সেনাবাহিনীর ট্রাক নয়, চারচাকার গাড়িও নয়, এমনকি কপ্টারেও নয়, রিকশা চালিয়ে দেশের দুর্গম অঞ্চলে পৌঁছে যাওয়াই তাঁর শখ। তিনি মানে, সত্যেন দাস। পেশায় রিকশা চালক।
এর আগে দু'বার রিকশা চালিয়ে লাদাখ গিয়েছেন সত্যেন দাস। এবার তাঁর লক্ষ্য সিয়াচেন বর্ডার। আর সেই উদ্দেশ্যেই রবিবার দুপুরে নিজের রিকশা নিয়েই নিউটাউনের বাবলাতলা থেকে যাত্রা করলেন সত্যেন।
রিকশায় প্রায় ৭ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সিয়াচেন সীমান্তে পৌঁছবেন তিনি। সময় লাগবে ৩ মাস। যাওয়ার সময় মানালি হয়ে গেলেও ফেরার সময় শ্রীনগর হয়ে ফেরার কথা তাঁর।
২০০৭ সালে রিকশা নিয়ে প্রথমবার মানালিতে পাড়ি দেন সত্যেন। এরপর ২০১৪ সালে বিশ্বে শান্তির বার্তা দিতে শ্রীনগর হয়ে লাদাখে পাড়ি জমান সত্যেন। সেই সময় বিশ্ব উষ্ণয়ণ নিয়ে মানুষকে সতর্ক করতে পথে চলার সময় ৫০০০ গাছের চারাও লাগান সত্যেনবাবু।
তবে এবারের অভিযান আরও দুর্গম। আর এই অভিযানের পেছনে রয়েছে একটা মহৎ উদ্দেশ্য। স্রেফ ভ্রমণের নেশা নয়। প্যাডেল গাড়ির প্রচার করতেই দীর্ঘ পথ পাড়ি দেবেন সত্যেন। মানুষকে বিশ্ব উষ্ণায়ণ নিয়ে সতর্ক করবেন তিনি। তাঁর মন্ত্র সেভ ওয়াটার, সেভ নেচার আর সেভ আর্থ। পাশাপাশি করোনা নিয়ে সচেতন বৃদ্বির জন্য ১ হাজার মাস্ক বিলি করবেন।
এদিন তাঁকে উৎসাহ জানতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য ও ভিন রাজ্যের অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় বাইকার ক্লাব ও গ্রুপের সদস্যরা। ঠিলে স্থানীয় বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়ও।
সত্যেনাবাবু বলেন, আজ পর্যন্ত লাদাখের পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় কেউ সাইকেলে রিকশায় ভ্রমণ করেননি। তিনিই প্রথম। প্রতিটি রাস্তায় প্যাডেল প্রেমীদের জন্য সাইকেল লেনের দাবিতে পৃথিবীর উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্রে পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন গড়িয়ার এই রিকশাওয়ালা।
লে লাদাখ ভ্রমণই আলাদা পরিচিতি দিয়েছে নাকতলার সত্যেন দাসকে। তবে তাঁর লক্ষ্য বিশ্বের দরবারে শান্তির বার্তা পৌছে দেওয়া।
এই অভিযাত্রী জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন। তাঁর রোমাঞ্চকর কাহিনির উপর নির্মিত তথ্যচিত্র ‘লাদাখ চলে রিকশাওয়ালা’ দেশি-বিদেশি বহু মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে।