প্রতি নিয়ত একটু একটু করে অবাসযোগ্য হয়ে উঠছে পৃথিবী। সৌজন্য অবশ্যই মানুষ। যে হারে গাছ কেটে সাফ করে ‘সভ্যতার’ বিকাশ হচ্ছে, তাতে আর কতদিন এই সভ্যতা টিকে থাকবে সেটা নিয়েই বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে।
বায়ু দূষণের এমন ভয়ংকর চেহারা যে কিছু দেশে কৌটোয় ভরে নিঃশ্বাস নেওয়ার বাতাসও বিক্রি হচ্ছে। সেখানে দূষণের মাত্রা একটাই। আমাদের দেশও খুব একটা পিছিয়ে নেই। বেশ কয়েকটি দিল্লি, কলকাতা, গাজিয়াবাদ, কানপুর, নয়ডা, গুরুগ্রাম, মেরঠ, পটনা, লখনৌ-র মতো বড় এবং ছোট শহর অত্যাধিক দূষণের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে।
এ অবস্থায় একটু টাটকা বাতাস পাবেন কোথায়? উত্তর আপনার বাড়িতেই। কী ভাবে জানাচ্ছি আমরা।
সম্প্রতি নাসা একটি গবেষণায় জানিয়েছে, এমন কিছু গাছ রয়েছে, যা ঘরে রাখলে শুধুমাত্র অক্সিজেনই পাবেন না, সঙ্গে ঘরের মধ্যে থাকা দূষিত বাতাসও পরিষ্কার করার কাজ করবে এগুলি।
পিস লিলি
বাতাসে উপস্থিত রাসায়নিক এবং টক্সিন নিমেষের মধ্যে শুষে নেয়। বিশেষত ট্রাইক্লোরোথাইলিন এবং ফর্মালডিহাইড জাতীয় টক্সিন শুষে বাতাস পরিষ্কার করে দেয়।
স্পাইডার প্ল্যান্ট
খুব কম আলোতেও এরা সালোকসংশ্লেষ করতে পারে। ফলে অক্সিজেন জোগান দিতে থাকে। তা ছাড়া স্টাইরিন, গ্যাসোলিন জাতীয় টক্সিন বাতাস থেকে শুষে নিতে সক্ষম। একটা গাছ প্রায় ২০০ বর্গ মিটার জায়গার বাতাস পরিশুদ্ধ করে তুলতে পারে।
আইভি
নাসার বৈজ্ঞানিকদের মতে, প্রত্যেকটি ঘরে এ গাছ রাখা উচিত। কারণ ঘরের বাতাসের ৬০ শতাংশ টক্সিন এবং ৫৮ শতাংশ পর্যন্ত দুর্গন্ধ শুষে নিতে পারে ঘরে আনার মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যে।
ফিকাস
খুব ভালো বাতাস পরিষ্কার করতে পারে। বিশেষত, বাতাসের টক্সিন শুষে নেয় এবং টাটকা বাতাসের জোগান দিতে থাকে। খুব একটা আলো বা জলের প্রয়োজন হয় না। তবে একটি ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। ঘরে যদি ছোট বাচ্চা বা পোষ্য থাকে, তাদের থেকে গাছটিকে দূরে রাখবেন। কারণ এ গাছের পাতা শরীরে বিষক্রিয়া করতে পারে।
স্নেক প্ল্যান্ট
এ গাছ সহজে মরে না। বিশেষ আলো বা জলেরও প্রয়োজন হয়। টক্সিন পরিষ্কার বা অক্সিজেন সরবরাহ তো করেই। তার সঙ্গে সব থেকে ভালো ব্যাপার, রাতেও এরা অক্সিজেন ঘরের মধ্যে ছাড়তে থাকে। বেডরুমে রাখার জন্য সব থেকে আদর্শ গাছ এটা।
অ্যালোভেরা
বাংলায় যাকে বলে ঘৃতকুমারি। ঘরের অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে এর জুড়ি নেই। ঘরের মধ্যে থাকা কার্বন মনো-অক্সাইড, কার্বন ডাই-অক্সাইড, ফর্মালডিহাইডের (টক্সিন) মতো ক্ষতিকারক উপাদান শোষণ করে নেয়। মাত্র একটি গাছই ৯টি বায়োলজিকাল এয়ার পিউরিফায়ার ক্যানের মতো বাতাস পরিষ্কার করার কাজ করতে পারে।