করোনা আবহেই এই বছর হচ্ছে দুর্গা পুজো। বলা চলে সপ্তমী থেকেই আসলে পুজো শুরু। সপ্তমীর দিন পুজোর একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম নবপত্রিকা স্নান। প্রচলিত ভাষায় নবপত্রিকার নাম কলাবউ। এই নবপত্রিকা স্নানকে অনেকে কলা বউ স্নানও বলে থাকেন।
বারবেলানুরধে সকাল ৮.৩২ মিনিটের মধ্যে এই বছর ছিল নবপত্রিকা স্নানের সময়।
অন্যান্য বারের থেকে সম্পূর্ণ অন্য চিত্র ধরা পড়েছে এই বছর বাগবাজার ঘাটে।
গোনা গুনতি লোকজন, উল্লাস কম এবং তার সঙ্গে সকলের মুখে মাস্ক। এই দৃশ্যেই দেখা যাচ্ছে সপ্তমীর সকালে সবকটি ঘাটে।
'নবপত্রিকা' শব্দটির আক্ষরিক অর্থ ৯ টি গাছের পাতা। তবে বাস্তবে নবপত্রিকা ৯ টি গাছের পাতা নয়, আসলে ৯ টি উদ্ভিদ।
সেই ৯ টি উদ্ভত হল - কদলী বা রম্ভা (কলা), বিল্ব (বেল), কচু, হরিদ্রা (হলুদ), জয়ন্তী, দাড়িম্ব (দাড়িম), অশোক, ধান ও মান।
একটি পাতাসহ কলাগাছের সঙ্গে অপর আটটি সমূল সপত্র উদ্ভিদ একত্র করা হয় প্রথমে। এরপর একজোড়া বেল-সহ শ্বেত অপরাজিতা লতা দিয়ে বেঁধে, সাদা - লাল পাড় শাড়ি জড়িয়ে ঘোমটা দেওয়া বধূর আকার দেওয়া সেটিকে।
সিঁদুর পড়িয়ে গনেশের পাশে অর্থাৎ দেবী দুর্গার ডান দিকে দাঁড় করিয়ে পুজো করা হয় নবপত্রিকা।
নবপত্রিকার ৯টি উদ্ভিদ আসলে দুর্গার ৯টি বিশেষ রূপের প্রতীকরূপে কল্পনা করা হয়। এই ৯ দেবী হলেন রম্ভাধিষ্ঠাত্রী ব্রহ্মাণী, জয়ন্ত্যাধিষ্ঠাত্রী কার্তিকী, কচ্বাধিষ্ঠাত্রী কালিকা, হরিদ্রাধিষ্ঠাত্রী উমা, বিল্বাধিষ্ঠাত্রী শিবা, অশোকাধিষ্ঠাত্রী শোকরহিতা, দাড়িম্বাধিষ্ঠাত্রী রক্তদন্তিকা, মানাধিষ্ঠাত্রী চামুণ্ডা ও ধান্যাধিষ্ঠাত্রী লক্ষ্মী।
এই ৯ দেবী একত্রে 'নবপত্রিকাবাসিনী নবদুর্গা' নামে পূজিতা হন। যার মূল মন্ত্র "নবপত্রিকাবাসিন্যৈ নবদুর্গায়ৈ নমঃ"।
২৩ অক্টোবর সকাল ১১টা ৫৬ মিনিট ০৬ সেকেন্ড পর্যন্ত থাকছে সপ্তমী তিথি।