Advertisement

কলকাতা

ঝালমুড়ি থেকে চা-কুকিজ, বাবুল-মমতার সম্পর্কও কিন্তু বরাবর চর্চিত

সুমনা সরকার
  • কলকাতা,
  • 02 Aug 2021,
  • Updated 8:50 AM IST
  • 1/9

রাজ্য রাজনীতিতে এখন ঝড় তুলেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনৈতিক সন্ন্যাসের কথা বলেছেন বাবুল। এই ঘোষণার পরেই বাবুলের বিজেপি ত্যাগের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। যদিও বিজেপি ছাড়লেও তিনি অন্য দলে যাচ্ছেন কিনা, তা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে। সেই ইন্ধনও অবশ্য নিজেই দিয়েছেন বাবুল।
 

  • 2/9

 প্রথমে ট্যুইটে বাবুল জানিয়েছিলেন, অন্য কোনও দলে যাচ্ছি না। তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিএম - কোথাও নয়। পরে সেই ট্যুইটের কিছুটা অংশ এডিট করে ফের পোস্ট করায় বাবুলকে ঘিরে কৌতুহল বেড়েছে। এডিট করা ট্যুইটে বিজেপি ছাড়লেও তিনি যে অন্য দলে যাচ্ছেন না, সেই বিষয়টি স্পষ্ট করেননি বাবুল। 
 

  • 3/9

এদিকে বাবুল বিজেপি ছাড়ার পর তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন কিনা তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে। এই নিয়ে জল্পনা বাড়াচ্ছেন ঘাসফুল শিবিরের নেতারাই।  বিশেষ করে তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়ের মন্তব্য বাংলার রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নয়া জল্পনা। সৌগতবাবু মন্তব্য করেছেন, বাবুলের ফেসবুক পোস্টের পরেই আসানসোলের সাংসদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। অন্যদিকে বাবুলের তীব্র বিরোধী হিসাবে পরিচিত আসানসোল উত্তরের তৃণমূল  বিধায়ক মলয় ঘটক আবার বলছেন, বাবুলকে দলে নেওয়া নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তই এই ব্যাপারে চূড়ান্ত। রাজ্যের মন্ত্রীর এই মন্তব্য যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
 

  • 4/9

প্রবল তৃণমূল বিরোধী হিসেবেই বঙ্গ রাজনীতিতে পরিচিত বাবুল সুপ্রিয়। তবুও তার দলবদল নিয়ে এর আগেও বহুবার গুঞ্জন উঠেছিল। বিশেষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ঝালমুড়ি রাজনীতি রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় তুলেছিল। যার জন্য  দলের অন্দরের কম  কটাক্ষ হজম করতে হয়নি তৎকালীন কেন্দ্রের নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে। 
 

  • 5/9


সালটা ছিল ২০১৫, কলকাতায়  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সভা সেরে রাজভবনে ফেরার পথে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী তথা BJP সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কে নিজের গাড়িতে তুলে নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনে গাড়ি থামিয়ে বাবুলকে ঝালমুড়ি খাইয়েছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঝালমুড়ি ভাগ করে খেয়ে বিজেপির অন্দরেই বিতর্কের ঝাঁঝের মুখে পড়েছিলেন বাবুল।

  • 6/9

বিভিন্ন মহল এমন রাজনৈতিক সৌজন্যের প্রশংসা করলেও, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য রাজ্য BJP নেতাদের কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছিল বাবুলকে। কোনও রাখঢাক না করেই রূপা বলেছিলেন, 'বাবুল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যাচ্ছেন, ঝালমুড়ি খাচ্ছেন। আমরা কেন মার খাচ্ছি?' বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা তৎকলাীন রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিং এবং সেই সময়ে বিজেপির  রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহাও বাবুলের ‘ঝালমুড়ি কূটনীতি’র বিরোধিতা করেন। দলের অন্যান্য নেতা এবং কর্মীদের একাংশের মধ্যেও বাবুল সম্পর্কে বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়। সেই পর্ব নিয়ে একাধিকবার জবাবদিহি করতে হয়েছিল গায়ক-সাংসদকে।
 

  • 7/9

তবে বাবুল-মমতা সম্পর্ক নিয়ে বিতর্ক এখানেই থামেনি। ঠিক ২ বছর পর 'চা-কুকিজ' পর্ব সামেন আসে। ২০১৭ সালের জুনে নেদারল্যান্ডস সফরে যাওয়ার পথে দমদম বিমানবন্দরে ফের দেখা হয় মমতা-বাবুলের। বিমানবন্দরে ঢোকার মুখে ভিআইপি লাউঞ্জে  দু’জনে মুখোমুখি হন৷ মমতাকে দেখে বাবুলই প্রথম এগিয়ে যান৷ মুম্বইয়ের বিমান ধরার জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে পেয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী একগাল হেসে বলেন, কী দিদি, আমাকে না-খাইয়েই চলে যাবেন? বাবুলের আবদার শুনে দিদিও হেসে ফেলেন৷ এর পর বাবুলকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিমানবন্দরের একটি রেস্তোরাঁয় ঢুকে পড়েন৷ সেখানেই চা-কুকিজ খাওয়ান বাবুলকে৷

  • 8/9

বাবুলের মন্ত্রীত্ব যেতে সহানুভূতি দেখান মমতা
 গত জুলাইতে মোদী মন্ত্রিসভায় রদবদলের আগেই বাংলা থেকে দুই মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং দেবশ্রী চৌধুরীকে ইস্তফা দিতে হয়। সেই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে মমতাকে বলতে শোনা গিয়েছিল,  "আজকে বাবুল সুপ্রিয় খারাপ হয়ে গিয়েছে।" রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই মত ছিল, কৌশলে সেদিন বাবুলের সঙ্গে বিজেপির দূরত্ব রচনা করতে চেয়েছিলেন মমতা।
 

  • 9/9

রাজনীতিতে সব সম্ভব। রাজনীতির ময়দানে আজ যে প্রতিপক্ষ কাল সেই হয়ে উঠতে পারে মিত্র। নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় রদবদল প্রসঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য সেই কথা মনে করিয়ে দিয়েছিল সেদিন। তারপর গত শনিবার ট্যুইটারে বাবুলের রাজনৈতিক সন্ন্যাস ঘোষণা বঙ্গ রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আপাতত বাবুলের মানভঞ্জন করতে ময়দানে নেমেছেন নাড্ডা থেকে শাহ সকলেই। মন্ত্রিত্ব গেলেও  দলীয় সংগঠনে বাবুলকে গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগানো হবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় বাবুল কী সিদ্ধান্ত নেন সেদিকেই নজর রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ থেকে আমজনতা সকলেরই। তবে নাড্ডার সঙ্গে বৈঠকের পর বাবুল জানিয়েছেন, তিনি আসানসোলের সাংসদ হিসাবেই দায়িত্ব পালন করবেন। যদিও তিনি রাজনীতির ময়দানে আর থাকবেন না।

Advertisement
Advertisement