Spinach Eating Health Tips: শীতের মরসুম এলেই বাজারে ভরে যায় টাটকা সবুজ পালং শাকে। স্বাদে, পুষ্টিতে এবং গুণে অনন্য এই সবুজ শাক আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে যতটা উপকার, ততটাই সাবধানতারও প্রয়োজন। কারণ, অতিরিক্ত খেলে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে।
পালং শাক ভিটামিন A, C এবং K-তে ভরপুর। সঙ্গে রয়েছে আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম এবং ফলিক অ্যাসিডের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান। নিয়মিত পরিমাণমতো খেলে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হয় এবং সার্বিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।
এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে সহজে ঠান্ডা-জ্বর বা ভাইরাল সংক্রমণ ধরা দেয় না। পাশাপাশি, ভিটামিন C শরীরের কোষগুলিকে সুরক্ষা দেয় এবং ক্ষত নিরাময়েও সাহায্য করে।
চোখের যত্নেও পালং শাকের জুড়ি নেই। এতে থাকা বিটা-ক্যারোটিন এবং লুটিন চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। নিয়মিত খেলে চোখের ক্লান্তি ও শুষ্কতা কমে যায়। অনেক সময় ডাক্তাররাও চোখের সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের খাদ্যতালিকায় পালং শাক রাখার পরামর্শ দেন।
মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে পালং শাক। এতে থাকা আয়রন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক রাখে, ফলে স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
ফাইবারসমৃদ্ধ এই শাক হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। যাঁরা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন, তাঁদের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী। নিয়মিত খেলে হজমশক্তি বাড়ে এবং পেট পরিষ্কার থাকে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও কাজ করে পালং শাক। এতে থাকা পটাশিয়াম শরীরের সোডিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখে, ফলে হাই ব্লাড প্রেশারের ঝুঁকি কমে। পাশাপাশি এটি হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতাও উন্নত করে।
রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতেও সাহায্য করে পালং শাক। আয়রনের ভালো উৎস হওয়ায় এটি রক্তাল্পতার সমস্যা দূর করে এবং শরীরে অক্সিজেন পরিবহন প্রক্রিয়াকে সক্রিয় রাখে।
তবে সতর্কতাও জরুরি। অতিরিক্ত পালং শাক খেলে গ্যাস, ফোলাভাব এবং পেটের ব্যথার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার এতে থাকা অক্সালেট অতিরিক্ত মাত্রায় শরীরে জমলে কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাই পরিমিত মাত্রায় খাওয়াই শ্রেয়।
চিকিৎসকদের মতে, পালং শাক রান্না করে খাওয়াই সবচেয়ে ভালো। কাঁচা অবস্থায় বেশি খেলে অনেকের হজমের সমস্যা হতে পারে। তাই স্যালাডে অল্প রাখলেও মূলত ভাপিয়ে, সেদ্ধ করে বা তরকারিতে দিয়েই খাওয়া উচিত। আর যদি কারও কিডনির সমস্যা বা পেটের গ্যাসের প্রবণতা থাকে, তাহলে নিয়মিত খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।