আজতকের সঙ্গে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে একাধিক বিষয়ে মুখ খুললেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া টলি অভিনেতা যশ দাশগুপ্ত। রাজ্যের শিল্প পরিস্থিতি থেকে শুরু করে ইন্ড্রাস্টিতে রাজনীতিকরণ অনেক কিছুই বললেন তিনি। সেই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, বাংলার জয় শ্রী রাম বললেন সমস্যা কোথায়।
শাহের সঙ্গে দেখা করার প্রসঙ্গে
যশ বললেন, আজ সকালে মিটিংয়ের বিষয়ে আমি জানতাম না।আজ সকালে হঠাৎ ফোন আসে। বলা হয় অমিত শাহ দেখা করতে চাইছেন। খুব নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলাম। মাত্র দু দিন হয়েছে বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। কিন্তু দেখা করার সময়ে বুঝলাম উনি খুব উৎসাহে রয়েছেন। উনি আমার আত্মবিশ্বাস বাড়ালেন। আর বললেন ভালোভাবে কাজ কর।
উন্নয়ন প্রসঙ্গে যশ
বিজেপিতে যোগদানের বিষয়ে তিনি বলেন, দিদিকে আমি অনেক বছর ধরে চিনি। এখনও আমি তাঁর কাছে ছোট ভাইয়ের মতো। কিন্তু আমার প্রধানমন্ত্রীর নীতি বেশি ভালো লাগে। সেই নীতিতেই আমার বিশ্বাস। কলকাতা একটা মেট্রো শহর, কিন্তু বাকি মেট্রো শহরের সঙ্গে যদি তুলনা করা হয়। তাহলে কিন্তু কলকাতা অনেক পিছিয়ে রয়েছে। গোটা রাজ্যে এমন কোনও শিল্পক্ষেত্র নেই, যেখানে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ করে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর হাত ধরে বাংলায় উন্নয়ন আসবে বলে আমার বিশ্বাস।
বাংলার শিল্প প্রসঙ্গে যশ
যশ বলেন, আমি ছোট থেকে শুধুমাত্র বাংলাতেও নয়। অনেক রাজ্যে ছিলাম। এটা বারবার শুনে চলেছি বাংলায় চাকরি নেই। এখানকার ছেলেমেয়েরা বাইরে চলে যান। বিজেপির সবথেকে বেশি ভালো যেটা, ওরা আপনার পদবী কিংবি ব্যআকগ্রাউন্ড দেখে না। নেপোটিজম যেটা এখন মুম্বইতে রয়েছে সেটা বিজেপি বিশ্বাস করে না। কোনও সরকার একটা নির্দিষ্ট জাতিকে নিয়ে কখনও এগিয়ে যেতে পারে না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেন, সবকা সাথ, সবকা বিশ্বাস। ফলে এতেই বোঝা যায়, শুধুমাত্র একটা জাতিকে এগিয়ে রাখার কথা বলা হয়নি। সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাংলাতে এমন কিছু হচ্ছে, যেটা সীমার বাইরে চলে যাচ্ছে। এটা উচিত নয়। উন্নয়ন হলে সবার জন্য করা উচিত। কিন্তু ধর্মীয় কারণে উন্নয়ন এটা ঠিক নয়।
ইন্ড্রাস্টির বিষয়ে
যশ বলেন, ইন্ড্রাস্টিতে কোনও রং থাকা উচিত নয়। মানুষ মন খুলে কাজ করুক। ফিল্ম ইন্ড্রাস্টিতে রাজনীতি নিয়ে আসা উচিত নয়। টলিউড ভয়ের পরিবেশ এখন আছে। আমি চাই সেটা তাড়াতাড়ি বন্ধ হোক।
আরও পড়ুন, "টুইঙ্কেল ও অক্ষয় বিবাহিত, আমি আর নুসরত নই!" BJP-যোগ ও সম্পর্কের জল্পনা নিয়ে বিস্ফোরক যশ
নুসরত প্রসঙ্গে যশ
নুসরত জাহান সম্পর্কে তিনি বলেন, ও আমার খুব ভালো বন্ধু। শুধু ও নয়, বিরোধী রাজনৈতিক দলে আমার আরও বন্ধু রয়েছে। নতুন ভারতে বিরোধী মতার্দশ হলে সেটা নিয়ে আলোচনা হবে। ঝগড়াঝাটি হবে, এমনটা নয়। আমার সঙ্গে নুসরতের রাজনীতির বিষয়ে কোনও কথা হয়নি।
বহিরাগত ইস্যুতে যশ
বহিরাগত ইস্যুতে তিনি বলেন, অভিযোগ তো অনেক কিছু ওঠে। কিন্তু এসব অভিযোগ তুললে চারটে আঙুল আপনার নিজের দিকেই থাকবে। বিহার-উত্তরপ্রদেশ থেকে কেউ আসলে, তাকে বহিরাগত বলা উচিত নয়। আমাদের এটা ভুলে গেলে চলবে না, আমরা ভারতের একটি রাজ্য। এভাবে কাউকে আলাদা করা উচিত নয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই বিষয়ে স্পষ্ট জানিয়েছেন, এখানকার যে নেতা হবেন তিনি পশ্চিমবঙ্গের ভূমিপুত্রই হবেন। আমি মুম্বইয়ে ছিলাম। ওখানে আমার অনেক বন্ধু রয়েছে। সেখানে তো এমন কিছু কথা ওঠে না।
জয় শ্রী রাম ইস্যুতে যশ
এটা অনেক সময়ে হয়েছে যে দুর্গাপুজোর বিসর্জনের সময়ে হিন্দুদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু আমি এখানে হিন্দু বনাম মুসলিম রাজনীতি করতে আসিনি। এখানে কথা হচ্ছে, সবাইকে সমান মর্যদা দেওয়ার। একজনকে নিচে নামিয়ে অপরজনকে উপরে তোলা নয়। ভারত স্বাধীন দেশ।সবাইকে সাথে নিয়ে চলতে হবে। এখানে একটা সমস্যা জয় শ্রী রাম বলা যাবে না। কিন্তু এটা কেন বলা যাবে না। ভারত তো রামের দেশ। তাহলে জয় শ্রী রামে কি সমস্যা। জয় মা কালী কিংবা জয় মা দুর্গা বলতে আমার কোনও সমস্যা নেই। এমনটা নয় যে রাম কেবলমাত্র একজনের। রাম তো সবার।
বিজেপি প্রসঙ্গে যশ
আমাকে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে কাজ করতে চাই। এই জন্য অনেক পরিকল্পনা করেছি। উপরওয়ালার ইচ্ছা হলে ও মানুষ সাথে থাকলে নিশ্চয়ই এগোব। আমি যেই বিধানসভায় যাব, সেখানে যদি মানুষের কোনও সমস্যা না থাকে, এটা আমার কাছে সবথেকে সাফল্যের বিষয়। আমি বিধানসভায় দাঁড়াব কিনা, সেই বিষয়ে কিছু বলব না। তবে মনোবল তৈরি আছে।