scorecardresearch
 

West Bengal Election 2021: কেন নন্দীগ্রাম থেকেই লড়ছেন মমতা? কী রয়েছে নেপথ্যে?

২৯১টি আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছেন মমতা, সেই সঙ্গে এও বলে দিয়েছেন যে নন্দীগ্রাম থেকেই লড়াই করবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে এই ঘোষণা অনেকটাই প্রত্যাশিত। শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই নন্দীগ্রামে এসেই মমতা বলেছিলেন যে তিনি একুশের নির্বাচনে এখান থেকেই লড়াই করবেন।

Advertisement
২০১১ এবং ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুরের আসন থেকে লড়াই করেই জিতেছিলেন 'বাংলার মেয়ে'। ২০১১ এবং ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুরের আসন থেকে লড়াই করেই জিতেছিলেন 'বাংলার মেয়ে'।
হাইলাইটস
  • নন্দীগ্রাম থেকেই লড়াই করবেন তৃণমূল সুপ্রিমো
  • শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই নন্দীগ্রামে মমতা
  • তবে কি শুভেন্দুকে জবাব দিতেই এবার এত বড় পদক্ষেপ মমতার?

শুক্রবারই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৯১টি আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছেন মমতা, সেই সঙ্গে এও বলে দিয়েছেন যে নন্দীগ্রাম থেকেই লড়াই করবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে এই ঘোষণা অনেকটাই প্রত্যাশিত। শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই নন্দীগ্রামে এসেই মমতা বলেছিলেন যে তিনি একুশের নির্বাচনে এখান থেকেই লড়াই করবেন।

শুক্রবার মমতা বলেন, "নন্দীগ্রাম আমার মনের খুব কাছের। আমি নিজের নাম ভুলে যেতে পারি কিন্তু নন্দীগ্রামের নাম ভুলতে পারব না। একটা আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে নন্দীগ্রামের প্রতিটা মানুষের সঙ্গে। তাই আজ আমি জানিয়ে দিতে চাই এবারের নির্বাচনে আমি নন্দীগ্রাম থেকেই লড়াই করব।" তবে তিনি এও বলেন যে নিজের কেন্দ্র ভবানীপুর থেকেও লড়াই করার ইচ্ছা ছিল তাঁর। মমতা বলেন, "ভবানীপুর আমার হাতের মুঠোয় হাতে। পুজো থেকে ক্লাব সবদিকেই লক্ষ্য রাখি। নন্দীগ্রাম, ভবানীপুর আমার কাছে দুই বোন।"

যদিও মমতার এই কেন্দ্র বদল নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বাংলার বিজেপির ইনচার্জ অমিত মালব্য টুইটে বলেন, "নিজের একচ্ছত্র আধিপত্যের ভবানীপুর আসন ছেড়ে দিয়ে নিজেই নিজের পরাজয় মেনে নিয়েছেন ভোটের আগেই। বাংলা এখন পরিবর্তনের জন্য তৈরি হচ্ছে।" অন্য আরেকটি টুইটে মালব্য বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর এই আসন পরিবর্তনের কারণ উনি বুঝতে পেরেছেন এবারের নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত। এই সবে শুরু। মা-মাটি-মানুষের পরাজয় দেখবে পিসি। আর বাংলা দেখবে আসল পরিবর্তন।"

নন্দীগ্রাম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই নিয়ে তোপ দাগতে ছাড়েননি বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। আসানসোলের সাংসদ বলেন, "ভবানীপুর থেকে লড়াই না করার অর্থ এটাই যে তিনি ভয় পেয়েছেন। এটা ওঁর পরাজয়ের ভয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মানুষের জীবন নিয়ে খেলেছেন। তৃণমূলের গুণ্ডারা মানুষকে বুথে গিয়ে ভোট দিতে দেয় না। শুভেন্দু অধিকারি নন্দীগ্রাম থেকে লড়াই করুন কি না করুন মমতা ৫০ হাজার ভোটে পরাজিত হবেন।"

Advertisement

২০১১ সালের তৃণমূলের ক্ষমতায় আসার নেপথ্যে কিন্তু নন্দীগ্রাম। জমি অধিগ্রহণ, কৃষক আন্দোলনকে হাতিয়ার করেই বাংলায় পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১০ বছর ধরে জনগণই তাঁকে সমর্থন করে এসেছে। তবে সেই নন্দীগ্রামের ভিত অনেকটাই তৈরি করেছিলেন শিশির অধিকারির পরিবার, সর্বোপরি শুভেন্দু। যদিও মমতার কথায়, 'লড়াই কে করেছে, কারা পাশে থেকেছে মানুষ সব জানে। অনেকে নন্দীগ্রামের ঘটনা টেনে নিজেদের আখের গোছাতে চাইছে।' 

প্রথমে যদিও ভবানীপুর ও নন্দীগ্রাম এই দুই আসন থেকেই লড়াই করার কথা ছিল মমতার। পরে ভবানীপুর শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের হাতে ছেড়ে নন্দীগ্রাম থেকেই লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছে বাংলার মেয়ে একাই এক আসন থেকে লড়াই করে জেতার ক্ষমতা রাখে। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভবানীপুর আসন ছাড়ার নেপথ্যে ভোট পরিসংখ্যানকে সামনে আনছেন পর্যবেক্ষকরা। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ২৯ শতাংশ ভোট খুইয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই আসনে মাত্র ৩৫০০ ভোটে জয়লাভ করেছিল সবুজ শিবির। 

বিজেপিযোগের পর থেকেই নন্দীগ্রাম নিয়ে মমতাকে নিশানা করে গিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। যে নন্দীগ্রাম দিয়ে উত্থান তৃণমূলের সেই এলাকাকে কীভাবে ভুলে গেলেন সুপ্রিমো, সে প্রশ্নও রাখেন। শহরের উন্নতি করা মমতা শিবির কেন ভোট ছাড়া জেলার দিকে ঘুরেও তাকান না তাও জানতে চেয়েছেন শিশির-পুত্র। তবে কি শুভেন্দুকে জবাব দিতেই এবার এত বড় পদক্ষেপ মমতার? উত্তর দেবে নন্দীগ্রামই।

Advertisement