Malda: তৃণমূল করায় আবাস যোজনার ঘরের জন্য কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ। কাঠগড়ায় কংগ্রেস পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী।
এবার তৃণমূল করায় আবাস যোজনা ঘর পেতে লাগছে টাকা। এমনটাই অভিযোগ কংগ্রেস পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। অভিযোগের তির মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নম্বর ব্লক এলাকার একমাত্র কংগ্রেস পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর বিরুদ্ধে।
ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের কোলা গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর বিরুদ্ধে। এতদিন এলাকার তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি সরকারি প্রকল্পে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগে বিদ্ধ ছিল। এখন এলাকার একমাত্র কংগ্রেসের পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ উঠল।
স্থানীয় সূত্রে খবর ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েত হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নম্বর ব্লকের কংগ্রেসের গ্রাম পঞ্চায়েত বলে পরিচিত। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭ নম্বর সংসদের কোলা গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যা মাসুদা খাতুনের স্বামী তহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীর কাছ থেকে আবাস যোজনার ঘর দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে ৫ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আরও ২০ হাজার টাকা না দিলে তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকিও দেওয়া হয়েছে। যদিও এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। আমাদের চারজন সদস্য কে অপহরণ করে অনাস্থা আনার প্রচেষ্টায় তৃণমূল দখল করার চেষ্টা করছে। কিন্তু সফল হচ্ছে না। এখন এই ভাবে সাজিয়ে কাউকে দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করাচ্ছে অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস।
অন্যদিকে, সারা রাজ্যে কংগ্রেস এভাবে দুর্নীতি করে সাইনবোর্ডে পরিণত হয়ে গেছে। আগামী গ্রাম পঞ্চায়েত ভোটে এই হরিশ্চন্দ্রপুর একমাত্র কংগ্রেস পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতেও আমরা তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে আনব বলে সুর চড়িয়েছে জেলা তৃণমূল।
এলাকার বাসিন্দা অভিযোগকারীনি আজিজা নামে এক মহিলা দাবি কেরন, এক বছর আগে এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যা মাসুদা খাতুনের স্বামী তহিদুর রহমান আবাস যোজনার ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ৫ হাজার টাকা নিয়েছে। আমার লিস্টে নামও এসেছিল। এখন তহিদুর রহমান বলছে আমি তৃণমূল করি তাই আরও ২০,০০০ টাকা লাগবে। না হলে আমার ঘরের তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হবে।
তাঁর আরও দাবি, আমার সঙ্গে তালিকায় থাকা অনেকে সম্পূর্ণ টাকা পেয়ে গিয়েছে। তাদের ঘরও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমি তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক। তাই টাকা না দেওয়ায় আমার ঘরের টাকা আমি পেলাম না। এই নিয়ে আমি প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।
যদিও তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী তহিদুর রহমান। তিনি জানান, এলাকার একমাত্র কংগ্রেস পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত ভিঙ্গলে সরকারের সমস্ত প্রকল্পের কাজ করা হয়ে থাকে। তৃণমূল এখানে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে অপবাদ ছড়ানোর চেষ্টা করছে।
তাঁর আরও দাবি, এর আগেও গ্রাম পঞ্চায়েত ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল আমাদের চারজন সদস্য কে অপহরণ করে অনাস্থা আনার প্রচেষ্টায়। কিন্তু সফল হয়নি। এর আগে আমি অনেকগুলো আবাস যোজনার ঘর দিয়েছি এলাকায় কারো কাছ থেকে কোনও টাকা পয়সা নেইনি। সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ। এলাকার ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের প্রধান বিমান বিহারী বসাক জানান, এই গ্রাম পঞ্চায়েত দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেস পরিচালিত। তৃণমূল এখানে সুযোগ না পেয়ে এখন বিভিন্ন ভাবে মিথ্যা অভিযোগ আনছে। আমরা অনেক তৃণমূলের পরিবারকে আবাস যোজনার ঘর দিয়েছি। কারো কাছ থেকে এক পয়সাও নেওয়া হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে এই গ্রাম পঞ্চায়েত বিভিন্ন উপায় তৃণমূল দখল করার চেষ্টা করছে। কিন্তু সফল হচ্ছে না। এখন এইভাবে সাজিয়ে কাউকে দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করাচ্ছে। এগুলো ভিত্তিহীন।
অন্যদিকে, এ প্রসঙ্গে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান। তিনি জানান, আমাদের কর্মী হওয়ায় তার কাছ থেকে আবাস যোজনা দেওয়ার নাম করে টাকা চাওয়া হচ্ছে। আমরা দলীয় ভাবে এই নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিও সাহেব কে জানিয়েছি। সারা রাজ্যে কংগ্রেস এভাবে দুর্নীতি করে সাইনবোর্ডে পরিণত হয়ে গেছে। আগামী গ্রাম পঞ্চায়েত ভোটে এই হরিশ্চন্দ্রপুর একমাত্র কংগ্রেস পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতেও আমরা তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে আনব।
হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক বিডিও অনির্বান বসু বলেন অভিযোগ পেয়েছি, অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।