গত ২৩ এপ্রিল রাতের আকাশে এক অদ্ভুত সুন্দর ঘটনা ঘটল। গোলাপি চাঁদ। প্রতি বছর এপ্রিল মাসেই এই দুর্দান্ত মহাজাগতিক ঘটনা ঘটে। একে 'পিঙ্ক মুন' বলা হয়। তবে হালকা গোলাপি আভার থেকেও, এই নামকরণের মূল কারণ হল, এই মাসে এবং ঋতুতে বিশ্বের অনেক জায়গায় গোলাপি ফুল ফোটে। সেজন্যই এই নাম দেওয়া হয়েছে। আগামী দুই-এক দিনের মধ্যেই সারা বিশ্বের মানুষ এই চাঁদ দেখতে পাবেন।
নাসার সায়েন্স মিশন ডিরেক্টরেটের প্রোগ্রাম এক্সিকিউটিভ গর্ডন জনসন জানান মাসে একবার পূর্ণিমা আসে। ২৪ এপ্রিল ভোর ৫:১৫-এ, এই চাঁদটি তার পূর্ণিমার পূর্ণ পর্যায়ে ছিল। সেই কারণে অনেকটাই বড় এবং উজ্জ্বল দেখাচ্ছিল।
আকাশে ঝলমলে চাঁ সাদা রঙের মতোই মনে হয়। কিন্তু মাঝে মাঝে, বিশেষ করে পূর্ণিমার সময়, এতে গোলাপি, লালচে বা তামাটে রঙের দেখা যায়। এই অস্বাভাবিক রঙের পেছনে আসলে কোন রহস্য নেই, বরং এটি একটি বৈজ্ঞানিক ঘটনা যা 'রেলেই প্রক্রিয়া' (Rayleigh scattering) নামে পরিচিত।
সূর্যের আলো, পৃথিবী এবং চাঁদের মধ্যে সম্পর্ক:
পূর্ণিমা এবং রঙের প্রভাব:
অন্যান্য কারণ:
চাঁদ আসলে গোলাপি রঙের নয়। বরং, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সাথে সূর্যের আলোর মিথস্ক্রিয়া এই অস্বাভাবিক রঙের প্রভাব সৃষ্টি করে। পূর্ণিমা এবং চাঁদের ক্ষেত্রজের অবস্থান এই প্রভাবকে আরও তীব্র করে তোলে।
নাসার বিজ্ঞানী আন্দ্রেয়া জোনস বলেন, চাঁদের কক্ষপথ পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে পাঁচ ডিগ্রি আলাদা। তাই এটি সর্বদা পৃথিবীর ছায়ার সামান্য উপরে বা নীচে থাকে। এই কারণে, সূর্যের আলো চাঁদের নিকটতম অংশকে আলোকিত করে। অর্থাৎ যে অংশ পৃথিবীর দিকে থাকে।
এপ্রিল পূর্ণিমা বা গোলাপী চাঁদের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নাম রয়েছে। যেমন- নতুন ঘাসের চাঁদ, ডিমের চাঁদ, মাছের চাঁদ ইত্যাদি। ইহুদিরা একে পেসাচ বা পাসওভার মুনও বলে। খ্রিস্টানরা একে পাসকাল চাঁদ বলেন। এই চাঁদের উদয় হওয়ার পরই ইস্টারের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
গ্রহনকালে এই চাঁদ ব্লাড মুনে পরিণত হয়
কখনও কখনও পূর্ণিমার সময়, পৃথিবীর ছায়া আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে চাঁদের উপরেই পড়ে। এর ফলে চন্দ্রগ্রহণ হয়। সূর্যগ্রহণের সময় চাঁদের রং মরিচা ধরা লোহার মতো লাল হয়ে যায়। একে বলে ব্লাড মুন। পৃথিবীর চারদিক থেকে চাঁদে সূর্যের আলো পড়লে সাধারণত চাঁদকে লাল দেখায়।