উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যে ঘোষণা করা হোক। এই দাবি তুললেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, বাংলাকে ভাগ করার চক্রান্ত করছে বিজেপি। তারই মধ্যে আজ কোচবিহারের একটি দলীয় সভা থেকে উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য ঘোষণার দাবি তুললেন জন বার্লা। এই নিয়ে ইতিমধ্যে সুর চড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, বিজেপির এই চক্রান্ত রুখে দিতে প্রস্তুত তৃণমূল।
আজ কোচবিহারের সেই দলীয় সভা থেকে জন বার্লা বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকারকে আমরা এই নিয়ে আবেদন করব। উত্তরবঙ্গের মানুষ শান্তি চায়।' কেন এমন দাবি তুলেলেন জন বার্লা? উত্তরে ওই সাংসদ বলেন, 'আমাদের রাজ্যে কোনও উন্নতি নেই। বউ-বাচ্চাদের নিয়ে ভিন রাজ্যে কাজ করতে যেতে হচ্ছে উত্তরবঙ্গের মানুষকে। এটাই কি উন্নয়নের নমুনা? কংগ্রেস , বাম ও তৃণমূলের রাজত্বকালে এভাবেই বঞ্চনার শিকার হয়েছি আমরা। তৃণমূলের আমলেও হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের মানুষের অবস্থা শোচনীয়। তাঁরা কাঁদছে। ভীত-সন্ত্রস্ত। অন্য রাজ্যে পালাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারছে না। পুলিশ প্রশাসন সাহায্য করছে না। তাই বাধ্য হয়ে পৃথক রাজ্যের দাবি আমরা তুলেছি।'
আরও পড়ুন : ৬-৮ সপ্তাহের মধ্যে দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ, সতর্কবার্তা AIIMS প্রধানের
উত্তরবঙ্গের মানুষ এত অসুবিধায় থাকলেও রাজ্য সরকার এতে কর্ণপাত করছে না বলেও অভিযোগ করেন জন বার্লা। তাঁর কথায়, 'মুখ্যমন্ত্রী, জেলাশাসক বা কেউ আমাদের কথা শুনছে। তাই আমি ঠিক করেছি কেন্দ্রকে পৃথক রাজ্যের দাবির কথা জানাব।'
উত্তরবঙ্গজুড়ে বিজেপি কর্মীদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন জন বার্লা। তাঁর কথায়, 'আমাদের কর্মীদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। তাই আলাদা রাজ্যের দাবি জানাব রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে। তাঁদের বলব, উত্তরবঙ্গের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে চান। অথচ তাঁদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। বিজেপি সাংসদদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না।'
আরও পড়ুন : ৫ মিনিটের ব্যবধানে কোভ্যাক্সিন ও কোভিশিল্ডের টিকা নিলেন মহিলা, তারপর?
বিজেপি সাংসদের এই দাবি নিয়ে সুর চড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।দলের নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, 'ভোটে হেরে যাওয়ার পর বিজেপি এখন বাংলাকে ভাগ করার খেলায় মেতেছে। ওদের এই আশা পূরণ হবে না। তৃণমূল সবরকমভাবে মোদী-শাহদের চক্রান্ত রুখে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। আর উত্তরবঙ্গে বিজেপির কর্মীদের উপর সন্ত্রাসের যে অভিযোগ বার্লা তুলেছেন, তা মিথ্যে। ভিত্তিহীন। ভোটের সময় ওখানে যে হিংসা হয়েছে তা আসলে বিজেপির আদি-নব্যের লড়াই। এর সাথে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। আর হিংসার সময় নির্বাচন কমিশনের হাতে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার ভার ছিল। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। এর দায় রাজ্য নেবে না। কিন্তু, রাজ্য সরকার ক্ষমতায় আসার পরই সব জায়গায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছে।'