চলচ্চিত্র পরিচালক অনীক দত্তের (Anik Dutta) পরবর্তী ছবি 'অপরাজিত' (Aparajito) -তে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন আবির চট্টোপাধ্যায় (Abir Chatterjee)। এবার সেই সঙ্গে যোগ হল আরও এক অভিনেত্রীর নাম। ছবিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে অভিনেত্রী তথা তৃণমূল- কংগ্রেসের সভানেত্রী সায়নী ঘোষকে (Saayoni Ghosh)। ফিরদৌসুল হাসান ও প্রবাল হালদারের নিবেদনে, ফ্রেন্ডস কমিউনিকেশনের ব্যানারে আসছে এই ছবি। এই বছর সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ। মূলত তাঁকে ট্রিবিউট জানাতেই এই ছবি তৈরির কথা ভেবেছেন নির্মাতারা। আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকেই শুরু হবে শ্যুটিং।
গত বিধানসভা নির্বাচনে আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে তৃণমূল- কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন সায়নী ঘোষ। কিন্তু সেই কেন্দ্র থেকে বিজয়ী হন বিজেপি-র অগ্নিমিত্রা পাল। তবে এরপর দলের তরফ থেকে বড় দায়িত্ব দেওয়া হয় সায়নীকে। চলছে জোড় কদমে সেই কাজ। তারই মাঝে, সামনে এল তাঁর নির্বাচন পরবর্তী সময়ের প্রথম ছবির নাম। 'অপরাজিত'-তে বিজয়া রায়ের চরিত্রে অভিনয় করবেন সায়নী। যে চরিত্রটি তৈরি করা হবে সত্যজিৎ জায়া বিজয়া রায়ের ছায়ায়।
ছবি প্রসঙ্গে সায়নী ঘোষ জানালেন, "এটা তো ঠিক বায়োপিক নয়। কিন্তু বিজয়া রায়ের ছায়ায় তৈরি হবে চরিত্রটি। ভীষণ আধুনিকমনস্ক একটি চরিত্র, তার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছি। ওঁকে নিয়ে যা লেখা পাচ্ছি, পড়ছি। চিত্রনাট্যও বারবার পড়ছি। তার সঙ্গে রয়েছে অনীকদার গাইডেন্স। কিন্তু যেহেতু এটা ঠিক বায়োপিক নয়, তাই নিজের কিছু ইনপুটসও থাকছে।"
এর আগেও অনীক দত্তর সঙ্গে 'মেঘনাদ বধ রহস্য' ছবিতে কাজ করেছেন সায়নী ঘোষ। এমনকি পরিচালকের 'ভবিষ্যতের ভূত' ছবির জন্যে তাঁর হয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন সায়নী। সুতরাং পরিচালকের সঙ্গে তাঁর বোঝাপড়াও বেশ ভাল। এই মুহূর্তে নিজের চরিত্র নিয়ে আলোচনা চলছে পরিচালকের সঙ্গেও। ছবির কাজ আর একটু এগোলে সন্দীপ রায়ের সঙ্গেও দেখা করার ইচ্ছে রয়েছে বলে জানালেন অভিনেত্রী।
তবে আগের থেকে এখন পরিস্থিতি অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। রাজনৈতিক কাজের চাপও বেড়েছে অনেকটাই। কীভাবে সামলাবেন তিনি? এই প্রশ্নের উত্তরে, আত্মবিশ্বাসী সায়নী বললেন, "এমনও সময় গিয়েছে, যখন বছরে চোদ্দো-পনেরোটা ছবি করেছি। এখন রাজনীতি মন দিয়ে করতে চাই। কিন্তু ভাল চরিত্রের প্রতি আকর্ষণ তো থাকেই। সেখানে এ রকম একটা চরিত্র, ভাল পরিচালক…তাই ছবিটি করতে রাজি হয়ে যাই। কিন্তু যেহেতু এখন একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য, তাই দায়িত্বও বাড়ছে। কনটেন্ট বাছতে হচ্ছে ভেবে চিন্তে। অনেক ছবিই বাদ দিতে হচ্ছে। যেখানে টানা অনেক দিন শ্যুটিং বা বেশি আউটডোর রয়েছে, সেগুলো এখন বাদ দিচ্ছি। সাংগঠনিক কাজ বা যে চরিত্রে অভিনয়ের দায়িত্ব নেব, কোনওটার সঙ্গেই আপস করতে চাই না।"
একই নামের ছবি খোদ সত্যজিৎ রায়ের 'অপু ট্রিলজি'-র দ্বিতীয় ভাগে ১৯৫৬ সালে মুক্তি পেয়েছিল। তবে নামে মিল থাকলেও কিংবা 'পথের পাঁচালী' থেকে অনুপ্রাণিত হলেও এটা একেবারেই রিমেক না। অনীক দত্ত আজতক বাংলাকে এর আগে জানান, "এই ছবির প্রি- প্রোডাকশন এখন চলছে জোড় কদমে। বাড়ি থেকে যতটা সম্ভব কাজ এগোচ্ছে। তবে বাইরে সেভাবে বেরনো যাচ্ছে না বলে রেকি ঠিক মতো করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ভার্চুয়াল মাধ্যমেই এতটা কাজ এগোবে আগে ভাবতে পারিনি। এটা একেবারেই কোনও বায়োপিক না। সত্যজিৎ রায়ের গল্প থেকে এটা সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে মূল যে চরিত্র, তাঁর নাম 'অপরাজিত'। একটা রেফারেন্স থাকলেও 'অপরাজিত'-র সঙ্গে এর কোনও মিল নেই। ঠিক কীভাবে 'পথের পদাবলী' তৈরি হল তা নিয়ে গল্প। এই ছবি নিয়ে বহু দিন আগেই আমার বাবুর (সন্দীপ রায়) সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল।"