scorecardresearch
 

একাধিক কাউন্সিলরকে ফোন তৃণমূলের, আতঙ্ক বাম শিবিরে

দুই বাম কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরও আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না বাম শিবিরে। আরও কিছু বিদায়ী কাউন্সিলের কাছে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফোন যাচ্ছে বলে অভিযোগ। যদিও তৃণমূলের পাল্টা দাবি ওঁরাই বরং তৃণমূলে যোগ দিতে চেয়ে ফোন করছেন। জমে উঠেছে শিলিগুড়ির রাজনীতি।

Advertisement
শিলিগুড়ি পুরনিগম শিলিগুড়ি পুরনিগম
হাইলাইটস
  • বামেদের দাবি তাঁদের কাউন্সিলরদের ফোন করছে তৃণমূল
  • তৃণমূলের দাবি বামেরাই ফোন করছে তাঁদের
  • তৃণমূলের নজরে রয়েছে কংগ্রেস ও বিজেপি কাউন্সিলরও

বাম কাউন্সিলরদের টোপ?

তৃণমূলের তরফে বামফ্রন্টের বিভিন্ন প্রাক্তন কাউন্সিলরদের দলে টানতে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এমনটাই অভিযোগ করা হয়েছে সিপিএম এর পক্ষ থেকে। গণতান্ত্রিকভাবে জিতে সেই ক্ষমতাকে অগণতান্ত্রিকভাবে ব্যবহার করছে তৃণমূল বলে অভিযোগ করেছেন সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার। যদিও তারা কাউকে ফোন করছেন না বলে পাল্টা দাবি করেছেন তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার। রঞ্জনবাবুর দাবি, মানুষ তৃণমূলের কর্মযজ্ঞে শামিল হতে এবং গণতান্ত্রিক দল হিসেবে তৃণমূলে থাকতে যোগাযোগ করছেন। তাঁদের মধ্যে দল যাঁদের যোগ্য মনে করছে তাঁদের নেওয়া হচ্ছে। 

বামেদের ভাঙনের সূচনা

সম্প্রতি দীর্ঘদিনের সিপিএম কাউন্সিলর কমল আগারওয়াল এবং আরএসপির কাউন্সিলর রামভজন মাহাতো তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তারা দুজনই শিলিগুড়ির বিদায়ী পুর বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। রাম ভজন বাবু ডেপুটি মেয়র পদ সামলাচ্ছিলেন। অন্যদিকে কমলবাবু ছিলেন ট্রেড  লাইসেন্স এবং উদ্যান ও কানন বিভাগের মেয়র পারিষদ। দুজনেই নিজের দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে সামলাচ্ছিলেন।

সিপিএমে আরও ভাঙনের আতঙ্ক

তারা যোগ দিতেই বামফ্রন্টের মধ্যে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তৃণমূলের তরফে একাধিক কাউন্সিলরকে বিভিন্ন প্রলোভনে দলে টানার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। অনেকেই এই পরিস্থিতিতে দোটানার মধ্যে রয়েছেন। কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করলেও আরও কয়েক জন প্রথম সারির কাউন্সিলর তৃণমূলে যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়ে রয়েছেন বলেও খবর রটছে শিলিগুড়ির রাজনৈতিক বাতাসে। 

ক্ষোভ সিপিএম জেলা সম্পাদকের

যা নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ ঝরে পড়লো সিপিএমের জেলা সম্পাদক এর গলায়। জীবেশ বাবু বলেন, এই কদিন আগেও তৃণমূল থেকে বিজেপিতে চলে যাওয়ায় কিছু নেতাকে তৃণমূল অনৈতিক এবং গদ্দার বলে তাঁদের গালিগালাজ করছিল।  অথচ তারাই দল ভাঙানোর সংস্কৃতি এনেছে এ বাংলায়। এর আগে মহকুমা পরিষদ এলাকার বহু পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যকে, দলে টেনে নিলেও মহকুমা পরিষদ ভাঙতে পারেনি। আর যাঁরা গিয়েছেন, তাঁরা সবাই প্রাক্তন কাউন্সিলর। নতুন করে নির্বাচন হলে অনেক হিসেব উল্টোপাল্টা হয়ে যেতে পারে বলে দাবি তাঁর।

Advertisement

তৃণমূল জেলা সভাপতির কাউন্টার অ্য়াটাক

যদিও রঞ্জনবাবু সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূলের তরফ থেকে কাউকে ফোন করা হচ্ছে না। কাউকেই বলা হচ্ছে না তৃণমূলে যোগ দিন। যাঁরা নিজে থেকেই তৃণমূলে আসতে চান, তাঁদেরই দলে নেওয়া হচ্ছে। তবে তাঁদের যোগ্যতা যাচাই করেই দল কাকে নেওয়া হবে আর কাকে নেওয়া হবে না তা ঠিক করছে।

শিলিগুড়ির বাতাসে রটনা

খবর রয়েছে সিপিএমের মেয়র পারিষদদের প্রাথমিক লক্ষ্য করেছে তৃণমূল। অন্যদিকে কয়েকজন কংগ্রেস কাউন্সিলরের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে তৃণমূল। এমনকী দলে এলে উপেক্ষা করা হবে না, এমন আভাস গিয়েছে বিজেপি কাউন্সিলরদের দিকেও। আর কয়েকদিনের মধ্যেই রাজনৈতিক চিত্রটা আরও কিছুটা ওলটপালট হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

গত পুর নির্বাচনে কে কোথায় ছিল?

গত পুর নির্বাচনে শিলিগুড়িতে ৪৭ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪ টি কংগ্রেস, ২ টি বিজেপি, ২৩ টি বামফ্রন্ট, ১ টি নির্দল এবং ১৭ টি তৃণমূল পায়। পরে একজন বাম কাউন্সিলর ফরওয়ার্ড ব্লকের দূর্গা সিং তৃণমূলে যোগ দেন এবং একমাত্র নির্দল কাউন্সিলর অরবিন্দ ঘোষ মারা যান। আর কাউকে সেই সময় তৃণমূল আর দলে টানতে না পারায় বোর্ড অক্ষত থেকে যায়।

 

Advertisement