদন জানাতে পরামর্শ দেওয়া হয়। এরই মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে এনিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন, তাই এখানে শাসকদলের কোন ভূমিকা নেই। এভাবেই দায় ঝাড়তে চাইছে তৃণমূল। এদিকে রাজ্য বিজেপির এই কর্মসূচিকে রুখতে পারবে না জেলা প্রশাসন, এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলায় বিজেপির সহ পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতা বলেছেন, 'রথযাত্রায় স্থগিতাদেশ জারি করেনি আদালত। সুতরাং, জেলা প্রশাসন এটা আটকাতে পারবে না। বিরোধী দল হিসেবে এটা আমাদের মৌলিক অধিকার। ৬ ফেব্রুয়ারি বিজেপি সভাপতি নাড্ডা নবদ্বীপ থেকে রথযাত্রার সূচনা করবেন। ১১ তারিখ কোচবিহার থেকে আরেকটি রথযাত্রার সূচনা করবেন অমিত শাহ'। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও দাবি করেন, রথযাত্রার জন্য তাঁরা পুরোপুরি প্রস্তুত। সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গিয়েছে। রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তর আবার দাবি, রথযাত্রা ঘিরে হিংসা ছড়ালে তার জন্য দায়ি থাকবে তৃণমূলই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রথযাত্রা বন্ধ করার পরিকল্পনা করেছেন। কিন্তু আমরা ৫টি রথ বার করবই।