দু'জনেরই টার্গেট ২০২১-এ বাংলা জয়। তবে দুই জনের মুখে দু'রকম কথা। একজন এটাকে বিশেষ কোনও নির্বাচন হিসেবে গুরুত্ব দিতে নারাজ। অপরজন আবার সমস্ত নির্বাচনকেই গুরুত্ব দিয়ে দেখেন। প্রথম জন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। দ্বিতীয় জন বিজেপির শীর্ষ নেতা তথা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভ ইস্ট ২০২১ (India Today Conclave East 2021)-এর মঞ্চে এসে এবারের ভোট প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'কোনও আলাদা নির্বাচন নয়। ছোট বড় ব্যাপারও কিছু নয়। আমি স্ট্রিট ফাইটার।' অন্যদিকে আবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত সাহ বলেন, 'সমস্ত নির্বাচনই কঠিন।'
রাজনৈতিক মহল মনে করছে এবারের নির্বাচনের পটভূমি অন্যবারের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। তার নেপথ্যে অবশ্য একাধিক কারণ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এবারই প্রথম বাংলার নির্বাচনে প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপি। বঙ্গ জয়কে একপ্রকার পাখির চোখ করে নিয়েছে বিজেপি নেতৃত্বে। আর সেই কারণেই লাগতার বাংলায় আসছেন বিজেপির একের পর এক শীর্ষ নেতা। নেওয়া হচ্ছে নিত্য নতুন স্ট্র্যাটেজি। সেদিক থেকে দেখতে গেলে এই বছর যে কটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হতে চলেছে তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির অন্যতম লক্ষ্য। এক্ষেত্রে অবশ্য শাসক দল তৃণমূলও একটা ফ্যাক্টর। কারণ তৃণমূল পরিচালিত সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ থাকলেও গত ১০ বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কন্যাশ্রী', 'সবুজসাথী'র মতো বেশ কিছু জনমুখী প্রকল্প যে বাংলার বিশাল এক অংশের মানুষের মনও জয় করেছে তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। তাছাড়া বিরোধীদের লাগাতার প্রচারের পরেও ব্যক্তি মমতার জনপ্রিয়তায় বিশেষ প্রভাব পড়েনি বলেই মনে করেন রাজনীতির বিশেষজ্ঞরা। সেদিক থেকে দেখতে গেল বিজেপির কাছে এই নির্বাচনের গুরুত্বও যে কোনও অংশে কম নয় তা বলাই বাহুল্য।
অন্যদিকে আবার তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া ত়ৃণমূল কংগ্রেসও। তার জন্য একদিনে যেমন 'দুয়ারের সরকারের' মতো নতুন ভাবনা নিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার, অন্যদিকে আবার তেমনই লাগাতার বিজেপি বিরোধী প্রচারও চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকি এখন তো বিজেপি, কংগ্রেস ও বামেদের এক বন্ধনীতে রেখে আক্রমণ করছেন মমতা। পাশাপাশি তাঁকে হারানোর ক্ষমতা নেই বলেও একপ্রকার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী। আর এবার তো ২১-এর নির্বাচনকেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাইলেন না মমতা। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এবারের নির্বাচনে যে গেরুয়া হাওয়া উঠেছে, জনসমক্ষে তাতে বিশেষ গুরুত্ব না দিতেই হয়ত এই স্ট্র্যাটেজি তৃণমূল নেত্রীর।