অবাধে বালি পাথর তোল চলছে
জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী থেকে অবাধে বালি-পাথর তুলছে মাফিয়ারা। চলছে কোটি কোটি টাকার কারবার। অবৈজ্ঞানিকভাবে নদী থেকে বালি-পাথর তোলার ফলে ক্ষয়ে যাচ্ছে নদীর পারও। আস্তে আস্তে জঙ্গল নদীভাঙনের গ্রাসে পড়ে তলিয়ে যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে বনপ্রাণীদের বাসস্থানের এলাকা। সঙ্গে বহুমূল্য গাছ ভাঙনে তলিয়ে যাচ্ছে নদীতে। জঙ্গলের ভাঙন রুখতে এবার সেচ দফতরের পরিবর্তে বন দফতরের উপরই অতিরিক্ত দায়িত্ব চাপাচ্ছে রাজ্য।
বন দফতরের টাস্ক ফোর্স আটকাবে বালি মাফিয়াদের
বালি-পাথর মাফিয়াদের রুখতে টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে রাজ্য। তারা এখন থেকে মাফিয়ারাজের বিরুদ্ধে কাজ করবে। পাশাপাশি অবশ্য় চোরাশিকার ও চোরাচালানও দেখতে হবে টাস্ক ফোর্সকে।
টাস্ক ফোর্সে বড় মাথা
টাস্ক ফোর্স তৈরি করলেও মূলত বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নির্দেশে বন রক্ষা করতে উদ্যোগ নিচ্ছে দপ্তর।টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান করা হয়েছে অতিরিক্ত মুখ্য বনপাল-উত্তরবঙ্গ বিপিন কুমারকে। এ ছাড়া অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রাখা হয়েছে উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল সুধীরচন্দ্র দাস ও মুখ্য বনপাল রাজেন্দ্র জাখর, উত্তরবঙ্গের কর্ম পরিকল্পনা বিভাগের ডিএফও জিজু জেসপারকে।
২৮ জুনের মধ্যে পরিকল্পনার ব্লু প্রিন্ট জমা দিতে হবে
বনাঞ্চল থেকে বালি পাথর খোলা-বন্ধের দ্রুত কড়া পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গোটা রাজ্যের যে সমস্ত জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যেই নদীগুলি গিয়েছে, তার নদীখাতের পরিষ্কার ছবি দ্রুত জোগাড় করে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি বালি-পাথর তোলা বন্ধ করতে কি কি পদক্ষেপ করা হচ্ছে এবং করা হবে তা পরিস্কার করে জানাতে বলা হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ব্লু-প্রিন্টও চাওয়া হয়েছে কমিটির কাছ থেকে। ২৮ জুনের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিতে হবে মুখ্য বনপালের কাছে বলে জানানো হয়েছে টাস্কফোর্সকে।
বালি খাদানে নজর
পাশাপাশি ডুয়ার্সের বুকে একের পর এক বালি খাদান ও ক্রাশার বৈধভাবে চলছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানা গিয়েছে। এ কাজ করবে বন দফতরের টাস্ক ফোর্সও। উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কালিম্পং জেলার জঙ্গলগুলির মধ্য দিয়ে সবচেয়ে বেশি নদী খাত থেকে বালি পাথর তোলার চোরাকারবার শুরু হয়েছে। জঙ্গল এলাকায় সেচ দপ্তরের নজরদারি তেমন থাকে না। যেহেতু সেটি বনদপ্তর এর অধীনে থাকে সেই কারণে বনদপ্তরের থেকেই আলাদা টাস্কফোর্স কাজ করতে বলা হয়েছে।
টাস্ক ফোর্সের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন
টাস্কফোর্স তৈরির উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও তা কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ এর আগেও একাধিকবার এই ধরনের টাস্কফোর্স বনদপ্তর এর জন্যই তৈরি করা হয়েছিল। দপ্তরের আধিকারিকরা শুধুমাত্র কাঠপাচার, চোরাশিকার ও চোরাচালান বন্ধ করতে পারেনি। বাড়তি দায়িত্ব পালনে সফল হবে কীভাবে? তা নিয়েই প্রশ্ন। পাশাপাশি টাস্ক ফোর্সে কোনও ফিল্ড অফিসার নেই, রেঞ্জার এবং বিট অফিসারের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছাড়া কোনও টাস্ক ফোর্স সফল হতে পারবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।