ভারতের দক্ষিণের বেশ কিছু এলাকা ছাড়া উত্তর ও উত্তর ভারতে এই সময় আবহাওয়া অত্যন্ত শীতল থাকে। ঠান্ডা হাওয়া ও তাপমাত্রা কমতে থাকায় জীবন যাপন করাই কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। এখানে বসবাসরত লোকদের চরম শীত এবং চ্যালেঞ্জিং শীতের আবহাওয়ার মুখোমুখি হতে হয়।
প্রথমেই রয়েছে কার্গিলের নাম। ১৯৯৯ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কার্গিলের যুদ্ধ হয়। এই স্থানটি শীতলতম অঞ্চল হিসাবেও স্বীকৃত। শ্রীনগর-লেহ মহাসড়কে ৩ হাজার ৩২৫ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত কার্গিল ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে অবস্থিত। শীতের সময় তাপমাত্রা -২৩ ° সেন্টিগ্রেডে পৌঁছে যায়।
এরপর রয়েছে লাদাখ। জানুয়ারি মাসে গড় তাপমাত্রা এখানে পৌঁছয় -১২ ডিগ্রিতে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয় -২ ডিগ্রি। কোনও কোনও সময় ভারী তুষারপাতের জেরে তাপমাত্রা পৌঁছয় -৩৫ ডিগ্রিতে।
লাচেন এবং থানগু উপত্যকা - সিকিমের উত্তরের অংশে অবস্থিত লাচুন এবং থানগু উপত্যকাটিও একটি দুর্দান্ত পর্যটন স্থান। প্রায় ২,৫০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। জানুয়ারীতে এই জায়গার গড় তাপমাত্রা -১০ থেকে -১৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে থাকে। সারা বছর তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রির কাছাকাছি থাকে।
অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াংও ভারতের শীতলতম স্থানগুলির মধ্যে একটি। এই জায়গাটি পর্যটকদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। শীতের মরসুমে ভারী তুষারপাতও হয়। এটি ভারতের সবচেয়ে বিপজ্জনক এবং ঠান্ডা জায়গা। শীতের সময় তাপমাত্রা -১৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে পৌঁছে যায়।
সিয়াচেন হিমবাহ - ভারতের শীতলতম স্থানের মধ্যে প্রথম। ৫৭৫৩ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই একালায় জানুয়ারিতে তাপমাত্রা পৌঁছয় -৫০ ডিগ্রির কাছাকাছি। ইন্টারনেটে এমন অনেকগুলি ভিডিও রয়েছে যেখানে সৈন্যদের হাতুড়ি দিয়ে বরফ হিমায়িত ডিম, টমেটো এবং জুস ভাঙতে দেখা যায়।
সেলা পাস - পৃথিবীর এই জায়গাটি 'আইসবক্স অফ ইন্ডিয়া' হিসাবে বিখ্যাত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪ হাজার ৪০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। সেলা পাস সারাবছর বরফে ঢাকা থাকে। তাপমাত্রা প্রায় -১৫ ডিগ্রির কাছাকাছি থাকে।
হিমাচল প্রদেশের কাইলং লেহ মেইন রোডে প্রায় ৪০ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। এই জায়গার তাপমাত্রা খুব কম বলা যায় না, তবে -২ ডিগ্রি পর্যন্ত থাকে। এই জায়গাটি বাইক চালক এবং যারা অনেক বিশেষ ঠান্ডা গন্তব্য খুঁজছেন তাদের জন্য দুর্দান্ত।
সোনামার্গ অন্যতম সেরা গন্তব্য স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়। শীতকালে সোনামার্গের তাপমাত্রা প্রায় -৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড অবধি নেমে যায়।
মানালি ভারতের একটি সুন্দর এবং জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে এই এলাকার তাপমাত্রা -১০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে নেমে যায়। যারা প্রকৃতি পছন্দ করেন হিমাচল প্রদেশের কুলু জেলায় অবস্থিত মানালি তাঁদের একটি পছন্দের জায়গা। যাঁরা পর্বতারোহণ, রিভার রাফটিং এবং ট্রেকিংয়ের অনুরাগী তারা অবশ্যই এখানে আসতে পারেন।
মুন্সিয়ারি - উত্তরাখণ্ডের পিঠোরাগড় জেলায় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২,৫০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। এখানে আবহাওয়া সারা বছর ধরে শীতল এবং শুষ্ক থাকে। তাপমাত্রা থাকে -১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। বিরল প্রজাতির পাখি, তুষারাবৃত পাহাড় এবং হ্রদ মুন্সিয়েরির বৈশিষ্ট্য।